লুৎফর রহমান রুনো জীবন ও জগতের কোনাে কিছুরই কোনাে পরিচয় সঠিক নয়, চূড়ান্ত নয়। এ মুহূর্তে আমার পরিচয় আমার চিন্তা, আদর্শিক অবস্থান, কৃত্য কিংবা এই রচনাকৃতির মধ্যে বিধৃত। পূর্ববর্তী ‘নিঃস্বর নারী ও নারীচেতনাবাদ’ বইটিতে, যা আমার প্রথম কৃতি, তাতে জন্মস্থান, ঠিকানা ইত্যাদিও বর্ণিত ছিলাে। এখন তা ছেলেমানুষী মনে হচ্ছে। কেনােনা ঐ বইটি যখন লেখার চেষ্টা করছিলাম তখন আমি বাস করতাম ধনী লােকদের পাশাপাশি, তাদের শুভদৃষ্টির সীমানায়। বৈদ্যুতিক সাদা আলাের নিচে দামি টেবিলের ওপর লেখার কাজ সেরেছিলাম। এ বই যখন লিখছিলাম, আমি একান্ত একাকী। স্বজনহীন, দিনে সূর্যের আলাে, রাতে কেরােসিনের অস্পষ্ট বাতির নিচে চাটাইয়ে বসে বসে লিখতে হয়েছে রাতে। তথাকথিত স্বজনরা নেই, দারিদ্রের সাথে তুমুল লড়ে চলেছি দেশের মধ্যবর্তী একটি জেলার দরিদ্র গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে। কোনটি আমার প্রকৃত পরিচয়? জীবন নিরন্তর সংঘর্ষর্মান, পরিবর্তমান। চেতনাপ্রবাহে অবিরল যুক্ত হচ্ছে। অভিজ্ঞতার বিচিত্র অর্জন। আর সত্তা সতত সীমান্তহীন সম্ভাবনার দিকে সকল প্রকার অবরুদ্ধতা ভাঙতে ও বিনির্মাণে অবিচল।। স্মরণ করি মরিস ব্লশাের অসামান্য উক্তি : Writing Changes us, we do not write according to who we are; according to what we write.