বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর পথের পাঁচালী এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 297.50 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Pother Pachali by Bivutivushon Bondopadhaiis now available in boiferry for only 297.50 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
পথের পাঁচালী (হার্ডকভার)
৳ ৩৫০.০০
৳ ২৮০.০০
একসাথে কেনেন
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর পথের পাঁচালী এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 297.50 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Pother Pachali by Bivutivushon Bondopadhaiis now available in boiferry for only 297.50 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন | হার্ডকভার | ২৩৭ পাতা |
---|---|
প্রথম প্রকাশ | 2020-03-01 |
প্রকাশনী | দি স্কাই পাবলিশার্স |
ISBN: | 9848260684 |
ভাষা | বাংলা |
ক্রেতার পর্যালোচনা
1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা
-
পর্যালোচনা লিখেছেন 'fatemaismail keya'
শুরুর কথা: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পথের পাঁচালী' (১৯২৯) পরস্পর পরস্পরের সম্পূরক । নিশ্চিন্তপুর গ্রামের দরিদ্র ব্রাহ্মণ হরিহরের অভাবগ্রস্ত জীবনের বর্ণনাই এ উপন্যাসের বিষয়বস্তু। হরিহরের এক কন্যা দুর্গা এবং এক পুত্র অপু। বালক অপুই উপন্যাসের নায়ক। তার কৌতুহলী একজোড়া চোখ দিয়ে শিল্পী আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন জীবনের নানা অনুষঙ্গ। পাঠ সংক্ষেপ: এই উপন্যাসের প্রথম অংশে আমরা তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি বাল্যবিবাহ ও যৌতুককে দানবীয় আকার ধারণ করতে দেখি। ইন্দির ঠাকুরনের বিয়ে অল্পবয়সে এমনই এক লোকের সাথে লোকের সাথে দেয়া হয়, যে বেশি যৌতুকের লোভে অন্যত্র বিয়ে করেন এবং আর কখনও ফিরে আসে না। তখন আয়হীন ইন্দির ঠাকুরনের আবাসস্থল হয় তার পিতার বাড়িতে, এবং তাদের ও তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার দূরসম্পর্কের আত্মীয় হরিহরের বাড়িই তার স্থান হয়। সেখানে প্রতিমুহূর্তে তাকে মনে করিয়ে দেয়া হত যে সে একজন আশ্রিতা, করুণার পাত্রী ছাড়া আর কেউ নয়। সে প্রায়শই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত, কিন্তু দিন শেষে তার পথ এসে শেষ হত হরিহরের বাড়িতেই। একবার ঘটনাক্রমে বাড়ি থেকে তাকে একেবারে বের করে দেয়া হয় এবং মর্মান্তিকভাবে তার জীবনের ইতি ঘটে। মৃত্যু হয় অসহায়ত্বেরর। এই উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশ ‘আম আঁটির ভেঁপু’-এ অত্যন্ত সুচারুভাবে হরিহরের সন্তানদ্বয়- বড়মেয়ে দূর্গা ও ছোট ছেলে অপুর টক-মিষ্টি সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। দূর্গা একপর্যায়ে অপুকে মারে, কারণ সে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে চুরি করে আম খাওয়ার ঘটনা বলে দেয়। এই কারণে তাকে প্রতিবেশীর কথাও শুনতে হয়। রাগের মাথায় দুর্গার মা সর্বজায়া ওকে বকাবকি করেন। উপন্যাসের এক পর্যায়ে ম্যালেরিয়া জ্বরের শেষ পর্যায়ে এসে দুর্গা মারা যায়। উপন্যাসের শেষ অংশ ‘অক্রুর সংবাদে’ চিরাচরিত বাংলার বড়লোক-গরীবের বৈষম্যের কথা তুলে ধরা হয়েছে। লেখক সাফল্যের সাথে দেখিয়েছেন, যে একজন ব্রাক্ষ্মণ নারীর(সর্বজয়া) কি অবস্থা হয়, যখন অর্থের জন্য তাকে কাজের লোকের কাজ করতে হয়। দুর্গার মৃত্যুর পর তারা গ্রাম ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। সেখানে এক পর্যায়ে জ্বরে স্বামী হরিহরও মারা যায়। তার চোখের অশ্রু মোছার জন্যও কেউ ছিল না। সবাই তার কষ্টের সুযোগ নিতে চায়। সাহায্যের হাত কেউ বাড়ায় না। অবশেষে সে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে অপুকে নিয়ে তার নিজ গ্রাম নিশ্চিন্দি পুরের পথে রওনা হয়। কিন্তু সে তার সঠিক পথ খুঁজে পায় না। