বৃষ্টি হচ্ছে খুব। আকাশ কালাে মেঘে ঢেকে গেছে। পুতুল ব্যাল্কনিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে। বৃষ্টি পরম আনন্দে তাকে স্পর্শ করছে। ভিজিয়ে দিচ্ছে তাকে অতি যত্নে। প্রকৃতি মায়ের এই যত্ন তার খুবই প্রিয়। আর কেইবা আছে জীবনে তাকে এমন যত্ন করার। আজকাল তুষারও আর। আগের মতাে নেই। একই ছাদের নিচে আছে দু'জনে। কিন্তু মনে হয়। দু'জনের মাঝে দূরত্ব যেন সাত সমুদ্র তের নদীর সমান। আজ থেকে পনেরাে বছর আগে পুতুল আর তুষারের বিয়ে হয়েছিল। দু'জনের চোখেই ছিল নানা রঙের স্বপ্ন। পুতুলের তখন একুশ বছর বয়স। আর তুষারের পঁচিশ। দু'জন যেন প্রেম যমুনায় ভাসছিল। সবাই বলতাে ‘মেড ফর ইচ আদার'। পনেরাে বছর কেটে গেছে। তাদের মাঝে আসেনি কোনাে নতুন অতিথি। পুতুল খুব ভালাে চাকরি করে। ভালাে স্যালারি। ব্যাংক ব্যলান্সও ঈর্ষা। করবার মতাে। কিন্তু এমন জীবন পুতুল চায়নি কখনই। আর দশজন সাধারণ মেয়ের মতােই সেও ভাবতাে এমন একটা সংসার হবে তার। যেখানে থাকবে সে, তার তুষার আর তাদের সন্তান। কিন্তু মানুষের সব। আশা কি সৃষ্টিকর্তা পূর্ণ করেন! মানুষ চায় একরকম আর হয় আরেকরকম। আজকাল পুতুল নামাজ পড়াও ছেড়ে দিয়েছে। প্রার্থনাতে আর তার কোনাে বিশ্বাস নেই। বিশ্বাস নেই কোনাে কিছুতেই। আর ডাক্তারের কাছে যায় না। পুতুল। নয় মাস আগে তুষার তাকে বলে দিয়েছে আর সারা বিশ্ব ঘুরে নামকরা ডাক্তারদের দরজায় ঠকঠক করবে না সে। তুষারের ভাষায় “অনেক তাে হলাে পুতুল, আর কত ডাক্তার দেখাবে? সবার সবকিছু হয়। । যেমন আছ তেমন থাকো প্লিজ। আবার দেশের বাইরে যাব। রিলেটিভরা আবার নতুন আগ্রহে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করবে কবে তারা নতুন খবর পাবে? এসব আর ভালাে লাগে না। সাে প্লিজ স্টপ নাও।"