| ৭ই নভেম্বর আমাদের জন্য একটি ছুটির দিন, কিন্তু ওই দিনটির যিনি নায়ক ছিলেন ১৯৭৫-এ, তিনি কখনাে ছুটি নেননি। ৭ই নভেম্বর তার জন্য ছিল একটি অত্যন্ত ব্যস্ততার দিন, সাধারণ কর্মতৎপরতার নয়, বিপ্লবী অভ্যুত্থানের। কি চেয়েছিলেন | তিনি? একটি সরকারের পরিবর্তন নয়, বিপ্লবী সরকারের প্রতিষ্ঠা? না, তা মােটেই নয়। তিনি চেয়েছিলেন সমাজ-কাঠামােতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ যুগে যথার্থ বিপ্লবী মানেই কোনাে না কোনােভাবে মার্কস-প্রভাবিত, না হয়ে উপায় নেই; কর্নেল তাহেরও তাই ছিলেন, তিনিও চেয়েছিলেন, যেমন মার্কস-এঙ্গেলস চেয়েছেন, পুরনাে সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ গড়বেন। কিন্তু সমাজ ভাঙা যায় না রাষ্ট্রের গায়ে হস্তক্ষেপ না করে। ১৮৪৮-এ ফরাসী দেশে গৃহযুদ্ধের ব্যর্থতার পর মার্কস তাঁর লুই বােনাপার্তের অষ্টাদশ ক্ৰমেয়ারে’ লিখেছেন, “এযাবৎকাল বিপ্লবগুলাে চেষ্টা করেছে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নিখুঁত করতে, কর্তব্য ছিল ব্যবস্থাটিকে চূর্ণবিচুর্ণ করা। পাকিস্তান আমলে তাহের রাষ্ট্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে তিনি বন্দীশালা বলেই মনে করতেন, যে কথা তিনি তাঁকে বিচার করার জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের সামনে ঢাকা জেলে বন্দী অবস্থায় বলেছেন। “জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে বাঙালিরা নিজেদের জন্য একটা স্বাধীন রাষ্ট্র গড়তে পারে না- এ ধারণাটাই আমি কখনাে মেনে নিতে পারিনি”লেছিলেন তিনি।