এক সম্ভ্রান্ত সংগীত পরিবারে ড. মৃদুলকান্তি চক্রবর্তীর জন্ম সুনামগঞ্জে ১৯৫৫ সালে। বাবা মনােরঞ্জন চক্রবর্তী ভালাে বাঁশি বাজাতেন, মা দীপালী চক্রবর্তী এস্রাজ ও সেতার বাজাতেন। শৈশব থেকেই সাংগীতিক পরিবেশে মৃদুলকান্তি বেড়ে ওঠেন। সংগীতে হাতেখড়ি হয়। বড় বােন রত্না ভট্টাচার্যের কাছে। পরে শান্তিনিকেতনে রাগসংগীত ও রবীন্দ্রসংগীতে শিক্ষা লাভ করেন— অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায় (বিষ্ণুপুর ঘরানা), শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিল্পী নীলিমা সেন ও অধ্যাপক মােহন সিং খাঙ্গোরার কাছে। ১৯৭২ সালে প্রথম বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের একজন নিয়মিত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন। পরবর্তীকালে ১৯৭৬ সালে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মনােনীত হয়ে বৃত্তি লাভ করে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন থেকে যথাক্রমে বি. মিউজ ও এম. মিউজ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। পরে, সংগীত বিষয়ে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন এই বিশ্বভারতী থেকে ১৯৯৪ সালে। দীর্ঘদিন ধরে ড. মৃদুলকান্তি বাংলা সংগীতের নানা দিক নিয়ে গবেষণারত। দেশে-বিদেশে তাঁর প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রশংসিত ও সমাদৃত সুধীজনের কাছে। জার্মানির Free University of Berlin-এ Prof. Josef Kuckertz-এর অধীনে গবেষণা করেন ‘Sources of Rabindranath Tagore Songs in Western Music' facil ১৯৮৩ সাল থেকে বাংলাদেশ বেতার ঢাকা এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত ও লােকসংগীত বিশেষত হাসন রাজার গান গেয়ে। আসছেন। সংগীত বিষয়ে তার অন্যতম অবদান হল লােক বাদ্যযন্ত্র ‘দোতারা’কে পরিমার্জন করে নতুন উদ্ভাবন করেছেন ‘সুরশ্রী’ বাদ্যযন্ত্র। টেলিভিশনে ‘সুরশ্রী’ বাজিয়েছেন এবং বিদেশেও এই যন্ত্রটি নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। জার্মানির বার্লিন, লন্ডন ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে লেকচার ডেমনস্ট্রেশন ও সংগীত পরিবেশন করেছেন। সংগীত বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন ছায়ানট, বেণুকা, সংগীতভবন ও সুরের ধারায়। ড. মৃদুলকান্তি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিয়ােজিত এবং নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।