২য় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের নৈরাজ্য ও অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে একটি শিল্প আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ফরাসি কৰি সমালােচক অন্সে টেনের নেতৃত্বে ইউরােপে বিভিন্ন দেশের কবি ও শিল্পীগণ একত্রিত হয় এবং ডাডাবাদ প্রভাবিত নতুন এক মতাদর্শের ভিত্তিতে সুরিয়েল নামে এক শিল্প আন্দোলন শুরু করে। ডাডাবাদে বলা হয় : প্রচলিত মূল্যবােধ নস্যাৎ করা এবং এমন এক নান্দনিক বােধে উপনীত হওয়া যার মাধ্যমে সকল ভণ্ডামি ও রীতিনীতির বেড়াজাল ভেদ করে বস্তুর অন্তর্নিহিত সত্যে পৌছানাে ডাভাবাদীরা পুঁজিবাদী সমাজের যুক্তি, কারণ বা সৌন্দর্যের ধারণা মানত না বরং তাদের কাজের মধ্যে প্রকাশ করতাে অর্থহীন, উদ্ভট, অযৌক্তিক এবং বুর্জোয়াবিরােধী প্রতিবাদ। এরপর ১৯২৪ সালে ওই ফরাসি কবি অল্পে ব্রেইনের নেতৃত্বে একদল ইউরােপীয় শিল্পী সুররিয়েলিস্টিক (পরাবাস্তববাদ) আন্দোলন শুরু করেন। তারা বলেন : প্রকৃত সত্য কেবলমাত্র অবচেতনে বিরাজ করে। শিল্পীর লক্ষ্য হলাে সেই সত্যকে বিভিন্ন কৌশলে তুলে ধরা। যুক্তি চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখে। সুতরাং চিন্তার স্বাভাবিক | সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
জন্মের পরপরই ইলেকট্রিক স্পার্কের মতাে এই আন্দোলন | গােটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের এই উপমহাদেশে | চিত্রশিল্পে এর প্রয়ােগ দেখা দিলেও কবিতায় তেমন প্রভাব পড়েনি। এই পরাবাস্তব কাব্যগ্রন্থে মৌলিক কবিতার পাশাপাশি কিছু কবিতা রয়েছে যা সুররিয়েলিস্টিক ছবির ভাবানুবাদ । আশাকরি সুররিয়েলিস্টিক পাঠকদের বইটি ভালাে লাগবে।