কদম আলি বয়োবৃদ্ধ মানুষ । পঁয়ত্রিশ বছরের চাকরি শেষে সঞ্চিত টাকা নিয়ে সে গিয়েছিল বড় ছেলের সংসারে । এর আগে অফিস থেকে পাওয়া টাকা-পয়সাও সে ছেলের হাতে সোপর্দ করে। কিন্তু বড় ছেলে দিন কয় তার সংসারে রেখে সোজা জানিয়ে দেয় বসে বসে সে তার বাবাকে । পালতে পারবে না। পথ দেখতে বলে বাবাকে । শুনে কদম আলি চোখে অন্ধকার দেখে । ঠোট । ভিজিয়ে বলে, ‘আমি তোর বাপ । এই বুড়া বয়সে কই যামু?’ ছেলে নির্বিকার । কই যাইবা সে তুমিই জান । আমার এখানে জায়গা নেই । সারাজীবন যে ব্যক্তি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কাটিয়েছে এখন। বৃদ্ধকালে তাকে অন্যের বোঝা হয়ে থাকতে হচ্ছে । এটা বড় বেদনার বিষয় কদম আলির জন্য। সন্তানরা দূরে ঠেলে দিচ্ছে অথচ তারাই তো সবচাইতে আপনজন । জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় তারাই তো হবে নির্ভার আশ্রয় । অথচ কদম আলির কোথাও আশ্রয় মিলছে না। কদম আলি। তার জীবনের সাথে মিল খুঁজে পায় আরেকজনের, যিনি চাকরিজীবনে তার স্যার ছিলেন। সেই শিক্ষিত ব্যক্তিরও শেষ আশ্রয় জোটে বৃদ্ধাশ্রমে। কদম আলি তার সন্ধানে গিয়ে সেখানেই থেকে যায় অস্থায়ী চাকরিসূত্রে । সংসারটা এক অদ্ভুত জায়গা । খিদে সইতে না পেরে টাকা ছাড়াই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খায় কদম আলি । তারপর বেয়ারাদের পিটুনি খেয়ে পুলিশে সোপর্দ এবং তারপর জেলে । জেলে এসে যেন স্বস্তি পায় কদম আলি । এখানে খাবারটা তো জুটবে! কদম আলির সৈয়দ সামাদের কাহিনিও সমান্তরালভাবে এগোতে থাকে । বৃদ্ধাশ্রমের নানারকম সখ্য সীমাবদ্ধতা ও জটিলতা নিয়ে একটি চমৎকার কাহিনি। যেখানে শিক্ষিত-অশিক্ষিতের বাস্তবতা একটি কেন্দ্রবিন্দুতে এসে মেশে।।