‘এ শহরে মসজিদ চারিদিকে রাতের প্রহরীর হুঁশিয়ারি থেমে যায়। আজান শুনতে পাই। ভেসে আসে বাতাসে ভর করে আমার কর্ণ কুহরে ভােরের আজান । অর্থ জানা আছে। তাই শুনি মনােযােগ দিয়ে হয়তাে সকল মােয়াজ্জিনের কণ্ঠ ছাপিয়ে কানে আসে এক সুমিষ্ট ধ্বনি। ‘হাইয়া আলাচ্ছালা-হাইয়া আলাচ্ছালা হাইয়া আলাল ফালা-হাইয়া আলাল ফালা এদিকে মন আমার দুই দিকের টানে, ঘুম পূর্ণ হয়নি থাকি আরও কিছুক্ষণ অলস ভঙ্গিতে বালিশ বিছানা।। ঘুম আসে না এপাশ ওপাশ করি। বেহেশতের সঞ্চয় খুব বেশি নাই ভয় করে ছটফট করি, আমাকে নিয়ে জমেছে খেলা। বেহেশতে গেলে হুর পাবি। আরাে কতাে মজার খাবার। আর দোজখ খুব ভয়ঙ্কর জায়গারে কঠিন আজাবের জাহান্নাম। শয়তানে আর মুয়াজ্জিনে করে টানাটানি এমনি প্রতিদিন সুবহে সাদিকের কালে। আজান তাে শেষ । শয়তান আর শয়তানি দুইজন চেপে ধরে চোখে ঘুম আর শরীরে আরাম আরাম। আর ভিতরে জ্ঞানীগুণীর কথার অনুরণন বাবা মায়ের কথা শুনতে পাই, ওঠো বাবা আজান হইছে নামাজ পড়াে। তারপর! একি আমি এভাবে পড়ে আছি কেনাে? এক মুহূর্তকাল ভাবনায় ফয়সালা আসে। পাক পবিত্র ফরজ কাজ ওজু করে নিই, দাঁড়াই জায়নামাজের পরে। আকামত দিই জোরে শব্দ করে। যেনাে সকলের কানে পৌছে যায়। শ্রেষ্ঠ সে ধ্বনি। পরম আশ্রয় সকল মানুষের জন্যে। আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার। সময়ের ঊষাকালে দিনের শুরু আবার অস্তাচলে আন্ধারের হাতছানি পাড়ার মসজিদ থেকে আওয়াজ আসে। প্রায় প্রতিদিন মাইক্রোফোনের ধ্বনি, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন একজন কেউ চলে গেছেন স্টেশন ছেড়ে আর কোনােদিন ফিরে আসবেননা জানি। আমারও এই স্টেশন ছাড়া হবে, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন' আত্মীয় স্বজন পাড়া পড়শী শুনবে সকলে দূরের আসরে পাঠকের কানে পৌঁছে যাবে শুধু আমি তখন তােমাদের কাছে নাই। দূরে এক নয়া স্টেশনে বিচারের কাঠগড়ায় হবে ন্যায় বিচার । নামাজ আর আমলে কপালে জান্নাত আর মিথ্যার বেসাতিতে জাহান্নাম।। বড় ইচ্ছে করে আমার বিদায়ের কালে। যাই যেনাে নামাজ আদায় করে। আর মুখে অন্তরে জপি আস্তাগফিরুল্লাহ।