বাড়ি দৃশ্যত আর্ট গ্যালারি থেকে বের হয়ে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিলাম একটা ট্যাক্সির আশায়। মেজাজটাই খারাপ হয়ে আছে। আজকাল কি সব ছবি প্রদর্শনী করে-কোনাে মাথামুণ্ড নাই। এগুলােকে আবার মডার্ন আর্ট বলে। হরতালের পর ভেবেছিলাম এখানে ঘুরতে এলে মনটা একটু ফুরফুরে হবে, কিন্তু হলাে উল্টোটা। মেজাজ খিচড়ে গেছে। একটাও খালি ট্যাক্সি চোখে পড়ছে না। একটাকে পেয়েছিলাম। কিন্তু ট্যাক্সি ড্রাইভার কিছুতেই মিটারে যাবে না। চল্লিশ টাকা চাচ্ছে এখান থেকে মালিবাগ পর্যন্ত যেতে! আমি অবশ্য খেপে গিয়ে নালিশ করার ভয় দেখিয়েছিলাম, কিন্তু ট্যাক্সিওয়ালা উল্টো চোখ গরম করে জবাব দিয়েছে। যান, গিয়া কমপ্লেন করেন। দেখি কে আমার কি করতে পারে।” এই হলাে এখনকার ঢাকার পরিবহনের অবস্থা। এ রাস্তায় রিকশাও চলতে দেয় । এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে। মালিবাগে একটা দাওয়াত ছিল। বেজার মুখ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চলমান ট্রাফিক দেখছি, এমন সময় পেছন থেকে কে যেন পিঠে ধাক্কা দিল। শুনতে পেলাম অনেক দিন আগে শােনা পরিচিত একটি কণ্ঠ, “সাদ না? কেমন আছিস?" পেছনে ফিরে অবাক হয়ে গেলাম। আরে! এ তাে শােভা। আমার কলেজ জীবনের বন্ধু। প্রায় পাঁচ বছর পর দেখা। কিন্তু এই পাঁচ বছর সে যেন বিশ বছর বুড়িয়ে গিয়েছে; আমি খুশিতে তার হাত চেপে ধরলাম। -“আরে তুই এতদিন পর? কোথায় ছিলি? তাের চেহারার এ অবস্থা কেন?" -“আস্তে দেন্ত, আস্তে", শােভন ক্লান্তভাবে হাসল। সবই সময় পেলে খুলে বলব। আগে তাের কথা বল। কেমন আছিস? এখানে কি করছিলি?" —“আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলাম।" —“আগের অভ্যাস ঘড়িসনি তাহলে?" তার এই একটি প্রশ্ন আমাকে পুরনাে দিনগুলােতে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। এক সময় দু'জনে কতই না ঘুরেছি নানা জায়গায়। দু'জনেই শখের আর্টিস্ট ছিলাম। দু'একটা প্রদর্শনীও দুজনে মিলে করেছিলাম সে সময়। পূর্ণ (সংক্ষিপ্ত……)