লালন ও রবীন্দ্র স্মৃতিসান্নিধ্যে... বাড়ির পাশে আরশিনগর, সেথা লালন বসত করে... পথে অনাকাক্ষিত কিছু বিড়ম্বনার কারণে কুষ্টিয়ায় পৌছাতে দেরি হয়ে যায়। যার কারণে পরিকল্পনায় কিঞ্চিৎ পরিবর্তন আনতে হয়েছে। ০৪ জুলাই ২০১২ তারিখে লালনের আখড়ায় আমরা যখন যাই, অন্ধকার নেমে এসেছে চারদিকে। প্রাচীন অন্ধকানােই চলে ফটোসেশন, ঘুরে দেখা এবং কৌতুহল নিবৃত্তি। ছবি তােলায় আমাদের সাহায্য করেন আলতাফ ভাই। ভেতরে তখন গানের জলসা। ছেউড়িয়ার লালন একাডেমিতে বিভিন্ন শিল্পী পরিবেশন করছেন গান—তিন পাগলের হলাে মেলা নদে এসে, সামান্যে কি তার দেখা পাওয়া যায়...। লালনভক্ত, স্থানীয় লােকজনের পাশাপাশি এসেছেন সংস্কৃতিমনা উর্ধতন কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাও। তাঁরা নীরবে গান শুনছেন। বিরতিতে আলাপ করছেন লালনচর্চা, লালনগীতির ভাবধারা ও শিল্পীদের গায়কী নিয়ে। শিল্প ভােগ ঢায়; শিল্পের জন্য পুরাে জীবন উৎসর্গ করতে হয়। লালন আখড়ার শিল্পীরা ক্রমাগত জীবনপাত করেই শিল্পী হয়ে উঠছেন। এঁদের যে জীবনধারা, শিবে প্রতি মমত্ব ও দয়বােধ, ভাব-অনুরাগ দেখে সহজেই অনুমেয় ত্যাগ-তিতিক্ষাটুকু। কিন্তু বরাবর এরা থেকে যান আড়ালে-আবডালে; ‘তারকা খ্যাতি' পান না। অবশ্য তার খ্যাতি চান কি না, তথাকথিত তারকা বনার ইচ্ছা আছে কি না সেই প্রশ্নটাও থেকে যায়। আধাে আলাে-অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে দেখি লালন ফকির এবং তার শিষ্য, সহযােগীদের সমাধি। কারাে কারাে সমাধিতে খােদিত আছে পরিচিতিমূলক কিছু বক্তব্য। উৎকীর্ণ আছে, লালনকে যা সঙ্গ দিয়েছেন, লালনের ঘনিষ্ঠজনে পরিণত করেছেন নিজেকে—এমন সাধকদের সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্তও। দেয়াললিখনসহ বিভিন্ন সতর্কবাণীতে বানান ভুল ও ব্যাকরণের ক্রটির ছড়াছড়ি পীড়া দিল। যেমন—আপনার দানকৃত অর্থ 'কাহারাে হাতে ‘নাসিয়ে" নিজ হস্তে "সিন্ধুকে ফেলুন। (সংক্ষিপ্ত……)