বর্তমান মুশিদাবাঙ্গ নগরের প্রান্তদেশ বিধৌত করিয়া যে স্থানে প্রসসালা৷ তীয়খী প্রবাহিত হইতেছেন, যথায় নগরস্থ সহস্রদ্ধার সৌখাদির প্রতিবিম্ব নদীবক্ষে পতিত হইয়া রমণীয় শােভা সংবর্ধন করিতেছে, তাহারই অপর পারে ডাহাপাড়ানামক একটি গ্রাম অবস্থিত। ডাহাপাড়া ভাগীরথীর পশ্চিমতীরস্থ। এককালে এই জাহাপাড়া মুর্শিদাবাদ-রাজধানীর অন্তর্গত হইয়া, বহুসংখ্যক অট্টালিকায় বিভূষিত ছিল। তৎকালে মুর্শিদাবাদ ভাগীরথীর উভয় তীরে অবস্থিতি করিয়া, আপনার যে ও সমৃদ্ধি সমগ্র জগতে ঘােষণা করিত। উক ডাহাপাড়া হইতে প্রায় সার্ধ ক্লোশ পশ্চিমে একটি ক্ষুদ্র পল্লী দৃষ্ট হয় ; তাহার নাম কিরীটকণা। কিরীটকণা এক্ষণে জঙ্গল-পরিপন। কিন্তু ইহার এমন একটি মােহিনী শক্তি আছে যে, তথায় উপস্থিত হইবামাত্র মনঃপ্রাণ শান্তভাবে পরিপূর্ণ হইয়া যায়,—কি এক অনির্বচনীয় রসে অন্তরাত্মা আপুত হইয়া উঠে। স্থানটি জঙ্গলময় হইয়াও যেন শান্তিনিকেতন ; শান্তিদেবী যেন ইহতে চির আবাসস্থান স্থাপন করিয়াছেন। মুর্শিদাবাদের মধ্যে এরূপ বৈরাগ্যোদ্দীপক হন অতি বিরল। এই স্থানে কতিপয় প্রাচীন মন্দির জীর্ণাবস্থায় থাকিয়া, মুর্শিদাবাদের পর্বগৌরবের কথা স্মৃতিপথে জাগাইয়া দেয়। কিরীটকণা মুশিদাবাদের মধ্যে একটি প্রাচীন স্থান। এইরূপ প্রবাদ আছে যে, দক্ষযজ্ঞে বিশ্বজননী পতিপ্রাণ সতী প্রাণত্যাগ করিলে, ভগবান বিষ্ণু তাহার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করিয়া সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডে নিক্ষেপ করিয়াছিলেন, সেই সময়ে দেবীর কিরীটের একটি কণা এই স্থলে পতিত হয় ; জন্য ইহা উপপীঠ মধ্যে গণ্য এবং ইহার অধিষ্ঠাত্রী কিরীটেশ্বরী বলিয়া এতদণ্ডলে কীতিতা। কিরীটেশ্বরী যেন সমস্ত মুর্শিদাবাদেরই অধিষ্ঠাত্রীস্বরূপা ছিলেন। যত দিন তাহার গৌরব ছিল, তত দিনই মুর্শিদাবাদের শ্রীবৃদ্ধি, অথবা মুর্শিদাবাদের শ্রীবৃদ্ধি-লয়ের সঙ্গে সঙ্গেই তিনিও এতদঞ্চল হইতে অন্তহিতা হইতে বসিয়াছেন। কিরীটকণা প্রথমাবস্থায় ঘাের জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল ; কেবল একটিমাত্র সামান্য মন্দির ইহাতে ভগ্নাবস্থায় দৃষ্ট হইত ; উহা কতদিনের নিমিত, তাহ৷