"পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য (প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগ)" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে নানান আশ্চর্য এবং অদ্ভুত সব রহস্য। এর কোনােটি প্রাকৃতিক, কোনােটি মানুষের তৈরি। তবে অধিকসংখ্যক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে প্রাকৃতিকভাবে এবং মানুষ দ্বারাও। ফলে, পৃথিবীতে যেসকল আশ্চর্য ও রহস্যঘেরা স্থাপনা আলােচিত-প্রচারিত, তার অনেকগুলােই এখন আর নেই। আবার কয়েকটির উপস্থিতি যেন ধ্বংসপ্রায়। এগুলােই পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় স্থান পায় মানুষের তৈরি আশ্চর্যজনক স্থাপনাসমূহ। গুরুত্বের দিক দিয়ে এগুলােকে অবশ্যই হতে হয় ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যপূর্ণ।
মানুষের আবিষ্কৃত প্রথম সভ্য যুগ (সেটাও খ্রিষ্টপূর্ব ৩০ অব্দ) থেকে পশ্চিম রােমীয় সাম্রাজ্যের পতন অর্থাৎ মােটামুটি ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে ধরে নেওয়া। হয় প্রাচীনকাল। যেহেতু এ বিষয়ে কোনাে নির্দিষ্ট পরিমাপক নেই, তাই কোনগুলােকে বিষ্ময়কর বলা উচিত সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনাে ঐকমত্যও নেই। যতদূর জানা যায়, তখনকার গ্রিসের হেলেনীয় সভ্যতার পর্যটকরা প্রথম এ ধরনের ৭টি আশ্চর্যের তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। গ্রিকরা মনে করত, ৭ সংখ্যাটি নিখুঁত ও ‘বহু’র বা পর্যাপ্তের পরিচায়ক। সেই থেকেই ৭টি বিস্ময়কর বস্তু নিয়ে এই প্রচলন শুরু। সেগুলােই ৭টি প্রাচীন আশ্চর্য স্থাপনা।
বিভিন্ন মত থেকে জানা যায়, বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গ্রিক দার্শনিক হেরােডােটাস এবং ক্যালিম্যাকোস আলেজান্দ্রিয়ার জাদুঘরে বসে এই তালিকা তৈরি করেন। সেই থেকে প্রতিটি যুগেই এই তালিকা প্রকাশিত হয়ে আসছে। যদিও তৈরি করা মূল তালিকার পাণ্ডুলিপির কোনাে নিদর্শন এখনাে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মধ্যযুগের বিস্ময়কর বস্তুর তালিকা আদৌ সেসময়ে প্রস্তুত হয়েছিল কিনা এ বিষয়ে সংশয় রয়েছে। মধ্যযুগের যে তালিকাটি বর্তমানে পাই ব্রিউয়ার (Brewer) এগুলােকে ‘পরবর্তী তালিকা' বলে উল্লেখ করেন এবং এগুলােই মধ্যযুগের পরবর্তীকালে প্রস্তুত।
আধুনিক পৃথিবীতে এসে ২০০১ সাল থেকে সুইস করপােরেশনের নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন পৃথিবীর আশ্চর্যজনক স্থান ও স্থাপত্যগুলােকে তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং এগুলােই সাম্প্রতিক জরিপে উঠে আসে আধুনিক সপ্তাশ্চর্য হিসেবে।
বিজ্ঞানীরা মানুষের তৈরি এই আশ্চর্য জিনিসগুলােকে সময়ের হিসেবে কয়েকটি যুগে ভাগ করেছেন। এগুলাে হলাে- প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ। এই তিন যুগের রহস্যঘেরা আশ্চর্যের কথা আমরা এই বইতে তুলে ধরেছি।
মজার বিষয় হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে গবেষকরা নিউজিল্যান্ডের লেক রােটোমােহনার সিলিকা উপত্যকাকে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য বলে দাবি করছেন। তবে সেটি এখনাে স্বীকৃতি পায়নি।
স্বীকার করতেই হয় প্রাচীন, মধ্য কিংবা আধুনিক যে যুগের স্থাপনাই হােক না কেন তা আমাদের মুগ্ধ করেছে।
আলোঘর প্রকাশনী এর পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য (প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগ) এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 128 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Prithibir Soptachorja by Aloghar Prokashoniis now available in boiferry for only 128 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.