নজরুল ইসলামের প্রলয়-শিখা' কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৩৩৭ অর্থাৎ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে। শিশির কর জানিয়েছেন : | ‘প্রলয়-শিখা'র প্রথম সংস্করণ ছাপা হয় মহামায়া প্রেস (১৯৩ কর্নওয়ালিস স্ট্রিট কলকাতা) থেকে প্রকাশিত হয় ৫০-২ এ, মসজিদ বাড়ি স্ট্রিট, কলকাতা থেকে। বাজেয়াপ্ত আদেশের বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য সংকলিত । | ‘প্রলয়-শিখা' বাজেয়াপ্ত হয় ১৯৩১ সালে। সংশ্লিষ্ট সরকারি বিজ্ঞপ্তি বের হয় ১৯৩০ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর ।... বাজেয়াপ্ত আদেশ প্রত্যাহার হয় ১৯৪৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে (নং ৮৫ পিআর)। | প্রকাশক ছিলেন বর্মণ পাবলিশিং হাউসের ব্রজবিহারী বর্মণ। প্রকাশের পরপরই রাজদ্রোহের দায়ে অভিযুক্ত হন নজরুল (সংবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৩০ সালের ১২ ডিসেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায়)। বিচারে নজরুল ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। কবি হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন। ইতিমধ্যে গান্ধীআরউইন চুক্তির জন্য কবি মুক্তি পেয়ে যান; কিন্তু বইটি বাজেয়াপ্তই থেকে যায়। | দেশ বিভাগের পর প্রলয়-শিখার বাজেয়াপ্তির আদেশ প্রত্যাহৃত হয়। ১৯৪৯ সালে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশক মঈন উদ্দিন হােসায়ন তার “নিবেদন'-এ বলেন : বিপ্লবের অগ্নিযুগে 'প্রলয়-শিখা’র প্রথম আবির্ভাব, সেদিন সমগ্র ভারত বিপ্লবােনুখ। মহাত্মা গান্ধী প্রবর্তিত লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন সারা ভারতে বিদ্রোহ ও বিপ্লবের সূচনা করিয়াছে। দিকে দিকে গণজাগরনের অপূর্ব সাড়া পড়িয়াছে। ভারতবাসী তাহার দীর্ঘদিনের বন্ধন মােচন করিবার জন্য অস্থির হইয়া উঠিয়াছে। সমস্ত বাধা-বিপত্তি অগ্রাহ্য করিয়া সব অকৃত্যেভয়ে ঝাঁপাইয়া পড়িল মুক্তি সাধনার অগ্নিপরীক্ষায়। সেই সময়ে, গণজাগরণের এই পূণ্য মুহূর্তে প্রলয়-শিখা তাহার জ্বালাময়ী অনলবর্ষিণী বাণী প্রচার করিয়া বিপ্লবকে সার্থক করিতে চাহিয়াছিল।