Loading...

পুবের পূর্বপুরুষেরা (হার্ডকভার)

স্টক:

২৫২.০০ ১৮৯.০০

মেঘনাদের উত্তাল ঢেউয়ের মাঝ দিয়ে মাখনলালের নৌকা এগিয়ে যাচ্ছে। শম্বুক গতিতে। নৌকার এরূপ গতি মাখনলালের কাক্ষিত নয়। পালে হাওয়া না লাগলে, নদীতে জোয়ার না থাকলে শুধু মাঝি-মাল্লার পেশির জোরে নৌকায় কতটা আর গতি সঞ্চার করা যায়? লক্ষ্যা নদীতে সন্ধ্যা নামার আগে পৌছানাের পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দেয়া সম্ভব কি-না এবং সন্ধ্যা তাে বটেই, দিবালােকেও যে কী ধরনের বিপদের সম্মুখীন হওয়া সম্ভব তা নিয়ে নৌকার অন্য যাত্রীদের তেমন ভাবিত বলে মনে হয় না। নৌকা এবং নৌকায় মজুদ নানা প্রকারের পণ্যের মালিকানা মাখনলালের একার হওয়ায় বিপদ নিয়ে ভাবনার দায়ও যেন মাখনলালের একার। যাত্রীরা নৌকার উপর কাপড় বিছিয়ে তাতে কতকগুলি কাঠের খুঁটি সাজিয়েছে। তাদের দলবদ্ধ হয়ে পাশা খেলার মগ্নতা দেখে মনে হয় তাদের মতাে নির্ভার মানুষ এ দুনিয়ায় আর নাই। কেবল অরু নামের যুবকটি সবার উপস্থিতি অস্বীকার করে নৌকার অন্য প্রান্তে পানির উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে।
Puber Purbopurushera,Puber Purbopurushera in boiferry,Puber Purbopurushera buy online,Puber Purbopurushera by Masudul Haque,পুবের পূর্বপুরুষেরা,পুবের পূর্বপুরুষেরা বইফেরীতে,পুবের পূর্বপুরুষেরা অনলাইনে কিনুন,মাসউদুল হক এর পুবের পূর্বপুরুষেরা,9789849482581,Puber Purbopurushera Ebook,Puber Purbopurushera Ebook in BD,Puber Purbopurushera Ebook in Dhaka,Puber Purbopurushera Ebook in Bangladesh,Puber Purbopurushera Ebook in boiferry,পুবের পূর্বপুরুষেরা ইবুক,পুবের পূর্বপুরুষেরা ইবুক বিডি,পুবের পূর্বপুরুষেরা ইবুক ঢাকায়,পুবের পূর্বপুরুষেরা ইবুক বাংলাদেশে
মাসউদুল হক এর পুবের পূর্বপুরুষেরা এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 214.20 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Puber Purbopurushera by Masudul Haqueis now available in boiferry for only 214.20 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন হার্ডকভার | ১২৮ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2020-10-01
প্রকাশনী ৫২ (বায়ান্ন)
ISBN: 9789849482581
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

