Loading...

আহাম্মক অহমের গল্প (হার্ডকভার)

অহম সচেতনতার উপন্যাস

স্টক: স্টকে আছে (৪ এর বেশি কপি আছে)

৩০০.০০ ২২৫.০০

স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসে পানি রাখলে যেমন তার ভেতরটা স্পষ্ট দেখা যায়, মোহাম্মদ আলীর ‘আহাম্মক অহমের গল্প’ অনেকটা সেরকম। এর ভেতর একবার চোখ ডুবালে পরিষ্কার দেখা যায় বর্তমান সময়ে বাস করা প্রায় অধিকাংশ বিবাহিত, আপাত সংসারী, কিছু ক্ষেত্রে সুখীও বটে, মধ্যবয়স্ক পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব বা হাহাকার। যে দ্বন্দ্ব পুরুষকে নিজের ফুলের বাগানের মতো সাজানো গোছানো সংসারেও অসংসারী করে তোলে, সংহারী করে তোলে। পারিপাশ্বিক বাস্তবতায় যে শোভিত বাগান দেখা যায়, মধ্যবয়স্ক বিবাহিত পুরুষ সেই বাগানের শোভায় মুগ্ধ হতে পারে না সব সময়। কখনো কখনো নিজের অজান্তেই নিজের ভেতর গড়ে তোলে আরেকটি নিজস্ব বাগান। অথবা আপনাআপনিই গড়ে ওঠে। যেখানে আর কারো প্রবেশাধিকার থাকে না। আহাম্মক অহমের গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা সোহেল যে নিজস্ব বাগান গড়ে তুলেছে তার অভ্যন্তরে, কিংবা সকলের অলক্ষে প্রকাশ্যেই, অথচ সব গোপনীয়তা রক্ষা করে, তার ভেতরও অন্য কারো প্রবেশাধিকার নেই। সে বাগানের একচ্ছত্র অধিপতি সোহেল নিজে। যেখানে তার সঙ্গী তার ভেতরকার বিভিন্ন অহম বা বিবেকের বিভিন্ন দিক। গোপন প্রেমিক অহম, সামাজিক অহম, নৈতিক অহম ইত্যাদি যার নিয়ন্ত্রক। যেখানে তার বয়স কমে কুড়ি। সেখানে সে আর কোনো সরকারি বড় কর্মকর্তা বা আরো নির্দিষ্ট করে বললে উপসচিব নয়, সে এক ডিজে ডান্সার বা নাইট ক্লাব ডান্সার যৌবনছোঁয়া আগুন বালিকা মেহেকের রূপমুগ্ধ পাগল প্রেমিক। নিজের ওপর যার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যাকে নিয়ন্ত্রণ করে তার অভ্যন্তরের বিভিন্ন অহম। সে শুধু তার ভেতরের অহমদের ইচ্ছানুসারে ক্রিয়া করে চলে। এবং শেষ পর্যন্ত অহমদের কাছেই সমর্পন করে সে নিজেকে। সোহেল এখানে কেবল ব্যক্তি সোহেল নয়, সৈয়দ শামসুল হকের ‘খেলারাম খেলে যা’র বাবর আলীর মতো আপাত কামতাড়িত দুষ্টু চরিত্রের পুরুষও নয়। সে সামাজিক ও সংসারি। যৌক্তিক অথচ প্রেমিক। কপট নয়, আবার সাধুও নয়। যখন যে অহম তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, সে আসলে তাই। বিবাহিত, অর্ধবয়সে পৌঁছে যাওয়া প্রতিষ্ঠিত পুরুষদের ভেতরকার হাহাকার, অতৃপ্তি, ও অবদমনের পুরোটা যেন একাই নিজের ভেতর ধারণ করেছে সোহেল। তার স্ত্রী কলেজ শিক্ষিকা মিনা হয়ে উঠেছে হাজারো সংসারী স্ত্রীর প্রতিনিধি। যে স্বামীকে নিজের করে রাখতে চায়, তার গোপন প্রেমের আশঙ্কা করে সতর্ক অনুসন্ধান চালায়। সোহেলের বন্ধু তানভীর হয়ে ওঠে আমাদের প্রত্যেকের চারপাশে থাকা সেই সব বন্ধুদের একজন, যারা অপর বন্ধুকে অ-বয়সে অতিসুখ লাভ করতে দেখে ভেতরে ভেতরে জ্বলে। আর সোহেলের প্রণয়িনী মেহেক, বর্তমান সময়ে বাস করা রূপসর্বস্ব সেই শ্রেণির প্রতিনিধি, যাদের রূপ-যৌবনই হলো জীবিকার হাতিয়ার। মুখের কথা আয়ের পথ, আর শরীরের ভাষা অর্থ লাভের উপায়। তবে এদের থেকেও লেখক মেহেককে আলাদা আরেকটা শ্রেণিতে ফেলেছেন বলেই মনে হয়েছে আমার। মেহেক শুধু যে প্রতারণা করতে জানে, তা নয়। সে ভালোবাসতেও জানে। ভান করে ভালোবাসলেও সে ভালোবাসার গভীরতা এতটা