নিঝুম রাত্রী। পিচ ঢালা রাস্তা। দানবের মত এগিয়ে চলছে সি.আই.ডি'র দুটো গাড়ী। উড়ন্ত গতিতে চলছে গাড়ী দুখানা। সামনে মিনিবাস ধরনের মাইক্রো, ছাদে কেরিয়ার। আর সেখানে রাখা আছে বড় বড় ড্যাগ, কড়াই, প্লেটের স্তুপ ইত্যাদি। পেছনে ছুটছে বাস। রাত্রির অন্ধকারের বুকে উজ্জ্বল আলাের ফোয়ারা ফেলে এগিয়ে চলছে গাড়ী দুটো। মাইক্রোতে আছেন কমিশনার কামরুল ইসলাম সহ এগারজন অফিসার, পেছনের বাসে তাদের পরিবারবর্গ, আয়া, পিয়ন। সি.আই.ডি'র এই চৌকস দলের গন্তব্য সুন্দরবন। তিন দিনের পিকনিক টুর। অফিসারদের চোখে মুখে প্রশান্তির ছায়া। বহুদিন পর ছুটির আমেঢ়ে। তিন দিনের অবকাশ। গাড়ীতে কেউ ঘুমুচ্ছে। কেউ কেউ খােশ-গল্প করছে। কমিশনার কামরুল ইসলামের ঢুলু ঢুলু চোখ। তার পাশে বসা বিপ্লব হাসান। কোলের উপর একটা ফাইল, তার উপর বাংলাদেশের ম্যাপ, ভাজ করা। খুলনা বিভাগের এলাকাগুলাে গভীর মনােযােগের সাথে। লক্ষ্য করছেন। রাত আড়াইটা বাজে। তাদের গাড়ী ফরিদপুর মােড় হয়ে মধুখালী পার হচ্ছে। সামনে কামার খালী ঘাট। ফেরি পারাপার। রাস্তার দু'ধারের উঁচু উঁচু গাছগুলাে দৈত্যের মত পেছন দিকে দৌড়াচ্ছে। কাচের জানালা দিয়ে গভীর মনােযােগের সাথে সেগুলি লক্ষ্য করছেন সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ খান। অল্পক্ষণ পরপর নাইট কোচ ও মালভর্তি ট্রাক লরীকে পাশ কাটিয়ে দ্রুতবেগে এগিয়ে যাচ্ছে গাড়ী দুটো। কমিশনারের পেছনের সীটে ইন্সপেক্টর আসিফসহ কয়েক জনের মৃদু নাক ডাকার শব্দ হলেও একেবারে পেছনের সীটে সাব ইন্সপেক্টর দস্তগীরের বিশাল হা থেকে নির্গত জলহস্তীর গর্জনে অনেকেই বিরক্ত হচ্ছেন।