4
1 reviews

1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা

  • পর্যালোচনা লিখেছেন 'Ruponti Shahrin'
    প্রচ্ছদ বদলে লেখকের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘পুবের পূর্বপুরুষেরা’ এর তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করেছে 'বায়ান্ন' প্রকাশনী। ইতিমধ্যে পাঠক মহলে ক্লাসিক্যাল উপন্যাস হিসেবে সাড়া জাগিয়েছে বইটি। প্রথম থেকেই আলোড়ন তুললেও অনেক নতুন পাঠকের লোকচক্ষুর অন্তরাল থেকে বেরিয়ে এসেছে পুরনো আবেগ নিয়ে। কী আছে এতে? চলুন ফিরে দেখি। ৪০০ বছর আগে ফিরে যাই। ঢাকা তখন বুড়িগঙ্গা পাড়ের বিচ্ছিন্ন কিছু গ্রামের মধ্যে একটি। যার অঙ্গে অঙ্গে বিস্তৃত নদীর প্রবাহ। সর্পিল নদীর গতি প্রবাহের সাথে বেঁকে বয়ে যায় জীবনের গতিধারা। আর তার মাঝে চরাচরে জেগে উঠেছে মেঘনাদ নদী। যার উত্তাল ঢেউয়ের মাঝ দিয়ে মাখনলালের নৌকা যাচ্ছে এগিয়ে শম্বুক গতিতে। নৌকার এরুপ গতি যেমন মাখনলালের কাম্য নয়, তেমনি অরুর মত নীচু জাতের লোকের হাবভাব তার পছন্দ নয়। তবু মাঝিমাল্লাদের সাথে একই নদীর পথে যাত্রী তারা। চান্দপুরে রাত কাটিয়ে সুবহে সাদিকের সময় মেঘনাদ হয়ে নৌকা রওনা হয়েছে ধলেশ্বরীর দিকে। জলের উপরে যেমন আছে হার্মাদদের ভয়, তেমনি নিচে আছে কুমির। এখন বাংলার দুর্বল শাসন ব্যবস্থার সুযোগে তাদের সাহস রাতের অন্ধকারকে ভেদ করে গেছে। দিনের আলোতেও নির্দ্বিধায় বাণিজ্য তরীর উপর হামলে পড়ে যেন। লুন্ঠনের পর নৌকা হয়ত ফেলে যায় কদাপি, কিন্তু মানুষ নয়। মানুষও তাদের কাছে পণ্য। অনেক দামি। যার মূল্য সর্বত্র। মাখনলাল হুগলীর ব্যবসায়ী। চাঁদ সওদাগর হওয়ার আশা নিয়ে তরুণ বয়সে ব্যবসায় নেমেছিল সে। অল্প বয়সে বিপুল টাকা-পয়সা, হীরা জহরত জমিয়েছে যে মাটির উপর যত, মাটির নিচে তার ঢেরগুণ স্বর্ণমুদ্রা।হুগলীতে প্রাসাদোপম বাড়ি, সুন্দরী স্ত্রী রেখে পাড়ি দিয়েছে জানা-অজানার দোলাচলে। অরুর নির্দেশনায় পশ্চিমেই অগ্রসর হতে হয়। ধলেশ্বরী ধরে, বুড়িগঙ্গা হয়ে, ঢাকায় চলে বাণিজ্য তরী। বিভ্রান্ত মাঝি। অভিজ্ঞতাহীন চোখ শুধুই মাখনলালের দিকে চেয়ে আছে। এমন কঠিন সময়েও মাখনলালের নজর মোনাইয়ের দিকে। আচমকাই পারুলের হাসি দেখে মাখনলালের পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। পারুল তার রাজহাঁসের মত গ্রীবা উচিয়ে ঘরে ঢুকেই ভাঁজ করা চাটাইটা ফেলে দেয়। সঙ্গমের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতে মাখনলাল যখন প্রস্তুত, দরজার ওপাশ থেকে কেউ বলে ওঠে ‘হার্মাদ’। শরীরের সব উত্তাপ দপ করে নিভে যায় যেন। আতংকিত, উৎসাহ-উদ্দীপনা নির্বাপিত, আত্মগোপনের জীবনে সম্বল বলতে কিছু অস্ত্রসস্ত্র। নৌকায় স্তুপীকৃত মালের প্রতি ব্যবসায়ী মাখনলালের এখন আর কোনো মায়া নেই। জানের মায়া বড় মায়া। তবুও হার্মাদদের সামনে বন্দুক নিয়ে সামান্য নড়ন-চড়ন মানে ছেলেমানুষী ছাড়া আর কিছুই নয়। নারীরা যেখানে দাস অথবা পণ্য, পুরুষের ভোগের আর উপভোগের সামগ্রী। সেখানে আশুরা এক সাহসের নাম। বিদ্রোহের নাম। দপদপ করে জ্বলে ওঠা শিখার নাম। পর্তুগীজরা একজন আরেকজনের ভোগের জিনিস নিয়ে ঝগড়া ফ্যাসাদ করেছে, মগ নারীরা ঢেলে দিয়েছে রক্ত বিসর্জন। মোঘল শাসনকে সুসংহত করতে সুবাদার ইসলাম খাঁ শতশত রণতরী নিয়ে বাংলার দিকে রওনা দিয়েছেন। ইসলাম খাঁকে রুখে দেয়ার সংকল্প নিয়ে মুসা খাঁর নেতৃত্বে বারো ভুঁইয়ারাও একজোট। আর এই যুদ্ধের