সোনামণিদের সুন্দর নাম (মুসলিম শিশুর নামের বই) -বইয়ের ভূমিকা
নাম হচ্ছে নামকরণকৃত বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত । এটা এমন এক শিরােনাম, যা একজনকে অন্যজন থেকে পৃথক করে। মানুষের স্বভাব নামকরণের কার্যক্রম চালু করেছে । নামের গুরুত্ব প্রত্যেক বিবেকবান মাত্রই সন্দেহাতীতভাবে স্বীকার করেন। কারণ, নামের মাধ্যমে শিশু পরিচিত হয়; তার ভাই ও অন্যান্যদের থেকে পৃথক হয় এবং তার জন্য ও পরবর্তী বংশধরের জুন্য হয় নিশানা। মানুষ শেষ হয়ে যায় কিন্তু নাম অবশিষ্ট থাকে। শব্দটি ' শব্দ থেকে নির্গত, অর্থ- (উচ্চতা, মর্যাদা) অথবা ৫; শব্দ থেকে নির্গত, অর্থ- ae (চিহ্ন; নিদর্শন; লক্ষণ)। প্রত্যেকটি অর্থই নবজাতকের নামকরণের গুরুত্ব বহন করে । বর্তমান যুগে কেহ কেহ বলেন, নাম একটা হলেই হয়, নামে কি আসে যায় । শেকসপীয়ার থেকে তারা উদ্ধৃতি করেন :
What's in a name? That which we call a rose
By any other name would smell as sweet.
নামের মধ্যে কি নিহিত রয়েছে? গােলাপকে যে নামেই ডাকা হয় না কেন তা সুগন্ধ বিতরণ করবেই।
তবে কবি শেকসপীয়ারের উক্তির অনুকরণে বাঙ্গালী কবি সুনির্মল বসু তার কানাকড়ি কবিতায় লিখেছেন :
“নেড়ি তাের নেড়ি নামে কিবা পরিতাপ”
গােলাপে যে নামে ডাকে তবুও সে গােলাপ।
নামের মধ্যে যদি কোন কল্যাণ নিহিত না-ই থাকত তাহলে তাে কবি তার সুনির্মল নামকে পাল্টে শুধু শেষাক্ষরদ্বয়ে নাম রাখলেই তাে পারতেন। কিন্তু তিনি তা অবলম্বন করেন নি। কেননা নাম শুধু নাম নয়, তা অনেক কিছু। আদর্শ ও সুন্দর নামের মধ্যে অনেক কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
কুরআন ও হাদীস পর্যালােচনা করে জানা যায় ইসলামে নাম অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
পিতার নিকট নামের গুরুত্ব সুস্পষ্ট। এর থেকে তার দ্বীন-ধর্ম ও জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়। কারণ, আপনি শুনেছেন কি, খ্রিস্টান অথবা ইহুদীরা তাদের সন্তানদের নাম মুহাম্মদ আলাদা রাখে? অথবা কোন পথভ্রষ্ট ছাড়া মুসলমানরা তাদের সন্তানদের নাম লাত-ওজ্জা রাখে?
