“কুয়াশার আবরণে” বই এর ভূমিকা:
পাবনা জেলা স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে পড়ার সময় একটি সাহিত্য প্রতিযোগিতার জন্য রচনা লেখার কারণে ব্যস্ত থাকায় ইংরেজি বিষয়ে ঠিকমত পড়তে পারিনি। একদিন ক্লাসে ইংরেজি রচনা বলতে না পারায় স্যার আমাকে খুবই পিটুনি দিয়েছিলেন। মনের দুঃখে আমি চুপচাপ চোখের পানি নিঃসরণের সময় কিছুক্ষণ পর হঠাৎ আকবর স্যার পুনরায় আমার কাছে এগিয়ে এলে আমি ভয়ে আঁতকে উঠি । স্যার আমাকে কাছে টেনে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, পড়া পারিনি তাই মেরেছি। আয় এবার তাকে একটু আদর করি ।
স্যারের এ ধরনের আচরণে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতে থাকি, আমাকে পুনরায় শাস্তি দেওয়ার জন্য এটা স্যারের নতুন কোনো কৌশল কি না? স্যার আমার মনোভাব বুঝতে পেরে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, রচনা প্রতিযোগিতায় পাবনা জেলার মধ্যে তোর লেখা ১ম স্থান অধিকার করেছে। লেখায় তোর হাত ভালো। লেখাটা চালিয়ে যায়। আমার দোয়া রইল। আকবর স্যারের কথা শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে আমি জোরে কেঁদে উঠি । আমি শাস্তি পাওয়ার কারণে এতক্ষণ যেসকল সহপাঠী মুখ টিপে হাসছিল, আমার সুখবরে এবার তাদের মুখ আমাবস্যার মতো কালো হয়ে যায়। মনে হয় তারাই যেন স্যারের পিটুনি খেয়েছে। স্যারের সেই মিষ্টি-মধুর পিটুনির ছোঁয়া এখনো হৃদয়ে সুখ বয়ে আনে। স্যারের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি লেখার জগতে হারিয়ে যাই ।
একটি টিনের বাক্সে আমি আমার লিখিত এবং পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলো জমিয়ে রাখতাম। পড়ার চাপে মাঝখানে অনেক দিন লেখা বন্ধ। থাকায় ঐ বাক্সটি খুলে আর দেখা হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে বাসায় থাকা কাজের ছেলেটি একদিন বাক্স খুলে ভিতরে অনেক আরশোলা দেখে লেখাগুলো বের করে বাক্স-সহ রোদে শুকাতে দেয় । দরজা খোলা থাকায় সবার অগোচরে একজন টোকাই লেখাগুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে ভেবে সব কুড়িয়ে বস্তায় ভরে নিয়ে চলে যায়। পরে বাসায় এসে তা জানতে পেরে আমি অনেকক্ষণ কেঁদেছিলাম। কারণ ঐ সমস্ত লেখার কোনো কপি আমার কাছে ছিল না।
এ কারণে ভাবনায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে আমি মাঝখানে লেখার আগ্রহটুকু হারিয়ে ফেলেছিলাম। মনের আঙিনায় তখন ছিল শুধু শূন্যতা। সব সময় মনে হতো কী যেন হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু আকবর স্যার-সহ অনেকেই আমাকে লেখার জন্য অনুপ্রেরণা দিতেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে আমি সব সময় অনুভব করতাম আমার জীবনসত্তাকে যেখানে শুধুই কিছু লেখার প্রবৃত্তি । উদাস আকাশের পানে তাকিয়ে শূন্যতা আর মৌনতা কাটিয়ে পুনরায়
নতুন উদ্যমে লেখার মাঝে নিজেকে খোঁজার চেষ্টা করেছি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকায়নি। শুধু সামনের দিকে এগিয়েছি।
চাকুরিতে আসার পর ব্যস্ততা এবং বাধ্যবাধকতা থাকায় কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প লিখলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। এবার আর টিনের বাক্সে না রেখে ফাইল ক্যাবিনেটের প্রতিটি ড্রয়ারে জমা করে রেখেছি। লেখাগুলো বিভিন্ন জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকায় নিয়মিতভাবে প্রকাশ হচ্ছে।
সময়টাকে সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়ে তাইতো আমি কিছু লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর এটাই আমার মনের পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি আর তৃপ্তি যেখানে মেঘের ফাকে রোদগুলো হেসে ওঠে শুধু । আমি যেহেতু অপরাধ ও অপরাধীদের নিয়ে কাজ করেছি, তাই গল্প, প্রবন্ধ,কবিতা ইত্যাদি লেখার পাশাপাশি অপরাধ নিয়ে লেখাই আমার মূল উদ্দেশ্য, লিখছিও তাই।
সূচিপত্র
*
আঁধার পেরিয়ে- ১১
*
এলোমেলো হাওয়া -১৬
*
নির্মম অবহেলা -২৪
*
শেষ নিঃশ্বাসটুকু -৩০
*
ক্রস কানেকশন -৩৫
*
গপ্প- ৩৮
*
পলাশবাড়ির সেই মেয়েটি- ৪১
*
হৃদয়ের না-বলা কথা-৪৪
*
কাজের মেয়ে ময়না-৫০
*
কুয়াশার আবরণে- ৫৫
*
তোমরা সুখে থেকো-৫৯
*
হৃদয়ে কত আকুলতা- ৬৪
*
নীরব কান্না- ৬৭
*
আর্তনাদ -৭১
*
শুধুই আফসোস- ৭৫
*
অপেক্ষার কি শেষ নেই?- ৭৯
*
শেষ দেখা- ৮৩
*
ভুলতে পারি না- ৮৯
*
দেখা হলো দুজনে-৯৩
*
সেই ছেলেটি-৯৬
*
স্বস্তির নিঃশ্বাস-৯৮
*
অজস্র বেদনার ঝড় -১০১
*
কেন এই নিষ্ঠুরতা-১০৮
*
স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্ন হয়ে যায় -১১১
*
অবসর -১১৬
*
তীর ভাঙা ঢেউ-১২০
*
সুমনের কান্না।-১২৪
*
অবুঝ সন্তান -১২৭
*
শিমুর চলে যাওয়া-১৩১
*
ব্যথিত হৃদয়-১৩৬
*
পৃথিবীতে তার কেউ নেই-১৪১
*
হেডস্যার -১৪৭
*
গেদু মামার নির্বাচন-১৫০
*
কবিতার শেষ কান্না।-১৫৪
*
অপয়া-১৫৯
ড. মির্জা গোলাম সারোয়ার পিপিএম এর কুয়াশার আবরণে এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 240.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Kuyashar Aborone by Dr. Mirza Golam Sarwar PPMis now available in boiferry for only 240.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.