তামুদ্দনিক সংগঠনের প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করবেন আমাদের কবিসাহিত্যিকরা। কিন্তু আফসােস! আমাদের যারা কবি-সাহিত্যিক তাঁদের অনেকেরই এ সম্বন্ধে কোন চেতনাই নেই। মনে তাদের এখনাে বাঁধা রয়েছে শতাব্দীর গােলামীর জিঞ্জির। তাঁদের কাছে সাহিত্য যেন নিছক একটা স্বপ্নবিলাস ছাড়া আর কিছু নয়। নতুন যুগের পদধ্বনি তারা এখনাে শুনতে পাননি। | সুখের বিষয়, আমাদের তরুণ নাট্যকার ইব্রাহীম খলীল সাহেব এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। তাঁর সাহিত্যে দেখতে পেয়েছি একটা সৃষ্টির বেদনা, একটা সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি, আর দেশ ও জাতির প্রতি একটা আন্তরিক মমত্ববোেধ। ইতােপূর্বে তিনি 'সমাধি' নামক একটি লিখে যশস্বী হয়েছেন; স্পেন-বিজয়ী মূসা তার দ্বিতীয় গ্রন্থ। আমি তাঁর নব সৃষ্টির সাথে পরিচিত হয়ে খুবই খুশি হয়েছি। নাটক লিখবার আঙ্গিক (technique) লেখকের জানা আছে, তাই তার লেখা হয়ে ওঠে রসঘন ও প্রাণবন্ত। বলিষ্ঠ প্রকাশ-ভঙ্গী, তীক্ষ ইঙ্গিত এবং অন্তরের ঐকান্তিক সংবেদনাই তার লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য। নাটকের মাধুর্য-গৌরব ও প্রতিভার পরিচয় ত সেখানেই। গত যুগে আমাদের কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক নাটক লেখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাদের সে-চেষ্টা খুব যে সার্থক হয়েছে, তা বলা যায় না। নাটক লেখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এর পেছনে দরকার একটা সুষ্ঠু আত্মবলিষ্ঠ ভাবােতকর্ষ এবং সমালােচকের সৃষ্টিমুখী দৃষ্টিভঙ্গী। অক্ষমের হাতে তা সার্থক হয় না। এ নাট্যকারের মধ্যে সে-শক্তির পরিচয় পেয়ে আমি আনন্দিত।