নামের মধ্য থেকেই পিতার সাথে ছেলের বন্ধন তৈরি হয়। পিতা ও পরিবারপরিজন তাদের সন্তানদের এমন নামে ডাকে, যে নামটি তারা নির্বাচন করেছে । পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নামের ব্যবহার বেশি। প্রাচীনযুগে বলা হত:
“তােমার নাম থেকেই আমি তােমার পিতাকে চিনি।” (আবু যায়দ, তাসমিয়াতুল মাওলুদ)। শিশুর জন্মের পর তার জন্য একটি সুন্দর ইসলামী নাম রাখা প্রত্যেক মুসলিম পিতা-মাতার কর্তব্য। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলিমদের মাঝেও ইসলামী সংস্কৃতি ও মুসলিম ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে শিশুর নাম নির্বাচন করার আগ্রহ দেখা যায়। এজন্য তাঁরা নবজাতকের নাম নির্বাচনে পরিচিত আলেম-ওলামাদের শরণাপন্ন হন। তবে সত্যি কথা বলতে কী এ বিষয়ে আমাদের পড়াশুনা একেবারে অপ্রতুল। তাই ইসলামী নাম রাখার আগ্রহ থাকার পরও অজ্ঞতাবশত আমরা এমনসব নাম নির্বাচন করে ফেলি যেগুলাে আদৌ ইসলামী নামের আওতাভুক্ত নয়। শব্দটি আরবী অথবা কুরআনের শব্দ হলেই নামটি ইসলামী হবে তাতাে নয়। কুরআনে তাে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম কাফেরদের নাম যেমন- ইবলিস, ফেরাউন, হামান, কারুন, আবু লাহাব, ইত্যাদি উল্লেখ আছে; তাই বলে কী এসব নামে নাম বা উপনাম রাখা সমীচীন হবে!?
ব্যক্তির নাম তার স্বভাব চরিত্রের ওপর ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে বর্ণিত আছে। শাইখ বকর আবু যায়েদ বলেন, “ঘটনাক্রমে দেখা যায় ব্যক্তির নামের সাথে তার স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের মিল থাকে। এটাই আল্লাহ তা'আলার হেকমতের দাবী। যে ব্যক্তির নামের অর্থে চপলতা রয়েছে তার চরিত্রেও চপলতা পাওয়া যায়। যার নামের মধ্যে গাম্ভীর্যতা আছে তার চরিত্রে গাম্ভীর্যতা পাওয়া যায়। খারাপ নামের অধিকারী লােকের চরিত্রও খারাপ হয়ে থাকে। ভাল নামের অধিকারী ব্যক্তির চরিত্রও ভাল হয়ে থাকে।”
(তুহফাতুল মাওদুদ, পৃষ্ঠা-১/১২১)
রাসূল সাদা কারাে ভাল নাম শুনে আশাবাদী হতেন। হুদাইবিয়ার সন্ধিকালে মুসলিম ও কাফের দুইপক্ষের মধ্যে টানাপােড়নের এক পর্যায়ে আলােচনার জন্য কাফেরদের প্রতিনিধি হয়ে সুহাইল ইবনে আমর নামে এক ব্যক্তি এগিয়ে এল তখন রাসূল বা সুহাইল নামে আশাবাদী হয়ে বলেন: “সুহাইল তােমাদের জন্য সহজ করে দিতে এসেছেন।” (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং- ৯১৫)।
সুহাইল শব্দটি সাহলুন (সহজ) শব্দের ক্ষুদ্রতানির্দেশক রূপ। যার অর্থ হচ্ছেঅতিশয় সহজকারী। বিভিন্ন কবিলার ভাল অর্থবােধক নামে রাসূল সাঃ আশাবাদী হওয়ার নজির আছে। তিনি বলেছেন: “গিফার (ক্ষমা করা) কবিলা তথা গােত্রের লােকদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিন। আসলাম (শান্তিময়) কবিলা বা গােত্রের লােকদেরকে আল্লাহ শান্তি দিন।” (সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৯৫১)
*** বিষয়ধারা ***
• ইসলামের দৃষ্টিকোণে শিশু
• নবজাতকের প্রতি করণীয় বিষয়াদি
• ইসলামের নামে বিধি-বিধান
• যেসব নাম রাখা উত্তম
• যেসব নাম রাখা হারাম
• যে সকল নাম রাখা মাকরূহ
• সোনামনিদের সুন্দর নাম
• বাংলা বর্ণক্রমানুসারে ছেলেদের নাম
• বাংলা বর্ণক্রমানুসারে মেয়েদের নাম
ড.মুহাম্মদ আবদুল লতীফ এর সোনামণিদের সুন্দর নাম এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 150.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Sonamonidar Sundor Nam by D. Muhammad Abdul Latifis now available in boiferry for only 150.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.