প্রাথমিক আলােচনা ভূমিকা উপমহাদেশের ইতিহাসের সাথে সাথে বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চলের ইতিহাসও সুপ্রাচীন। বিশেষত বাংলাদেশের লালমাই পাহাড় অর্থল, হবিগঞ্জের টিলাভূমি অঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি প্রত্নস্থলে প্রাগৈতিহাসিক সময়কালের পাথরের হাতিয়ার এই ভূমিতে মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রাচীনত্বকে প্রমাণ করে (Roy & Ahsan 2000. 2004; Hoque 2002)। খ্রিস্টপূর্ব সময়কালে প্রাচীন বঙ্গভূমির মানুষ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন নমুনা কিছু সাহিত্যিক সূত্রাবলিতে বিচ্ছিন্নভাবে মিললেও বাংলাদেশে খ্রিস্টপূর্ব সময়কালের খুব কমই প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনা পাওয়া যায়। এর মধ্যে মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত ব্রাহ্মী হরফে লিখিত শিলালেথ, মহাস্থানে খননের মাধ্যমে প্রাপ্ত মৌর্য যুগের কিছু প্রত্নস্তু ও উত্তরাঞ্চলীয় কালাে মসৃণ মৃৎপাত্র এবং বাংলাদেশের মাগুরা, নরসিংদী ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রাপ্ত ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রার কথা উল্লেখ করা যায় (Rahman, Ahsan & Pathan 2003)। তবে খ্রিস্টীয় প্রথম শতক থেকেই বাংলাদেশ অঞ্চলে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনপ্রবাহের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এই অঞ্চলে বিশেষত ষান যুগের পরবর্তী গুপ্ত যুগের বেশ কিছু তন্ত্রশাসন ও তাদের প্রশাসনিক কাঠামােরও নমুনা পাওয়া যায়। দিনাজপুরের হিলি এলাকার গ্রৈাম মন্দির গুপ্ত যুগের একমাত্র স্থাপত্যিক নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন মন্দিরের সাক্ষ্য বহন করছে (হােসেন, ২০০১)। তবে গুপ্ত পরবর্তী কাল থেকেই বাংলাদেশে অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবেই মানব বসতির নমুনা পাওয়া যায়, যার প্রমাণ হিসেবে দেশের সর্বত্রই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের প্রাচুর্য লক্ষণীয়। বিশেষত পাল যুগের পর থেকে মুসলিমদের আগমনের পূর্ব পর্যন্ত এ দেশের মানব বসতির প্রমাণ হিসেবে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনের কিছুটা ঘাটতি থাকলেও পাল যুগের সময়কালীন বেশ কিছু প্রত্নস্থল, স্থাপত্যিক নিদর্শন এখনাে সগৌরবে টিকে আছে। পাশাপাশি প্রাচীন বাংলার সমতট অঞ্চলের দেব রাজবংশ ও চন্দ্র রাজবংশের সময়কালীন বেশ কিছু স্থাপত্যিক নিদর্শন ও তাম্রশাসনও তথাকার সময়ের বাংলার মানুষের সংস্কৃতিকে বুঝতে সাহায্য করে। পরবর্তীকালে সেন যুগের.. (সংক্ষিপ্ত……)