অনি উত্তেজনা চাপা দেয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু উত্তেজনা এরকম এক জিনিস যা চাপা দেওয়া যায় না। তার কথদন্তের উত্তেজনা চাপা পড়ল না। আম্মু, বাবা আমার জন্য ওখান থেকে কী নিয়ে আসবে তা কি তােমাকে বলেছে? মিসেস জেরিন ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসা। বাইরে বের হওয়ার জন্য হালকা মেকাপের ছোয়া লাগাচ্ছেন। ডাক্তারের কাছে ফিজিওথেরাপি নিতে যাবেন । অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা আছে। তিনি কখনও টেনিস খেলেননি। অথচ তার নাকি টেনিস অ্যালবো হয়েছে। ডাক্তার অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন চাকরি করার সময় অফিসিয়াল কাজে কইয়ে ভর দিয়ে টেবিলের উপর রাখার কারণে এমনটি হতে পারে। একমাত্র ছেলেকে মানুষ করে তুলতে যে চাকরি তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই চাকরির যন্ত্রণা এখনও ভােগ করতে হচ্ছে! মিসেস জেরিনের ভ্রু কুঁচকে গেল। তিনি ক্রু মেকাপ দিতে দিতে ছেলের কাছে কথাটা কিভাবে বলবেন ভাবতে লাগলেন। নওশাদ এবারও আসতে পারবে না। শেষ মুহুর্তে ওর যাত্রা বাতিল হয়েছে। বাতিল কোম্পানি করেনি, ওই করেছে। ওর কোম্পানি নতুন কোনাে সিলিকন ভ্যালিতে আইটি সেক্টরের জন্য ওকেই পাঠাবে। ও হয়তাে দেশের আসার জোর দিয়ে ব্যাপারটা এড়াতে পারত। কিন্তু ওর কাছে স্ত্রী সন্তানের চেয়ে চাকরি, ক্যারিয়ার অনেক বড় ব্যাপার। অথচ জেরিন নিজে শুধু ছেলের চিন্তা করে এত ভালাে চাকরিটা ছেড়ে দিল । তারও কি ক্যারিয়ার গড়ে উঠত না? এখন না হয় ছেলের পিছনে সময় ব্যয় করছে। কিন্তু ছেলে যখন আরো বড় হয়ে উঠবে তখন তার সময় কাটবে কি করে? মিসেস জেরিন একটু হেসে বললেন, আমাকে তাে বলেনি। বলেছে টপ সিক্রেট।