সেলিনা শাহীন এর বোধের বোধোদয় এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 240.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Bodher chowkath by Selina Shaheenis now available in boiferry for only 240.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
বোধের চৌকাঠ (হার্ডকভার)
৳ ৩০০.০০
৳ ২২৫.০০
একসাথে কেনেন
সেলিনা শাহীন এর বোধের বোধোদয় এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 240.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Bodher chowkath by Selina Shaheenis now available in boiferry for only 240.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন | হার্ডকভার | ৯৬ পাতা |
---|---|
প্রথম প্রকাশ | 2023-01-01 |
প্রকাশনী | শব্দশৈলী |
ISBN: | |
ভাষা | বাংলা |
ক্রেতার পর্যালোচনা
1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা
-
পর্যালোচনা লিখেছেন 'Samin Turjo'
আপনি কি সংবেদনশীল মনের কবিতা প্রেমী একজন মানুষ ? কবিতা পড়তে ভালোবাসেন বলে মনে মনে একটি ভালো কবিতার বই খুঁজে বেড়ান ? তাহলে এই বইটির রিভিউ আপনার জন্য। অগণিত বইয়ের সমুদ্র সেঁচতে সেঁচতে হঠাৎ যদি মুক্তোর মতো একটি ভালো বইয়ের খোঁজ মিলে যায়, সমমনা অন্য পাঠকদের সেই মুক্তোর খোঁজ দিয়ে পড়ার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কোন পাঠকের ভালো না লাগে ? সেলিনা শাহীনের এই বইটি যেন তেমনি এক খুঁজে পাওয়া মুক্তো। ৮০টি অনিন্দ্য সুন্দর কবিতা মলাটে বন্ধি করে এই মুক্তোর মালা গেঁথেছেন তিনি। বইটির অলংকরণ, শব্দ চয়ন, কাব্য গাঁথা, আবেগের সংযুক্তি এত নান্দনিক যে বইটি হাতে নেবার পর থেকেই পাঠক হিসেবে আমার শুরু হয়েছিল এক মনোমুগ্ধকর পাঠ যাত্রা। প্রথমেই নজর কেড়েছে বইয়ের কাব্যিক নাম এবং অন্তর্নিহিত ভাবার্থের সাথে মিল রেখে চমৎকার দৃষ্টি নন্দন প্রচ্ছদ। প্রচ্ছদের চৌকাঠ পেরিয়ে ভেতরে তাকাতেই ভালো লাগলো বইয়ের ভেতরের পাতায় লেখা প্রথম লাইনটি পড়ে: " মাঝে মাঝে মনের জানালা দিয়েও রোদ্দুর ছোঁয়া যায় " পাতা উল্টে উৎসর্গ পত্র লেখায় লক্ষ্য করলাম গভীর মননশীলতার প্রতিফলন: "জীবনটা হয়তো এমনই, অব্যাক্ত কিছু নিঃশব্দ শব্দ উচ্চারণে আমৃত্যু যুদ্ধ ঘোষণা" আরেকটু ভেতরে ঢুকে যখন সূচিপত্রে চোখ বুলাচ্ছিলাম, মুগ্ধ হলাম প্রতিটি কবিতার অতি নান্দনিক এবং কাব্যিক নামকরণ দেখে। মনে হচ্ছিলো লেখিকা তার মনের সমস্ত মাধুরী মেশানো শব্দ চয়নে, অতি যতনে প্রতিটি কবিতার নাম ঠিক করেছেন। কবিতার ডালি উন্মোচন করার আগে পাঠকদের উদ্দেশ্য একটি ছোট্ট ভূমিকা লিখেছেন কবি, খুব সুন্দর করে সাজানো আত্মকথায় জানিয়েছেন, তার বুকের ভেতর জমে থাকা