আমি কি আপনার ঘােমটাটা একটু তুলতে পারি? স্বামীর কাছে এই প্রশ্ন শোনার পরে মেয়েটির মাথা আরাে নিচু হয়ে গেল লজায়। মেয়েটির ফর্সা মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মন্তু তার সদ্য বিবাহিত বউয়ের ঘােমটা তুলতে যাবে এমন সময় তার নাম ধরে জোরে জোরে ডাক শুনতে পেল। মধুর মনে হলাে, কী ব্যাপার—তার বউয়ের কণ্ঠ পুরুষের মতাে শােনাচ্ছে কেন? তার পরে যা ঘটল তা মঞ্জুর জন্য আরাে ভয়াবহ। মধু দেখতে পেল, হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মন্তু চিন্তা করে কূল পাচ্ছে না, ঘরের ভিতরে ঘরের ছাদ ভেদ করে বৃষ্টির পানি কীভাবে প্রবেশ করল? মধু তার গায়ে জোরে জোরে ধাক্কার মাঝে ধড়ফড় করে বিছানায় উঠে বসল। চোখ খুলে দেখতে পেল, তার সামনে পানির বালতি হাতে নিয়ে তার একমাত্র চাচাজান জালাল সাহেব অগ্নিমূর্তি ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে! মধুর বুঝতে বাকি রইল না বৃষ্টি কীভাবে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেছে। মধুর এই দুনিয়ায় কেউ নাই। খুব ছােটবেলায় তার বাবা-মা দুজনেই মারা যায়। মধুর বয়স যখন চার বছর তখন থেকেই মধু তার চাচা জালাল সাহেবের কাছে মানুষ হয়েছে। তার চাচা জালাল সাহেব অবসরপ্রাপ্ত আমি মেজর। মখুর চাচি জালাল সাহেবের স্ত্রী মারা গেছে যখন পাভেলের বয়স তিন বছর আর পুষ্প পাভেলের একমাত্র ছােট বােনের বয়স এক বছর। সেই থেকে জালাল সাহেব তাদের তিনজনকে মানুষ করতে যেয়ে আর বিয়ে করতে পারেনি। মধু পাভেলের চেয়ে এক বছরের বড়। জালাল সাহেব মধুকে নিজের সন্তান পাভেলের চেয়ে কোনাে অংশেই কম স্নেহ করেন না। মন্তু, পাভেল এবং পূপা—তিনজনেই জালাল সাহেবকে যমের মতাে ভয় পায়। মধু ঘুম থেকে ধড়ফড় করে উঠে বিছানায় বসে দেখতে পেল, জালাল সাহেব হাতে একটি পানির বালতি আর একটি খাম জাতীয় জিনিস হাতে নিয়ে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে তার বিছানার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মধু বুঝতে পারছে না কাহিনিটা কী? চাচাজান এত সকাল সকাল তার ঘরে কেন? আর এত রাগান্বিতই বা কেন? মধু ভয়ে ভয়ে তার চাচার দিকে তাকিয়ে বলল, কী হয়েছে চাচাজান? (সংক্ষিপ্ত……)