দামামার মাঝেই জলদস্যুদের হাত থেকে পালিয়ে আসা আশুরার সাথে দেখা হয় সংসার বিরাগী অরুর। নেংটি পরা উদাম শরীর, জট পাকানো চুল দীর্ঘ হতে হতে ঘাড় ছারিয়ে পিঠের দিকে নেমে আসা অরুর মাঝে কী দেখেছিল আশুরা? যা সূচিত করে প্রায় দেড়শত বছরের অভিযান। এ দীঘল ইতিহাস। আপনি সঙ্গী হবেন তো? মতামতঃ প্রবীণ লেখক মাসউদুল হকের ক্ল্যাসিক্যাল উপন্যাস ‘পুবের পূর্বপুরুষেরা’ ভাগ্যাহত দুই মানুষের পরিচয়ের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হতে শুরু করে প্রায় ১৫০ বছর ধরে বঙ্গোপসাগর ও তার চারপাশের নদ-নদী ঘিরে পর্তূগিজ জলদস্যুদের কায়েম করা ত্রাসের রাজত্ব, রাজা-বাদশাহী জীবন, মাঝি-মাল্লাদের দুঃখের জীবন, নদী পাড়ের মানুষদের সীমাহীন হাহাকার, নারীদের অবমাননাকর জীবন, ভোগের সামগ্রী অথবা দাসের জীবন। রণতরী আর বাণিজ্য তরীর অবাধ বিচরণ, রণ-কৌশল, ভোগ আর সামাজ্যবাদ। একদিকে রাজকীয় আয়োজন আর আরেকদিকে অভাবের তাড়নায় নির্মম সংসার বিবাগী জীবনের অবক্ষয়। এর মাঝেই বাংলার বিখ্যাত বয়ন শিল্পীদের জীবনের সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা নির্ভর অনবদ্য আখ্যান এই উপন্যাস। সময়ের স্রোত থেকে এমন একটি উপন্যাসকে নতুন মোড়কে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করার জন্য বায়ান্নকে ধন্যবাদ। বইটি নিয়ে বলতে গেলে খুটিনাটি অনেক কিছুই বলা যায়। কারণ, লেখক উপন্যাসের পাঠ ও ভাবনাসুত্রের জন্য ২৩টি বই রিসার্চ করে তবেই পাঠকের সামনে উপস্থাপন করেছেন। গল্পের আসল ফ্লেভার এর তৎকালীন ভাষা ও শব্দচয়নের ব্যবহারে। যা আজকাল প্রায় মলাটে শূন্য। ফ্ল্যাপে ‘পাড়’ শব্দের বানানে ‘পার’ ছাড়া আর তেমন ভুল ত্রুটি চোখে পড়ার মতন নয়। তবে এ ভুলটি পূর্বের সংস্করণগুলোতেও ছিল। ইতিহাস নির্ভর ফিকশন যা বহু আগেই ক্ল্যাসিক্যালের মর্যাদা পেয়েছে, তার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অনেক অজানা তথ্য। তথ্য সমৃদ্ধ বইটি পড়তে একটুও খারাপ লাগে না। আপনি যদি ফাস্ট রিডার হন তাহলে একদিনেই শেষ করতে পারবেন। স্লো রিডারদের জন্যও মাস্ট রিড একটি বই। শুধু গল্পের প্লট গুছিয়ে নিলেই হারিয়ে যাবেন টাইম ট্রাভেলের মধ্য দিয়ে সেই পুরনো বাংলায়। অত্যাচার-অবিচারের পরেও স্বর্গলাভের বাসনা জলদস্যুদের ঠিকই আছে। এরপরেও খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হলে স্বর্গের দ্বার নাকি প্রশস্ত হয়। ধর্ম আলাদা হলেও জীবনের তাগিদে মাঝি-মাল্লাদের ভেতরেও বিবাদমান বিষয়গুলো হয়ে ওঠে এক নদীর সন্তান। যেখানে মসলিনের শ্রেষ্ঠ কারিগর অরু আর বিদ্রোহী নারী আশুরার মাঝেই আঁকে ইতিহাসের আরেক মানসপট। রচিত হয় নতুন মানচিত্র। যদিও এই উপন্যাসের সময়কাল সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে সপ্তদশ শতকের প্রথম দশক। প্রয়োজনে কখনো বিশ/ত্রিশ বছর পিছিয়ে গেছে। আবার বর্তমানকে ফুটিয়ে তুলতে মধ্যযুগের শেষভাগ ১০০ বছর পুর্বেও পৌঁছেছে। রহস্যাবৃত রাজকীয় জীবনের মাঝে সাধারণ জনজীবন কতখানি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর আর সম্ভাবনার তা পাঠকের নিয়মেই আলোচনার বিষয়। আবহমানকালের ‘নিশ্চল ও সময়হীন’ আখ্যান যা প্রাচীণ ঢাকা ও তার জনপদের বিরল সাক্ষী। প্রিয় লাইনঃ “বেঁচে থাকার সহজতর রাস্তাটি আবিষ্কারের পর মানুষ আর সময় ক্ষেপণ করে না।”
    July 04, 2022
মাসউদুল হক
লেখকের জীবনী
মাসউদুল হক (Masudul Haque)