সবটুকু অনুভূতি শব্দের জালে সাজিয়ে এই যন্ত্রজীবনে একরাশ শ্রাবণধারা রূপে পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই তার এই কাব্যিক প্রয়াস। প্রারম্ভিকা আর সার্বিক অলঙ্করণ দেখতে দেখতে ভাবছিলাম হয়তো এমনই একটি কবিতার বই মনে মনে খুজছিলাম। তারপর পাতা ওলটাতে থাকি আর মন্ত্রমুগ্ধের মতো গোগ্রাসে গিলতে থাকি একের পর এক কবিতার পংক্তিমালা। এখানে বলে রাখি, ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মহাদেব সাহা আর জীবনানন্দ দাশের কবিতার ভক্ত। মহাদেব সাহার কবিতায় অবিনশ্বর প্রেমগাঁথা আর জীবনানন্দর কবিতায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ মাধুর্য আমাকে বিমোহিত করে। এই বইটি পড়তে পড়তে আশ্চর্য হয়ে আবিষ্কার করলাম বেশিরভাগ কবিতায় প্রেম এবং প্রকৃতি দুটোরই একসাথে সংমিশ্ৰণ ঘটেছে এক অনন্য মাত্রায়। আপনি যদি আমার মতো উক্ত কবিদের কবিতার ভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি এই বইটি আপনার ভালো লাগবে। মনের সম্পর্কের কম বেশি সবগুলো দিক কবিতাগুলো ছুঁয়ে গেছে নানা ঢঙ্গে, নানা আঙ্গিকে। ভালোবাসা, প্রেম, মিলন, বিরহ,স্পর্শ, শোক, একাকিত্ব, সুখ, বেদনা, টানাপোড়ন, আকুতি, পরিণতি কোন উপাদানটি নেই ? মানব সম্পর্কের আদ্যপ্রান্তের প্রতিটি ক্যানভাসেই দক্ষ হাতে তুলির আঁচড় পড়েছে অতি সাবলীলতায়। যেটা সবচেয়ে ভালো আর ব্যাতিক্রমি লেগেছে সেটা হচ্ছে, প্রতিটি কবিতার গভীরে লুকিয়ে থাকা একটি নিটোল গল্প, একটি প্রেক্ষাপট আর সংশ্লিষ্ট অনুভূতির ঢালাও অবলেপন। যে কোনো কবিতা পড়তে শুরু করলে মিস্টি শব্দের যাদু আর মোমের মতো তরল আবেগের ঢেউ পাঠক কে ক্রমশ ভাসিয়ে নিতে থাকে সেই গল্পের গভীরে। সাথে পটভূমি কিংবা উপমা হিসেবে সংযুক্ত থাকে প্রকৃতি থেকে খুঁজে নেয়া অপরূপ সুন্দর সব উপাদান, যেমন: চাঁদ, জোছনা, অমাবস্যা, নক্ষত্র, ফুল, পাখি, বৃস্টি, বর্ষা, পাহাড়, অরণ্য, নদী, সমুদ্র, ধূমকেতু ইত্যাদি। পড়তে পড়তে এক সময় কবিতার পংক্তিমালা ফুরিয়ে আসে, কিন্তু মস্তিষ্কের ভাঁজে ভাঁজে থেকে যায় তার রেশ, কখনো উচ্ছাস, কখনো আক্ষেপ কিংবা কখনো অমীমাংসিত কিছু প্রশ্নবান রূপে। সেই রেশের নিনাদ চলতে থাকে দীর্ঘ সময় জুড়ে। কিছু কবিতার উপসংহার কবি নিজেই শেষ পংক্তিতে টেনেছেন, কিছু কবিতার উপসংহার নিজে না টেনে হয়তো ইচ্ছে করেই ছেড়ে দিয়েছেন পাঠকদের নিজ কল্পনার ডানার উপর যার যার মতো করে সমাপ্তি এঁকে নিতে । অতি সাবলীল আর উঁচুমানের লেখার হাত দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম এই লেখক অনেকদিন থেকে লিখেন হয়তো, অনলাইনে একটু খোঁজ খবর নিয়ে বুঝলাম এটি এই লেখিকার প্রথম বই। তবে বইটি পড়া