বিশ্বের বড় বড় শহরগুলাে এক-একটি এক-এক ধরনের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের কারণে সুপরিচিত এবং বিখ্যাত। কিন্তু প্যারিস শহরের মনে হয় এক কোনাে বৈশিষ্ট্য নেই। বস্তুত সব ধরনের বৈশিষ্ট্য এবং সৌন্দর্যের স্রোতধারা মিলিত হয়েছে এই মেগা সিটিতে, যে-কারণে প্যারিসকে বলা হয় নগরের রানি। -নপত্রের সুমির যেন অন্ত নেই। কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকর, ভাস্কর, পাশনিক, গায়ক সকলে সমস্বরে এই শহরের গুণকীর্তনে সদালত। সাধারণ আম-জনতাদের তাে কোনাে কথাই নেই, যে-কারণে ব্রিটেনের ব্রাস্কফোর্ডে পা রাখার পরদিন থেকেই প্যারিসে যাওয়ার সুযােগ খুঁজতে থাকি। এক মাহেন্দ্রক্ষণে সে-সুযােগ পেয়ে উড়াল দিই ব্রাফোর্ড লিস বিমান বন্দর থেকে 'শার্ল দ্য পালের' পথে। অনেক কিছু দেখার, অনেক কিছু জানার, নেক কিছু শেখার অদম্য ইচ্ছে নিয়ে উড়তে থাকি মাটি থেকে ত্রিশ-চল্লিশ হাজার ফুট উপরে, আকাশের। আস্কিনায়। মাঝে মাঝে একরাশ কৌতূহল নিয়ে ঐনে ভ্রমণৱত ছােট বাচ্চাদের মতো জানালায় উকি দিয়ে দেখি প্যারিসের যাত্রাপথ। আমাদের বিশ্বকবিও আজ থেকে একশত তেত্রিশ বছর আগে হয়তােবা এভাবে কৌতুহল বুকে চেপে উপস্থিত হয়েছিলেন এই সুন্দর নগরীতে। তখনও উড়োজাহাজ চালু হয়নি। এ-উপমহাদেশ থেকে যাত্রীগণ জলজাহাতে সমুদ্রপথে সরাসরি ইউরােপ যেতেন। কেষ্ট কেউ এনে, আলেকজান্দ্রিয়া, বিৱিন্দি হয়ে ইতালি পেীছে রেলগাড়ি ধরে ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে যেতেন। রবিঠাকুরও এ-পথেই ১৮৭৮ সনের সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ১৭ বৰা বয়সে ইতালি হয়ে বিলেত গিয়েছিলেন। সে-সুবাদে যাত্রাবিরতির কারণে তঁার প্যাবিসর্শন হয়েছিল। এশহর সম্পর্কে বিশ্বকবি র অতি প্রকাশ করেছেন যুরােপ প্রবাসীর প্রথম পত্র । তঁার সে-অনুভূতির কথা এখানে সরাসরি তুলে ধরছি । "সকাল বেলা প্যারিস গিয়ে পৌছলাম। কী জমকালাে শহর। অত্রভেদী প্রাসাদের অরণে অভিভূত হয়ে যেতে হয়।