আধুনিক কালে (সামাজিক) গবেষণা পদ্ধতি বলতে প্রথমেই আপনার ধরে নিতে হবে যে তেমন কোনো আপ্তজ্ঞান আপনার থাকা চলবে না। কোনো বৌদ্ধিক উপলব্ধিও থাকা চলবে না। এমনকি যাকে কমনসেন্স বলে সেটাও কম থাকলে ভালো। বা কমনসেন্স দিয়ে আগানোর ইচ্ছা না-থাকা ভালো। আপনার গবেষণা করে-করে অনুসিদ্ধান্ত বলতে হবে; উপলব্ধি বলতে হবে। আপনার তামাম অভিব্যক্তিই গবেষণালব্ধ হলে ভালো। আপনি একজন সামাজিক গবেষক-এর থেকে আমরা কী বুঝব? আমরা বুঝব যে আপনি সামাজিক কম, এবং গবেষক বেশি। এমনকি আপনাকে অসামাজিক সাব্যস্ত করে আগালেই বরং আপনার পেশাজীবীতা সম্বন্ধে সর্বাপেক্ষা সঠিক ধারণা করা হতে পারে। ঐতিহ্য প্রসঙ্গ এলেই আপনাদের অনেকের যেমন কান্নামাখা গলাভেজা জাতীয়তাবোধ জাগরুক হয়, সেটা মেহেরবানি করে খানিকক্ষণের জন্য অব্যহতি দিন। নাহলে এই হারিয়ে যাওয়া বিষয়ক আজকের বোঝাবুঝিতে ভেজাল বাধবে। তবে আমাদের আলোচ্য বিষয় খাদ্যবস্তু বিধায় জাতীয়তাবোধের সঙ্গে আপনাদের লোভও জাগতে পারে। ধরা যাক রুমালি রুটি, কিংবা বাঙ্গির হালুয়া। না ধরুন, বাখরখানি; এটাই ফাইনাল। বাখরখানি অবশ্য আপনার অত্যন্ত নরম ডেলিকেট হাতে ধরতে হবে। এটা ‘পুরান ঢাকা’র ‘ঐতিহ্য’ ইত্যাদি নিয়ে নানান কথা আপনি বলতেই পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় খাবার সময় এসব আলোচনা না-করা। এটা খুবই নাজুক ও ডেলিকেট বস্তু। আপনার আলাপের সময় আধচ িবানো বাখরখানি ধুলিময় হয়ে আপনার প্রিয়তম, কিংবা বসের মুখে গিয়ে পড়তে পারে। তো, এটা এখনো ‘বিলুপ্ত’ ঐতিহ্য নয়। তবে ধারণা বা আশঙ্কা করা যেতে পারে এর অবলোপের। এই বস্তুটার পরতে পরতে লেয়ারে লেয়ারে এমন কেয়ার থাকে, ধরলেই বুঝতে পারবেন যে এর কারিগরের নিষ্ঠার সঙ্গে তা শিখতে হয়। কারিগরের ওস্তাদ থাকেন, তাঁর ওস্তাদ থাকেন, তাঁরও ওস্তাদ থেকেছিলেন। পরম্পরা যাকে বলে, ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে যা অতীব প্রাসঙ্গিক। এর আটা-ময়দাও, আন্দাজ করা যায় বিশেষ পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করা লাগে। এর চুলাও যে কোনো চুলা নয় যে টু-বার্নার একটা জায়গামতো লাগিয়ে নিলেন। তো এই লেয়ারসম্পন্ন কেয়ারজাত বস্তুটা তো বানাতে হবে!
মানস চৌধুরী এর সরল সমাজপাঠ এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 240.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Saral Samajpath by Manos Chowdhuryis now available in boiferry for only 240.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.