শেষে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ নব্য হলেও তিনি এসেছেন কিন্তু কবিতা প্রেমীদের মনে স্থায়ী আসন করে নিতে। লেখিকার প্রোফাইল ঘুরে বুঝলাম এটি প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলেও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন বইমেলায় বইটি দারুন সাড়া ফেলেছে এবং বই প্রেমী পাঠকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বইটি সুপাঠ্য হলেও কবিতার নান্দনিক নামকরণ এবং শব্দ শৈলী বোঝানোর নির্বাচিত কিছু পংক্তিমালা পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি এখানে: কবিতার নাম: প্রেম ডাহুকের আর্তনাদ " আমার সেই তুমিটা চাই যেই তুমিটা ছিলে আমার আমৃত্যু খোঁজ দূর সমুদ্রের ডাক, ঝর্ণার অস্পষ্ট কলতান অচেনা অরণ্যে ডাহুকের আর্তনাদ " কবিতার নাম: অব্যাক্ত পংক্তিমালা " ঐ জলপ্রপাতও সব হারিয়ে- যেন কিছুই হারায় না থেকে যায় আমাদের না বলা শোকের মতো আলগোছে লুকিয়ে রাখা প্রেম অথবা আমাদের অশ্রুমালা যেমন " কবিতার নাম: অস্বীকৃত অস্তিত্ব " তোমার জন্য অপেক্ষাদের রেখে গেলাম বহুদিন পর যদি আবারো কখনো মনে পড়ে একজন ছিল, কানে কানে অনর্গল বলে যেত- শুধু তোমাকেই ভালোবাসি " " যদি জলের ধরে কোনোদিন ভীষণ একা লাগে মনে মনে খুঁজে নিও তারে । স্পর্শে বিভোর করেছিল যে - গহীন গোপনে, কোনো এক কালে " কবিতার নাম: বসন্ত যাপন "তুমি আমার - মনের ঘরে লুকিয়ে থাকা নিঃশব্দে বসন্ত যাপন রঙিন ডানায় ভোর করা সেই ব্যাস্ত প্রজাপতির ঢং খুব গোপনে মন-ক্যানভাসে রং তুলির আঁকিবুকি অশান্ত মনের সীমাহীন অনুভবের ডুব সাঁতার রত্তি রত্তি জমানো প্রেম, আমার সমর্পিত ভালোবাসা কিংবা শেষ ফাগুনের হওয়ার টানে আসা কাঠগোলাপের সৌরভ " কবিতার নাম: অপেক্ষার ধ্রুবতারা " অপেক্ষা, এক বিস্ময়কর মধুর শাব্দিক ধ্রুবতারা যার কোনো প্রত্যুত্তর নেই, যার কোনো মৃত্যু নেই হাজারো প্রশ্নবানে নিশ্চুপ এক মহাকালের গহ্বর অনুভূতির শেষ সীমান্তে নির্বাক এক মায়ার চাদর " কবিতার নাম: জীবনের ধারাপাত " তবু কখনো কখনো নিঃশব্দ নিরুত্তাপ বিকেলে স্মৃতির ছায়াপথে অশরীরী প্রেম জেগে উঠে মাঝে মাঝে জীবন যেন বিভীষিকাময় ডুবসাঁতার এ যেন মুক্তি অন্নেষনে বিজন কোনো সন্ন্যাস বারবার " কবিতার নাম: ভালোবাসার ফানুস উড়াই " বহুদূর হেটে এসে তোমাকেই বলি চেয়েছিতো সেই কবেই, এবার চলো ফিরে যাই ভালোবাসার ফানুস উড়াই " কবিতার নাম: স্বপ্ন চুরি " তোমাকে না দেখতে দেখতে - একদিন সত্যি ভুলতে বসে যাবো ভুলে যাবো তোমার সেই নাতিদীর্ঘ ছায়ারা দৈর্ঘ প্রস্থে ঠিক কতটা কাছে ছিল আমার ? " কবিতার নাম: অভিলাষী মন " আমি চাই, শুধু আমাদের হোক আরো একটি গুমোট মেঘলা দিন মেঠো পথে ঘাস ফুলদের মিছিল