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই সামাজিক বৈষম্য আজকের একবিংশ শতাব্দিতে এই উন্নত সমাজেও পরিলক্ষিত হয়। বস্তুত এই উপন্যাস আদি ও বর্তমান সামাজিক উত্থান-পতন ও সামাজিক কুসংষ্কারেরই প্রতিচ্ছবি। পাঠ-প্রতিক্রিয়া: অসাধারণ উপন্যাস। তবে বিভূতিভূষণ তো ভারি নির্দয় লোক! ইন্দির ঠাকুরণের মৃত্যুর পর তার উল্ল্যেখ আর কোথাও নাই ! একেবারে উপন্যাসের শেষে অপুর মা তার নির্দয় আচরণের কথা ভেবে ভগবানের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। তারপর আবার উপন্যাসের প্রধান এক চরিত্র দুর্গার মৃত্যুর পর অপুর মনের কথা জানতে প্রবল ইচ্ছা হচ্ছিল। ভাবলাম, এইবার বুঝি অপু কেঁদে কেটে অস্থির হবে। কিন্তু ঔপন্যাসিক তার গতিতে এগিয়ে গিয়েছেন প্রকৃতির বর্ণনা দিতে দিতে। দুর্গার মৃত্যু যেন কিছু নয়। আমি মেনে নিতে পারিনি। দুর্গার মৃত্যুর পর হাহাকার হচ্ছিল মনে। পরবর্তী অনেকগুলো পৃষ্ঠায় অপেক্ষা করেছি কোথায় উপন্যাসের চরিত্রগুলো দুর্গার মৃত্যুতে দুঃখ করবে। কিন্তু না । অপুর বাবা মারা যাবার পর ! না । কোথাও কোন আহাজারি নেই, নেই কান্না। ভাবলেশহীন অনাড়ম্বর মৃত্যু শোক। ভীষণ লেখক বিভূতিভূষণ। হয়ত এখানেই তার বিশালতা। তবে প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েছেন মনভরে। যেখানেই সুযোগ মেলেছে , সেখানেই উদার হাতে প্রকৃতির প্রশংসা করেছেন। কিছু কথা খুব ভাল লেগেছে । যেমন, "মা শিশুকে স্নেহ মমতা দিয়ে লালন করে। যুগে যুগে মায়েদের কত গৌরবগাঁথা। কিন্তু শিশু মাকে যা দেয়, তা কি কম ! সে নিঃস আসে বটে , কিন্তু তার মন-কাড়িয়া-লওয়া হাসি , শৈশব তারল্য, চাঁদছানিয়া গড়া মুখ, আধ আধ আবোলতাবোল বকুনির দাম কে দেয়! ওই তার ঐশ্বর্য , ওরই বদলে সে সেবা নেয়, আদর মমতা নেয়, রিক্ত হাতে ভিক্ষুকের মত নেয় না । কি আশ্চর্য আর তীক্ষ্ণ অন্তরদৃষ্টি !" পাঠ পর্যালোচনা: ঔপন্যাসিকের জীবনে অভিজ্ঞতার পরিধি ছিল ব্যাপক। অপুর ন্যায় জীবন্ত ও পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে চিত্রিত বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে দ্বিতীয়টি নেই। শিশুমনের রহস্যময়তা উপন্যাসে পুঞ্জীভূত উদাহরণ ও বিচিত্র প্রমাণের সাহায্যে সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক চিত্রসৃষ্টি দিয়ে পথের পাঁচালী’র গােড়াপত্তন, দূর অতীতের সাথে পল্লী বাংলার জীবনের গ্রামীণ যােগ দিয়ে লেখক গল্প শুরু করেছেন। পল্লী সমাজের আচার-ব্যবহার, সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযােগ, মান-অভিমান, আশা-আকাঙ্ক্ষা, নৈরাশ্য-বেদনার চিত্র এঁকেছেন তিনি। জীবনের আদি অন্তহীন, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নাঘেরা এক বিরাট ও বিস্তৃত পথের পরিচয়ই ‘পথের পাঁচালী’র মুখ্য উপকরণ। প্রকৃতির জগৎ আর মানবজীবন এক হয়ে যেন কোন অপরিচিত রহস্যময় অনন্তের দিকে ছুটেছে। উপন্যাসের চরিত্র সৃষ্টির মধ্যেও একটি সর্বসাধারণ রূপ দেখা যায়। কোন বিশেষ ধরনের টাইপ চরিত্রের মধ্য দিয়েও যেন লেখক একটি সমাজকে স্পষ্ট করেছেন। কাহিনীর গভীরতার চেয়ে এখানে মূখ্য হয়ে উঠেছে গ্রামীন মানুষের জীবনের বাস্তব চিত্র। যা আমাদের ভাবনার জগতে গভীরভাবে ছাপ ফেলে। লেখক যেভাবে একটি মাত্র ঘটনাকে দিয়ে সমগ্র গ্রামীন জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছেন তার কোনো তুলনা হতে পারে না। এখানেই একজন সাহিত্যিকের সার্থকতা। লেখকের গভীর অনুভূতি ও কহিনীর পটভূমি যথার্থভাবেই ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসটিকে একটি সার্থক উপন্যাসে পরিণত করেছে। রেটিং: ১০/১০
July 07, 2022
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Bivutivushon Bondopadhai)
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ - ১লা নভেম্বর, ১৯৫০[১]) ছিলেন একজন জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তাঁর সবচেয়ে বেশি পরিচিত উপন্যাস। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আরণ্যক, চাঁদের পাহাড়,আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী ও অশনি সংকেত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উপন্যাসের পাশাপাশি বিভূতিভূষণ প্রায় ২০টি গল্পগ্রন্থ, কয়েকটি কিশোরপাঠ্য উপন্যাস ও ভ্রমণকাহিনি এবং দিনলিপিও রচনা করেন। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। ১৯৫১ সালে ইছামতী উপন্যাসের জন্য বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন।