গ্রন্থের শ্রেষ্ঠতম মূল্যায়ন। এই বইয়ের উজ্জ্বল ও ব্যর্থ দুটি দিকই রবীন্দ্রনাথের এই রচনায় সমান সহানুভূতিতে বর্ণিত হয়েছে। সঞ্জীবচন্দ্রের মধ্যে প্রতিভার ঐশ্বর্য থাকলেও গৃহিণীপনার যে অভাব ছিল সে বিষয়টি উল্লেখ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ তার রচনার প্রথমেই জানিয়েছেন। কোনাে কোনাে ক্ষমতাশালী লেখকের প্রতিভায় কী-একটি গ্রহদোষে অসম্পূর্ণতার অভিশাপ থাকিয়া যায়; তাহারা অনেক লিখিলেও মনে হয় তাহাদের সব লেখা শেষ হয় নাই। তাঁহাদের প্রতিভাকে আমরা সুসংলগ্ন আকারবদ্ধভাবে পাই না, বুঝিতে পারি তাহার মধ্যে বৃহত্ত্বের মহত্ত্বের অনেক উপাদান ছিল, কেবল সেই সংযােজনা ছিল না যাহার প্রভাবে সে আপনাকে সর্বসাধারণের নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়ে প্রকাশ ও প্রমাণ করিতে পারে। সঞ্জীবচন্দ্রের প্রতিভা পূর্বোক্ত শ্রেণীর। তাহার রচনা হইতে অনুভব করা যায় তাহার প্রতিভার অভাব ছিল না, কিন্তু সেই প্রতিভাকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করিয়া যাইতে পারেন নাই। তাহার হাতের কাজ দেখিলে মনে হয়, তিনি যতটা কাজে দেখাইয়াছেন তাঁহার সাধ্য তদপেক্ষা অধিক ছিল।