মাড়িয়ে হেটে যাই বহুদূর ছুঁয়ে দেখার ছুটি গড়িয়ে পড়ুক আমাদের আহত মন মেঘ না চাইতেই বৃস্টি আর সংধোন নামুক আমাদের ঘিরে " কবিতার নাম: অসমাপ্ত সমীকরণ " যদি আবারো ফিরতে চাও সে পথে দেখবে রয়ে গেছি ক্ষয়ে যাওয়া ধূলিকণা হয়ে তোমার পদচিহ্ন আঁকা সেই স্মৃতির শহরে " কবিতার নাম: নিশীথের নিনাদ "কবিতার ছলে কারণে অকারণে বলেছি বহুবার যতখানি আমি তোমার, ততখানি তুমিও আমার দামামা বাজিয়ে বুকের ভেতর জেগে থাকা এক অন্তিম হাহাকার অগুনিত ইশারায় চেয়েছি আমি বহুবার এ যেন তোমার মাঝেই আমার অহর্নিশ ডুবসাঁতার। অনুভবের আশ্চর্য খেয়ালে শুনিয়েছি বহুবার যতটা চেয়েছো আমায় ততটাই আমি তোমার " কবিতার নাম: বোধহীন বিলাসিতা রাতভর গন্ধ বিলানো হাসনাহেনা যখন ক্লান্ত হয়ে শেষ রাতে ঝরে পড়ে একসাথে জেগে থাকা সবুজ পাতার কি তখন সঙ্গী হারানো যন্ত্রনায় চিৎকার করে উঠে ? কবিতার নাম: আগুন্তক ফাগুন "সেখানেই না হয় থাকুক তোমার আমৃত্যু আধিপত্য তোমাতেই লেখা থাকুক আমার নিয়তির অমোঘ বিধান" যদি এক কথায় বলতে হয়, তাহলে বলবো এই বইটি হচ্ছে অজস্র অনুভূতির বিন্যাসে আঁকা একটি নান্দনিক তৈলচিত্র। বইটির পাঠ প্রতিক্রিয়ায় আরেকটি কথা না বললেই নয়। বেশ কিছু কবিতায় উপমার ব্যাবহার ছিল অবাক করার মতো সুন্দর। যথাযথ কন্ট্রাস্টের ইঞ্জেকশান (বৈপরীত্যের প্রয়োগ) উপমা গুলোকে আরো অতুলনীয় করে তুলেছে। যেমন: "বন্ধনহীন বন্ধনের শিথিলতা কোথায় যেন শুনে মিলিয়ে যাচ্ছে " " জন্ম নেয় এক বোধহীন বোধের " উপরোক্ত পংক্তিমালায় "বন্ধনহীন বন্ধন " এবং "বোধহীন বোধ " শাব্দিক কন্ট্রাস্টের উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে। শাব্দিক কন্ট্রাস্টের পাশাপাশি ভাবার্থেরও কিছু চমৎকার কনট্রাস্ট ইনজেকশন খুঁজে পেয়েছি। যেমন: "শত আলোকবর্ষ দূরের নিকট ভবিষ্যৎ" "শূন্য দূরত্বের সীমানা ডিঙিয়ে আরো একটু কাছে " উপরোক্ত পংক্তিগুলো পড়ে আপনি হয়তো ভাবতে শুরু করবেন, শত আলোকবর্ষ দূর তবু কেন, কিভাবে নিকট ভবিষ্যৎ? কিংবা দূরত্বের সীমানা যদি শূন্যই হয়ে থাকে, তাহলে এর চেয়ে কিভাবে আরো বেশি কাছে আসা সম্ভব ? ভাবতে ভাবতে এক সময় ভাবার্থের মর্ম উদ্ধার করে নিজে নিজেই চমৎকৃত হয়ে যাবেন। আসলে যে কোনো কবিতার চরণ পড়া মাত্র সেটা যদি পাঠককে মুহূর্তের জন্য থমকে দেয়, মনে ভাবনার খোরাক যোগায়, সেখানেই লেখকের সার্থকতা অনেকখানি। উপসংহারে বলতে চাই, আপনি কোনো এক উদাস করা মন কেমনের দিনে সুন্দর কিছু অনুভূতির খোঁজে কবিতার রাজ্যে হারাতে চান কিংবা প্রিয়জনকে লিখে পাঠানোর জন্য খুব সুন্দর, কাব্যিক কিছু পংক্তিমালা/উপমা খুঁজে বেড়ান, কিংবা প্রিয় কেউকে বিশেষ দিনে একটি সুন্দর, রুচিশীল কবিতার বই উপহার দিতে চান, কিংবা আপনার ব্যাক্তিগত বইয়ের সংগ্রহশালাকে আরো সমৃদ্ধ করতে চান -আপনার উদ্দেশ্য যেটাই হোক এই বইটি হতে পারে আপনার খুঁজে বেড়ানো সেই মুক্তো ! আমি নিজে এই মুক্তোর কাব্যিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে আপনাদেরও আমন্ত্রণ জানাচ্ছি বইটি পড়ে দেখার। