হুমায়ূন আহমেদ এর সে ও নর্তকী এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 160.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। She O Nortoki by Humayun Ahmedis now available in boiferry for only 160.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
একসাথে কেনেন
হুমায়ূন আহমেদ এর সে ও নর্তকী এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 160.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। She O Nortoki by Humayun Ahmedis now available in boiferry for only 160.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন | হার্ডকভার | ১২৮ পাতা |
---|---|
প্রথম প্রকাশ | 2015-02-02 |
প্রকাশনী | অন্বেষা প্রকাশন |
ISBN: | 9847011600741 |
ভাষা | বাংলা |
ক্রেতার পর্যালোচনা
1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা
-
পর্যালোচনা লিখেছেন 'Md Mohiuddin Nabil'
জগতে কোন কিছুর পরিপূর্ণ মূল্যয়ন আমরা করতে পারিনা বলেই রেটিং ৯/১০। অন্যথায় ১০/১০ ই দিতাম আমি। হুমায়ূন আহমেদের ৫০ উর্ধ্ব উপন্যাস পড়েছি, কিন্তু কখনো কোন বইয়ের রিভিউ লিখিনি। আমার মনে হয় উনার লেখাগুলা এত বেশি নিখুঁত আর জীবন্ত যে, তার যথাযথ তথ্য তুলে ধরার সামর্থ্য আমার নেই। উপন্যাসটা শুরু গল্পের নায়কা স্বাতীর জন্মদিনের গল্প দিয়ে। যদিও আমি স্বাতীতে এই গল্পের নায়কা মানতে নারাজ। স্বাতীর পিতা নাজমুল হক একজন রির্টায়েড জর্জ ও মাতা রওশন আরা একজন সাধরণ গৃহিনী। নাজমুল হকের সুখি পরিবাব। কিন্তু স্বাতী মনে করে তাদের পরিবারের এই সুখটুকু কেবল অভিনয়। বিয়ের আগে স্বাতীর মা রওশন আরার একটা অ্যাবরশান হয়েছিল। তার এই অন্যায় লোক লজ্জা থেকে বাঁচাতেই নাজমুল হকের নিকট এই তথ্য গোপন করে বিবাহ হয়। কিন্তু বিয়ের পর নাজমুল হক এই তথ্য জানার পর রওশন আরার এই অন্যায় লোকলজ্জার ভয়ে প্রকাশ করতে পারিনি আবার মেনেও নিতে পারিনি। তাই তাদের পরিবারে ভালো থাকার এরূপ অভিনয় চলছে। পুরো গল্পটি রচিত হয়েছে স্বাতীর নানাবিদ সমস্যার বিবরণ নিয়ে। স্বাতী ভুল করে বিপত্নীক একটা মানুষের সাথে মেলামেশা শুরু করেছে। খুব বিশ্রী রকমের মেলামেলা। এই মেলামেশা মূলত সে তার মাকে শাস্তি দেওয়া জন্য করেছে। যদিও হাসনাতের সঙ্গে স্বাতীর পরিচয়টা খুব ইন্টারেস্টিং। যার সূত্র ছিল হাসনাতের মেয়ে জাহিন। আর জাহিনই হলো এই গল্পের প্রাণ। যার বয়স ৯ বছর এবং সে ক্লাস ৪ এ পড়ে। হাসনাত সাহেব একজন আর্টিস্ট। যে খুব ভালো ছবি আকঁকে পারে। হাসনাত বাস্তব জীবনে মানুষ ধরে রাখার ক্ষমতা নেই বলেই ছবির মাধ্যমে তাদের ধরে রাখে। হাসনাত স্ত্রী রুবী (জাহিনের মা) কে মৃত দাবী করলেও মূলত রুবি জাহিন আর হাসনাতকে পেলে রেখে অন্যজনের সাথে পালিয়ে যায়। রুবি এবং স্বাতীর মধ্যে মিল হলো তারা দুজনই খুব ভালো ড্যান্সার। হাসনাত স্বাতীর একটি নোংরা ছবি এঁকেছিল যা দেশের শ্রেষ্ঠ ছবির একটি বলে মনে করে স্বাতী। স্বাতীর একমাত্র বন্ধুবী লিলি। জগতের সবাই তাকে পরিত্যাগ করলেও লিলি স্বাতীকে পরিত্যাগ করবেনা এটা তার বিশ্বাস। লিলি কখনো মিথ্যা বলেনা। হাসনাতের সাথে স্বাতীর বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও স্বাতী ইচ্ছে করেই বিয়েটা করেনি। কিন্তু জাহিনকে সে খুব পছন্দ করতো। স্বাতী মনে করে সে হাসনাতের নয় জাহিনের প্রেমে পড়েছে বলেই তার বাবার সঙ্গে মিশেছে। লিলির সাথে জাহিন আর হাসনাতের পরিচয় স্বাতীর মাধ্যমে হলেও বার কয়েকের দেখায় লিলি জাহিনকে খুব ভালোবেসে ফেলে এবং জাহিনও লিলিকে। শেষ পর্যন্ত স্বাতী তার বিশ্রী ভালোবাসার ফসল জন্ম দেওয়া চিন্তায়, মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। নিজের মাকে শাস্তি দিতে গিয়ে স্বাতী নিজেই তীব্র যন্ত্রনামূলক শাস্তির কবলে পড়ে। লিলির বাবা লিলিকে জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দিলেও লিলি তার কোন প্রতিবাদ করেনি। হুমায়ূন আহমেদ তার গল্পের ছোট ছোট চরিত্রগুলো, যেমন লিলির বাবা নেয়ামত, মা ফরিদা, বড় চাচা আজহার উদ্দিন, ছোট চাচা জাহেদুর রহমানসহ নীপা, রুমু-ঝমুর মাঝেও এত সুন্দর শিল্পশৈলীর পরিচয় দেয়েছেন যে, গল্পের প্রতিটি চরিত্রকেই জীবন্ত করে তুছেছেল। গল্পের শেষ অংশে, জাহিনকে তার মা আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। জাহিন চলে যাওয়ার সময় তার বাবা তার জন্য একটি ছবি এঁকে দেয়। একদিন হাসনাত ভুল বশতঃ মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে ভুলে যায়। ৩ ঘন্টা দেরীতে মনে পড়লে যখন জাহিনকে আনতে যায়, জাহিন সেদিন যেভাবে কান্না করে তার বাবার দিকে ছুটে আসছিল!! ছবিতে তার স্বরূপই তুলে ধরেছেন হাসনাত। প্লেন ছেড়ে যাওয়ার পর যখন জাহিন ছবিটি খুলে দেখলো, সে তখন কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। জাহিন প্লেনের জানালা দিয়ে তাকাল। তার খুব ইচ্ছে করছে অনেক দূর থেকে তার বাবাকে একটু দেখতে। কিন্তু প্লেন আকাশে উঠে গেছে। সাদা মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়েছে নিচের পৃথিবী। জাহিন কাঁদছে। কাঁদছে ফ্রেমে বন্দি স্কুলের পোশাক পরা বাচ্চা মেয়েটিও।
June 29, 2022
হুমায়ূন আহমেদ (Humayun Ahmed)
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে। এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে। অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো। এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি। রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস। শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা। হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।