সােমেন চন্দ জন্মের পর থেকেই পুরানাে ঢাকায় বেড়ে উঠেছিলেন। পুরানাে ঢাকা মানে আজকের গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি, মিরপুর, উত্তরাসহ যে-ঢাকা, তা নয়। বর্তমানের তুলনায় পুরানাে ঢাকার আয়তন ছােটোই ছিল। লােকসংখ্যার বাস তখন দুই লক্ষের নিচে ছিল। আমাদের বাংলাদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিক হায়াৎ মামুদের একটি লেখায় পুরানাে ঢাকার আকার-আয়তন সম্পর্কে জেনেছিলাম। তার বর্ণনা অনুসারে বলা যায়—ঢাকা একসময় ছিল ছােট্টশহর। দক্ষিণ সীমানা ছিল বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত। গেণ্ডারিয়া ছিল এর পূর্ব সীমানা। উত্তরে গুলিস্তান। আর পশ্চিমে লালবাগ এলাকা। গুলিস্তানের পরই পল্টন এলাকা। অথচ পল্টন পর্যন্তও তখন শহর বাড়ে নি। মগবাজার, রামপুরা, ধানমণ্ডি এগুলাে ছিল গ্রাম। পল্টন এলাকার জায়গা তখনও ফাঁকা ছিল, এলাকাটি ছিল মাটি আর বনবাদাড়পূর্ণ। ধানের জমির উপর দিয়ে তৈরি নতুন সড়ক ধরে নটরডেম কলেজে যেতে হতাে। গােপীবাগ এলাকাও তখন ফাকা ছিল। ধূ-ধূ করত ফাঁকা জায়গা। গােপীবাগ থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল আখক্ষেতে। তার ডানদিকটায় ডাঙা উঁচুজমি, সেটাও ফাকা। দুয়েকটা ছিল পুকুর। ঘরবাড়িও ছিটানাে ছিল কয়েকটা। আর এগুলাে পার হয়ে গেলে একদম দক্ষিণের শেষপ্রান্তে ছিল রােজ গার্ডেন। প্রাসাদবাড়ি এটি। বর্তমানের কমলাপুর রেলস্টেশন ছিল না। রেলস্টেশন ছিল ফুলবাড়িয়া। ওই এলাকার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে ওখানে এখন রেলভবন করা হয়েছে। বর্তমান বঙ্গবাজারের কাছেই রয়েছে ভবনটি।