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না, পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবেন অনুভূতি দিয়ে বোনা এক আশ্চৰ্য সুন্দর জগতে। বই পড়ুন, ভালোলাগা বইগুলো অন্য পাঠকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন, একটি ভালো বই হোক সর্বজনীন।
February 01, 2024
সেলিনা শাহীন (Selina Shaheen)
পেশায় গবেষক-চিকিৎসক সেলিনা শাহীনের জন্ম ৮ অক্টোবর। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সেলিনা শাহীনের বর্ণিল শৈশব আর কৈশোর কেটেছে নোয়াখালী জেলার ছোট্ট শহর মাইজদী কোর্টে। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে ঘুরেছেন দেশের নানা প্রান্তে। ২০০৯ সালে দেশে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে পাড়ি জমান মার্কিন মুলুকে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন শেষে বর্তমানে কাজ করছেন গবেষক-শিক্ষক হিসেবে। স্বপরিবারে থিতু হয়েছেন জ্যাজ মিউজিক খ্যাত লুইজিয়ানায় নিউ অরলিগ শহরে। বেড়ে উঠলেও রক্ষণশীল মধ্যনिত্ত পরিবারে ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং চিন্তার স্বাধীনতা পেয়েছেন বরাবরই। শিশুকাল থেকে সংস্কৃতিমনা সেলিনার প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ, জীবনানন্দ দাশ, সমরেশ মজুমদার এবং সাদাত হোসাইন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকতে মা একটা নীল ডায়রি কিনে দিয়ে বলেছিলেন- দিনের উল্লেখযোগ্য সব ঘটনা লিখে যাৰতে। বলতে গেলে তখন থেকেই লেখালেখির হাতেখড়ি। সেলিনা শাহীনের গবেষণালব্ধ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে, অনুবাদ হয়েছে নানা ভাষায়। নিয়মিত বাংলা অনলাইন সাহিত্য পাতাগুলো ছাড়াও দেশিয় ম্যাগাজিন এবং পত্রপত্রিকায় লেখকেনা ছোটগল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপা হয়েছে। সুদূর প্রবাসে বসেও যারা নিয়মিত সাহিত্যের চর্চা করছেন, বাংলাকে হৃদয়ে ধারন করেছেন সেলিনা শাহীন তাদের অন্যতম। এই বাংলা সাহিত্যকে ভালোবেসেই লিখে যেতে চান জীবনের শেষ দিন অবধি। লেখক মনে করেন, নারী মনের নানা অব্যক্ত আবেগ হতে পারে সাহিত্যের এক নতুন ধারা। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, একজন নারী যে প্রেমাতুর চোৰে প্ৰকৃতিকে দেখেন- তা দিয়ে রচিত হতে পারে ভালোবাসার মহাকাব্য।