ভৌগােলিকভাবে এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান। একই সময়ে বৃহত্তর ভূ-রাজনীতি দৃষ্টিতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ। ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলােমিটার আয়তনের দেশে ২০১৫ সালে এসে জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি, যার শতকরা প্রায় ৮৮ ভাগ মুসলমান, ৯-১০ ভাগ হিন্দু এবং বাকি অংশ অন্যান্য ধর্মালম্বী। জাতিগতভাবে প্রায় ৯৮ ভাগ বাঙালি । শিক্ষার হার প্রায় ৬৮ ভাগ । মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭০ বছর । মাথাপিছু আয় তেরশ ডলারের উর্ধ্বে। দারিদ্রের হার ২৪ ভাগের নিচে, অতি দরিদ্র ১১ ভাগের কাছাকাছি। স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, শিশুমৃত্যুর হারসহ অনেকগুলাে সামাজিক উন্নয়নে সূচকে দক্ষিণ-এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ভারতেরও ওপরে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। বিশ্বের প্রায় দুশাে দেশের ভেতরে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৪তম। ইতিমধ্যে স্বল্প আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে । গত ৬-৭ বছর ধরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে গতি আছে তা বজায় থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে পূর্ণ মধ্য আয় এবং ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সব নামকরা গবেষণা ও জরিপকারী প্রতিষ্ঠাগুলাে আগামী দিনের জন্য বাংলাদেশকে দেখছেন অপার সম্ভাবনাময় একটা দেশ হিসেবে। জাতিগতভাবে প্রায় একক বাঙালি জাতিসত্তার কারণে বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতাে জাতিগত সংঘাত-সংঘর্ষের সংকট বাংলাদেশে নেই । এক্ষেত্রে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাংলাদেশের জন্য একটা মাইলফলক হয়ে আছে। হাজার বছরের সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি, দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবেল ইতিহাস ও উজ্জ্বল্য বাংলাদেশের সহজাত শক্তির সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা, ধারক এবং বাহক। পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসন, শােষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৯৭১ সালে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা চালায়, শহীদ হয় ৩০ লাখ