যাবজ্জীবন মানুষ আসলে কীসের তরে দণ্ডিত থাকে- অনুরূপ দণ্ডিত থাকে তারই মতাে আরেকজন? জীবনের ছবি তাে আসলে কবিতার ছন্দের মতােই বাধা পড়ে আছে। পৃথিবীতে মানবের এই নশ্বর জীবন- স্মৃতির দেশের দরজা খুলে তাকিয়ে থাকে- কিন্তু স্মৃতির মানুষগুলাে আর কখনাে ফিরে আসে না। সবুজ সজীব ভাবনা-লতায় কবিতার দেশ খুঁজে পায় কবিনিদারুন দুর্দিনে আপন লােকের উপস্থিতি যেন পরশপাথর হয়ে ওঠে জীবনে; সন্দেহের মেঘ কেটে যায়। প্রকৃতির সময় হলেই যেমন গাছে গাছে ফুল ফোটে তেমনই ফিরে আসে প্রেম কিংবা মৃত্যু। সঙ্গোপনে কত কিছুই তাে মন ও মননে হানা দেয়, উকি মারেউঠে আসে পাপপূণ্যের বােধ-অচেনা আঁধারে প্রিয় মানুষের চোখেই খুঁজে পায় নিরাপদ প্রশ্রয়- তারপরও নিয়তির টানে বদলে যায় মানুষ- কেননা, জবিনের স্রোতে কিছুই নিত্য নয়। জীবনের ভীড়ে যে চিনে নিতে পারে আপন মানুষকে নেই তাে প্রকৃত মানুষ। অনাদির ভালবাসা, টেলিপ্যাথি সেই আপন মানুষটির জন্যেই বিরহ কাতরতার পর সেই আপন মানুষটির একান্ত সান্নিধ্যই জীবনের পরম পাওয়া। তারপরও বাকী থেকে যায় জীবনের অনেক না-বলা গল্প। পাহাড়-চুড়ােয় উঠলেই যেমন আকাশের নীল ছোঁয়া যায় নাঅনাদিকালের নীলাকাশ, নীল ইতিহাস নীল তরঙ্গ কারাে কারাে জীবনে অধরাই থেকে যায়। ঘটনা-অনুঘটনায় জীবনের অব্যক্ত গল্প কবিতার ছন্দের মতাে দৃশ্যপটে ধরা দেয়- যেন এক জীবনের সেলুলয়েড। নীলতরঙ্গ' কাব্যগ্রন্থটি একটি জীবনেরই চলচ্চিত্র- যেখানে অনেক কুশীলব প্রত্যক্ষ-পরােক্ষভাবে সম্পৃক্ত আছে নিজস্ব নিয়মের আবর্তনে।।