তিনি ঢাকার জিন্দাবাহারে ৩রা জানুয়ারি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ জন্ম গ্রহন করেন। পিতা জহিরুল হক ও মাতা ফরিদা আক্তার। শিক্ষা স্নাতকোত্তর (দর্শন) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; পিএইচডি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অভিসন্দর্ভ : নন্দনতত্ত্ব: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশের কবিতা (১৯৪৭-১৯৯০)। পেশায় সহকারী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর। গবেষণা-বৃত্তি : রিসার্স-ফেলো (১৯৯৭-২০০০), বাংলা একাডেমি। প্রকাশিত গ্রন্থ: কবিতা: টেনে যাচ্ছি কালের গুণ (১৯৮৭); অলৌকিক স্পশর্ (১৯৯০); ধাঁধাশীল ছায়া (২০০০); ধ্বনিময় পালক (২০০০); The Shadow of Illusion (২০০৫); জন্মান্ধের স্বপ্ন (২০১০); Blind Man`s Dream (২০১০); ছোটগল্প: তামাকবাড়ি (১৯৯৯); ঢুলকিপুরাণ (২০১০); আবার কাৎলাহার (২০১১), নাবিকের জুতো (২০১৩); উপন্যাস: দিনমুলুক (২০১৫); প্রবন্ধ-গবেষণা: বাংলাদেশের কবিতার নন্দনতত্ত্ব(২০০৮); হাজার বছরের বাংলা কবিতা (২০০৮); দিনাজপুরের লোকসংস্কৃতি: ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার (২০০৮); মুক্তিযুদ্ধ:দিনাজপুর(২০০৮); জীবনানন্দ দাশ ও অন্যান্য(২০১১); রবীন্দ্রনাথ: ছেলেবেলা (২০১২); অনুবাদ: ধূসর বুধবার (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: টি. এস. এলিয়ট,১৯৯৯); বালি ও ফেনা (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: কাহ্লিল জিবরান,২০০৮), হল্লা (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: এ্যালেন গিন্সবার্গ, ২০১৭); সম্পদিত গ্রন্থ: কবিতা সিরিজ (কবিতা-সংকলন, ১৯৮৮); এই সময় এই স্রোত (কবিতা-সংকলন, ১৯৯১); মৃত্যূত্তীর্ণ:ইয়াসমিন (প্রবন্ধ-সংকলন); সাক্ষাৎকার গ্রন্থ: সেলিনা হোসেন (২০০০); লিটল-ম্যাগ (সম্পা) : শ্রাবণের আড্ডা(১৯৮৭-২০০০)। প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টতা: সাধারণ সদস্য: বাংলা একাডেমি;: কার্যনির্বাহী সদস্য: খাজা নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল ও লাইব্রেরি, দিনাজপুর (২০০১-২০০৩); সভাপতি: আমাদের থিয়েটার, দিনাজপুর, বিবেকানন্দ হিউমেন সোসাইটি, দিনাজপুর (১৯৯৬-১৯৯৭, ২০০১-২০০৬); বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ, দিনাজপুর জেলা শাখা ( ২০১১-বর্তমান)। পুরস্কার: বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার (২০১১); চিহ্ন পুরস্কার (২০১৩); দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (লোকসংস্কৃতি) ২০১৪। স্ত্রী সিরাজাম মনিরা, দুই সন্তান হাসানুল হক সৌম্য ও মনীষা হক।

সংশ্লিষ্ট বই