পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৫ই জানুয়ারী রাতে জন্ম নেয়া মেয়েটির নাম চুমকি। পরিবার-পরিজন সবার কাছে আমি চুমকি নামেই পরিচিত। জন্মের সময় অনেক কালক্ষেপণ হয়েছিল, সবাই অনেক চমকে গিয়েছিল। আর রুয়েটে পড়াশোনা করার সময় আমার মায়ের বান্ধবীর নাম ছিল চুমকি। তাই ‘চুমকি’ এই নাম আমার দিদা রেখেছিল, সেই মানুষটি আর আমাদের মাঝে নেই। আমি ছোটবেলা থেকেই সিনেমা দেখার খুব পোকা ছিলাম। তখনকার সময়ে চার বছর বয়স থেকে ভিসিআরে প্রতি রাতে বাবা আর বোনের সাথে বাংলা সিনেমা দেখতাম। আমার প্রিয় নায়িকা ছিল শতাব্দী রায়। তাই স্কুলে প্রথম যখন আমার নাম জিজ্ঞেস করে, আমি আমার নাম বলেছিলাম শতাব্দী। সেই থেকে আমার সার্টিফিকেট নাম শতাব্দী ঘোষ। আমার বাবা- ডাঃ দীপক কুমার ঘোষ, শিশু বিশেষজ্ঞ, সরকারি চাকুরিজীবী ছিলেন। এখন অবসরে আছেন। মা- মিতা ঘোষ, সুনিপনা একজন গৃহিণী। স্কুল-কলেজ জীবন সবকিছু কেটেছে পাবনা শহরেই। স্কুলজীবনে প্রতি বছরে বার্ষিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় থাকার কারণে বই পুরস্কার পেতাম। তখন থেকেই পাঠ্য বই-খাতার বাহিরে অন্য বই পড়ার নেশা হয়। দশম শ্রেনীতে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিলাম, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসমগ্র। উপন্যাসের ভাষা এত কঠিন ছিল, বোঝার জন্য দুইবার পড়েছিলাম। মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন কবিতা লেখা শুরু করি। যা লিখতাম, কখনো প্রকাশ্যে আনা হয়নি। এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করার পর গাইনি এন্ড অবস বিষয়ে এক বছর ট্রেনিং করেছি এবং এরপর ফার্মাকোলজি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী সম্পন্ন করেছি। পেশায় চিকিৎসক, বর্তমানে আমি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগে শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত আছি। শিক্ষকতার পাশাপাশি অসংখ্য কবিতা, গল্প ও ছোটগল্প লিখেছি; যা প্রথম ২০২১ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ইতিমধ্যে আমার লেখা গল্পগুলোর মধ্যে “পারমিতার মা” এবং “আঠারো বছর পরে” পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়াও আমি কবিতা আবৃত্তির সাথে যুক্ত আছি। অনলাইনে লেখালেখি করি, ছবি তুলতে খুব ভালোবাসি। আর আমার ছোট্ট দুই ছেলে-মেয়ে উদ্দীপন আর ঊশষীর সাথে সময় কাটাতে ভালোবাসি। ২০২২ সালের বইমেলায় আমার লেখা প্রথম সামাজিক থ্রিলার উপন্যাস “রুপরেখার চুপকথা” নামে প্রকাশিত হয়। বইটির পাঠকপ্রিয়তা আমাকে লেখালিখির জগতে বেশি অনুপ্রেরণা যোগায়। এছাড়াও ২০২২ সালের বইমেলায় আরো দুইটি সংকলন ‘গল্পের বাক্স’ এবং ‘মুখোশ-একটি নদীর নাম’– এ আমার লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এরপর আরো বেশ কয়েকটি সংকলনে কবিতা আর গল্প প্রকাশিত হয়েছে। ‘মুখোশের আড়ালে’ হতে চলেছে আমার লেখা দ্বিতীয় থ্রিলার উপন্যাস। এই উপন্যাসটি যেন পাঠক হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারে, সবাই আমার জন্য প্রার্থনা করবেন।