প্রগাঢ় করে প্রকাশ করতে পারে যে, তা আর অবিশ্বাস যোগ্য মনে হয় না। তার জন্যও একটা বিমূর্ত বেদনা পাঠকের মনে উদয় হয়। আহাম্মক অহমের গল্পের সবচেয়ে দারুণ ব্যাপারটি হলো এর ঝরঝরে গদ্য। কোথাও এক মুহূর্তের জন্যও আটকে যেতে হয় না। চোখ মেললে আপনাআপনিই পাতা উল্টে যায়। মুগ্ধতা তৈরি হয়। কখনো কখনো চমৎকৃত হয়ে দু একটা বাক্য পুনরায় পাঠ করতে হয়। সমকালীন বাংলা সাহিত্যে যৌনতাকে অনেকটা অচ্ছুত মনে করে প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা সাধারণত চোখে পড়ে, মোহাম্মদ আলী সে পথে হাঁটেননি। যেখানে যেমন প্রয়োজন, সেখানে তেমনই এঁকেছেন। তার পরিমিতিবোধ প্রশংসাযোগ্য। কোনো ঘটনাকেই খোলামেলা মনে হয়নি, অথচ যা তিনি প্রকাশ করতে চান, তা পাঠক ঠিকই অনুধাবন করতে পেরেছে। গল্পটা অনেকটা সিঙ্গেল টেক চলচ্চিত্রের মতো। কোনো পরিচ্ছেদ বিভাজন নেই, শুরুর পর শেষ অবদি এগিয়ে গেছে বিরতিহীনভাবে। তারপরও কোথাও হাঁসফাস লাগেনি। তবে সাধারণত একটা উপন্যাস যে বিস্তারে এগোয়, এর বিস্তার সেই তুলনায় কিছুটা সংকুচিত ছিল তা বলতে হবে। ঘটনা একটি আবর্তে থেকেই শেষ হয়ে গেছে। বিভিন্নমুখী চরিত্রের সাথে পরিচয় হলে পাঠক যে তৃপ্তি লাভ করে, এখানে তা থেকে কিছুটা হলেও বঞ্চিত হবে বৈকি। সোহেলকে নিয়ে দীর্ঘ সময় কলকাঠি নেড়ে তার মনস্তাত্ত্বিক হাহাকার ও দ্বন্দ্বকে চরম পর্যায়ে তুলে তার অভ্যন্তরীণ অহমদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের হাতে একজন পরাজিত, স্খলিত মানুষ হিসেবে তুলে দিয়েছেন লেখক শেষ অংকে। যা থেকে মুক্তির জন্য চিরশান্তির ঘুমকে আশ্রয় করতে বাধ্য হয়েছে সোহেল। কেন এমন পরিণতি হলো সোহেলের? তার অভ্যন্তরীণ দার্শনিক অহম শেষটায় নিজেই দিয়েছে সেই উত্তর। এমন একটা সমাজের ইঙ্গিত দিয়েছে সে, যেখানে অবদমন ছাড়াই বাঁচার সুযোগ পাবে ব্যক্তি। প্রেমকে লেখক দেখেছেন বেঁচে থাকবার মন্ত্র হিসেবে। আর অবদমন, অপ্রেম, অপ্রাপ্তী, সামাজিক বেরিবাঁধকে দেখিয়েছেন মৃত্যু!
Ahammok Ahamer Galpo,Ahammok Ahamer Galpo in boiferry,Ahammok Ahamer Galpo buy online,Ahammok Ahamer Galpo by Mohammod Ali,আহাম্মক অহমের গল্প,আহাম্মক অহমের গল্প বইফেরীতে,আহাম্মক অহমের গল্প অনলাইনে কিনুন,মোহাম্মদ আলী এর আহাম্মক অহমের গল্প,Ahammok Ahamer Galpo Ebook,Ahammok Ahamer Galpo Ebook in BD,Ahammok Ahamer Galpo Ebook in Dhaka,Ahammok Ahamer Galpo Ebook in Bangladesh,Ahammok Ahamer Galpo Ebook in boiferry,আহাম্মক অহমের গল্প ইবুক,আহাম্মক অহমের গল্প ইবুক বিডি,আহাম্মক অহমের গল্প ইবুক ঢাকায়,আহাম্মক অহমের গল্প ইবুক বাংলাদেশে
মোহাম্মদ আলী এর আহাম্মক অহমের গল্প এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 238.40 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Ahammok Ahamer Galpo by Mohammod Aliis now available in boiferry for only 238.40 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন হার্ডকভার | ০ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2023-01-31
প্রকাশনী দাঁড়িকমা
ISBN:
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

মোহাম্মদ আলী
লেখকের জীবনী
মোহাম্মদ আলী (Mohammod Ali)

সাহিত্যক, লেখক এবং আলোচক।

সংশ্লিষ্ট বই