আসাদের নাকেমুখে হাঁচির আভাস। অনেকক্ষণ ধরে ও হাঁচি আটকে রাখার চেষ্টা করছে। হাঁচির আটকে রাখার চেষ্টা করার কারণ হচ্ছে আসাদের পকেটে রুমাল বা টিসু পেপার নেই। আসাদের কখনােই শুকনাে হাঁচি হয় না। জোরেসােরে হাঁচি হয়, আর তার সাথে বড়সর সর্দিও বের হয়। সাথে রুমাল বা টিস্যু পেপার না থাকলে আসাদকে দুই হাতে মুখ ঢেকে হাঁচি দিতে হয়। তখন হাত পরিষ্কার করা আরেক সমস্যা। একা হলে হয়তাে সেটা সামাল দেওয়া যায়, কিন্তু সামনে কেউ থাকলে এসব সমস্যা প্রচণ্ড অস্বস্তির। কারও সামনে রুমাল বা টিসু পেপার ছাড়া হাঁচি দেওয়া তাই আসাদের জন্য একেবারেই নিরাপদ না। এই মুহূর্তে ওর সামনে ঝুনু আপা বসে আছে। ঝুনু আপার চোখেমুখে বিরক্তির স্পষ্ট ছাপ। এখন রুমাল ছাড়া হাঁচি দিলে তার বিরক্তি আরও বাড়বে। ঝুনু আপার সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে। আলাপ হচ্ছে। প্রাথমিক আলাপ হয়ে গেছে। এখন ঝুনু আপাকে কিছু বিষয়ে রাজি করাতে হবে। সেই বিষয়গুলাে সহজ না, জটিল ধরণের। এরকম অবস্থায় তার বিরক্তি বাড়ানাে একেবারেই উচিত হবে না। আসাদ দুই চোখের মাঝখানে চেপে হাঁচি আটকানাের চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টার কারণে এখন ওর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। আশ্বিন মাসের দুপুর। টিনের চালায় রােদ পড়ে তাতিয়ে আছে। ঘরের ভেতরে অসহ্য গরম। এমন গরমে বিন্দু বিন্দু ঘামও অসুস্থ অনুভূতি দেয়। আসাদের সেরকমই লাগছে। মনে হচ্ছে এভাবে বেশিক্ষণ থাকলে ও অসুস্থ হয়ে যাবে। হাঁচি দিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসতে পারলে ভালাে হতাে। কিন্তু আলাপের এই পর্যায়ে যে কোনাে বিরতি ডেকে আনা এখন মহা। বােকামী। বিরক্তি নিয়ে বসে থাকলেও ঝুনু আপা আসাদের নয়নপুর। প্রস্তাবের অনেকটায় প্রায় রাজি হয়ে গেছেন বলে মনে হচ্ছে। এখন শুধু শেষ কথাবার্তা বলা বাকি। সেসব কথা অবশ্য সহজ কোনাে কথা না।