আমাদের নারীরা একত্র হলে তাদের গল্পের প্রধান বিষয়বস্তু হয় নাটক-সিনেমা, হিন্দি সিরিয়ালের কার কোন চরিত্র পছন্দ, কোন পোশাকগুলো ভালো লেগেছে, কার ঘরে কেমন ফার্নিচার-স্বর্ণালংকার আছে, কার স্বামীরা কেমন, কে কোন কোন দেশ ঘুরতে গিয়েছিল, কার ঘরে কী নেই, কে কোন পেরেশানিতে আছে, ইত্যাদি। কথায় আছে, “আমাদের নারীরা একশত টেনশন নিয়ে ঘুমোতে যায়, একটা নিজের, বাকী নিরানব্বইটা পাড়া-প্রতিবেশীর।” আর পরনিন্দা এবং গীবতচর্চা এখন মহামারীর পর্যায়ে। আজকের নারীরা যতজন নায়ক-নায়িকা-মডেলদের চেনে, মহীয়সী নারীদের তার সিকিভাগও চেনে না। এরা তথাকথিত মডেলদের মতো নিজের জীবনকে রঙিন করে সাজাতে চায়, কিন্তু বাস্তব জীবনে সুখের লেশমাত্র নেই। মুক্ত চিন্তার নগ্ন চর্চা আর বাঁধাহীন ডানা মেলে উড়তে গিয়ে পারিবার গুলো আজ ভঙ্গুর। রঙিন স্বপ্নে বিভোর এই নারীদের কোলে তাই জন্ম নেয় না বিশুদ্ধ মানুষ। নিত্যদিনের খুন-ধর্ষণ-পরকীয়া এগুলোর চাক্ষুষ সাক্ষ্য বহন করে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় আমাদের পূর্বসূরি মহীয়সী নারীদের জীবন থেকে আলো গ্রহণ করে জীবনে এ পবিত্র আলো প্রতিফলিত করা।
দ্বীন পাবলিকেশনের অন্যতম উদ্দেশ্য পূর্ববর্তী মহীয়সী নারীদের জীবনী পাঠের মাধ্যমে আমাদের নারীদেরকে আলোকিত করা। এজন্য আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে উম্মুল মুমিনীন সিরিজ দিয়ে। উদ্দেশ্য; জান্নাতী এই নারীদের পরিচ্ছন্ন ও সুরভিত জীবনের মুহূর্তগুলো সরল ভঙ্গিমায় ফুটিয়ে তোলা। তাদের প্রাত্যহিক জীবনের গল্প, নবীজির সাথে মধুর খুনশুটি এবং আখিরাতমুখিতায় তাদের প্রতিযোগিতার কিরণ বর্ণের গাঁথুনিতে বিকীর্ণ করা। যেন এ কালের নারীরা এই আলোয় স্নাত হয়ে ঘরে দীপ্ত করতে পারে জান্নাতের নির্মল আলো।
ইমাম ইবনুল কাইয়ুম রহ. বলেন, ‘মেয়েরা পৃথিবীর অর্ধেক, বাকী অর্ধেকের জন্মও তারাই দেয়। ফলত, তারাই যেন পুরো পৃথিবী।’ কাজেই একজন নারী আসমানী শিক্ষায় সমৃদ্ধ হয়ে পুণ্যবতী হওয়া মানে পুরো পরিবারে পুণ্যের জোয়ার ওঠা। আর পাপের পথে হাঁটলে সমাজটা কেমন অপরিচ্ছন্ন আর বিদঘুটে হয়ে ওঠে, বর্তমান সময় এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
বলা হয়ে থাকে, মায়েরা হলো শিশুদের প্রথম শিক্ষক ও প্রথম বিদ্যালয়। একজন মা যদি আলোকিত না হন, সচেতন না হন, সন্তান বখে যেতে বাধ্য। একজন আলোকিত মা-ই পারেন শিশুর জন্ম থেকেই কুরআন-সুন্নাহর আলোয় আলোকিত করে একটা ভালো জাতি উপহার দিতে। এজন্য আমাদের নারীদের বেশি বেশি মহীয়সী নারীদের জীবনী জানা আবশ্যক।
এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা কাজ করেছি ৪০জন মহীয়সী নারীকে নিয়ে। তারা সকলেই ইতিহাসের স্বর্ণ শিখরে জায়গা করে নিতে পেরেছেন; তাদের আল্লাহর উপর ভরসা, কঠোর পরিশ্রম আর অদম্য ইচ্ছেশক্তি দিয়ে। তারা শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করেই বসে থাকেননি, তাদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য সব রকম প্রচেষ্টাই করেছেন। তাইতো আমরা দেখতে পাই তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন বীরযোদ্ধা, কেউ ছিলেন নার্স, কেউ ছিলেন ফকীহা-ইসলামী আইন বিশারদ, কেউ ছিলেন কবি। নিজেদের জীবন বিভিন্ন অঙ্গনে এগিয়ে গেলেও দ্বীনদারির প্রশ্নে সকলেই ছিলেন আপসহীন। সকলেই ছিলেন পুণ্যবতী, আল্লাহর জন্য নিবেদিতা। সকলেই ছিলেন এমন যে, সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছেন তবুও সংকল্প থেকে দূরে সরে যাননি।
এই বইয়ে যেমন আলোচিত হয়েছে তিন স্বর্ণযুগ স্পর্শ করা নারীদের চিত্র, তেমনি আলোচিত হয়েছে এই উপমহাদেশের মহীয়সী নারীদেরও গল্প। আশা করছি তাদের সংক্ষিপ্ত কিন্তু ঈমানদীপ্ত গল্পগুলো পড়ে আমাদের নারীরা পাথেয় সংগ্রহ করে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করতে পারবেন।
আরিফুল ইসলাম এর পুণ্যবতী মহীয়সী নারীদের জীবনের গল্প এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 161.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Punnyoboti Mohioshi Narider Jiboner Golpo by Ariful Islamis now available in boiferry for only 161.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.