ইমাম ইবনুল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘দৃষ্টিই যৌন লালসা উদ্বোধক। কাজেই এ দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ মূলত যৌনাঙ্গেরই সংরক্ষণ।
.
তা ছাড়া বর্তমানে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মুক্তচিন্তার নামে সর্বত্র নষ্টামি ও নোংরামির যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা মানুষকে লাজ-শরম ভুলে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনায় লিপ্ত করছে; যুবকদের দেহমনে লাগিয়ে দিচ্ছে যৌবনের আগুন। ফলে তারা আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, নিমজ্জিত হচ্ছে সীমাহীন পাপাচারে। এসবের কারণ অনুসন্ধান করলে সর্বাগ্রে যে-হেতুটি পাওয়া যায়, তা হলো—দৃষ্টির অসংযত ব্যবহার।
.
কীভাবে করবেন নজরের হেফাজত! নজরের হেফাজত করলে কী পুরস্কার রয়েছে আপনার জন্য? বিপরীতে কুদৃষ্টির ফলে কী শাস্তি অপেক্ষা করছে, তারই অনবদ্য গ্রন্থনা-‘নজরের হেফাজত : সফলতা হাতিয়ার’
Nozorer Hefazat,Nozorer Hefazat in boiferry,Nozorer Hefazat buy online,Nozorer Hefazat by Mahmoud Misri,নজরের হেফাজত,নজরের হেফাজত বইফেরীতে,নজরের হেফাজত অনলাইনে কিনুন,মাহমুদ মিসরি এর নজরের হেফাজত,9789849537748,Nozorer Hefazat Ebook,Nozorer Hefazat Ebook in BD,Nozorer Hefazat Ebook in Dhaka,Nozorer Hefazat Ebook in Bangladesh,Nozorer Hefazat Ebook in boiferry,নজরের হেফাজত ইবুক,নজরের হেফাজত ইবুক বিডি,নজরের হেফাজত ইবুক ঢাকায়,নজরের হেফাজত ইবুক বাংলাদেশে
মাহমুদ মিসরি এর নজরের হেফাজত এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 77.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Nozorer Hefazat by Mahmoud Misriis now available in boiferry for only 77.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন |
পেপারব্যাক | ৯৬ পাতা |
প্রথম প্রকাশ |
2021-02-01 |
প্রকাশনী |
মুহাম্মদ পাবলিকেশন |
ISBN: |
9789849537748 |
ভাষা |
বাংলা |
ক্রেতার পর্যালোচনা
1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা
-
পর্যালোচনা লিখেছেন 'Siraajam Binte Kamal'
প্রারম্ভিকা:
------------------
'নেশা লাগিল রে নেশা লাগিল রে
বাকা দু'নয়নে নেশা লাগিল রে।'
'চোখের কাজল দিয়ে তাকে চিঠি লিখেছি…..'
'চোখ যে মনের কথা বলে…….'
'তুমি হাসলে তোমার মুখ হাসে না, হাসে তোমার চোখ।'
সংগীতভুবনে চোখ নিয়ে লেখা গানের অভাব নেই। আবার চোখ দেখেই প্রেমে পড়ার কাহিনীও রয়েছে অনেক। প্রিয়ার কাজলটানা চোখের দিকে তাকিয়েই প্রিয় হারিয়ে যায় ভালোবাসার অতলান্তে। আবার কেউ কেউ প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়েই নাকি কাটিয়ে দিতে পারবে সহস্র বছর।
হ্যা, প্রিয় প্রিয়ারা যাই করুক এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই যদি তাদের সম্পর্ক হয় হালাল। অর্থাৎ বিবাহিত স্বামী, স্ত্রী। কিন্তু যদি সম্পর্ক হয় হারাম, তাহলে অবশ্যই আমাদের জানার অনেক কিছু বাকি রয়ে গেছে।
ইসলামে কেউই স্বাধীন নয়। পিলপিল পায়ে চলা পিপীলিকা থেকে শুরু করে আমরা আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ, আমরা সবাই এক আল্লাহর অধীনে চলছি। তার বিধিনিষেধ উপেক্ষা করার সাধ্য আমাদের কারো নেই। আর যদি করিও তা আমাদেরই ক্ষতি। করার পর ভুল বুঝে যদি ফিরে আসি তাহলে লাভ-ও আমাদেরই।
আল্লাহর এক নিয়ামত চোখ নিয়ে কথা বলছিলাম। আজকের আলোচ্য বইটি চোখ নিয়েই। বইয়ের নাম 'নজরের হেফাজত : সফলতার হাতিয়ার।'
রিভিউ কথন:
---------------------
প্রথমেই বলে নিই 'দৃষ্টিসংযম' কী?
দৃষ্টিসংযম হলো→ ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী যা দেখা হারাম, তা থেকে দৃষ্টি সংযত রাখা, যা দেখা হালাল, কেবল সেদিকেই দৃষ্টিপাত করা। যদি আকস্মিক এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হারাম কিছু চোখে পড়েই যায়, তবে তৎক্ষণাৎ চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে।
জিনা-ব্যভিচারের মতো জঘন্য ও অশ্লীল কাজের সূত্রপাত ঘটে অসংযত দৃষ্টিপাত থেকে। এই ছোট্ট, অথচ ভয়ংকর রোগে আজ পুরো জাতি আক্রান্ত। অধিকাংশ মুসলিম আজ বেহায়াপনা ও অশ্লীলতায় লিপ্ত।
বর্তমানে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মুক্তচিন্তার নামে সর্বত্র নষ্টামি ও নোংরামির যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা মানুষকে লাজ-শরম ভুলে অশ্লীলতা ও বেহায়পনায় লিপ্ত করছে। যুবকদের দেহমনে লাগিয়ে দিচ্ছে যৌবনের আগুন। ফলে তারা আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, নিমজ্জিত হচ্ছে সীমাহীন পাপাচারে। এসবের কারণ অনুসন্ধান করলে যে কারণটি সর্বাগ্রে পাওয়া যায়, তা হলো- দৃষ্টির অসংযত ব্যবহার।
তিতা সত্য হচ্ছে, আমাদের একদলের নেই নিজেকে আবৃত রাখার জ্ঞান, অন্যদলের নেই নজর হেফাজতের জ্ঞান। যার দরুন দিন দিন সমাজে অন্যায়-অত্যাচারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। মানুষ দিন দিন বিবেকশূন্য হয়ে যাচ্ছে। সাথে মনুষ্যত্ববোধ-ও বিদায় নিচ্ছে।
যুবক-যুবতিদের দৃষ্টির উদাসীনতার পরিণাম নিয়ে চিন্তা করলে যে কারো চোখ থেকে অশ্রুর বদলে খুন ঝরবে। ঘুমন্ত বিবেকও জাগ্রত হবে। বর্তমানে এই পরিণামের কারণ সম্ভবত ধর্মীয় অনুশাসনের দুর্বলতা এবং আল্লাহর ব্যাপারে মানুষের মাত্রাতিরিক্ত উদাসীনতা।
মহান আল্লাহ তো এমন সত্তা যিনি 'আল-বাসির'। আল্লাহ সর্বদ্রষ্টা। তিনি চোখের সকল খেয়ানত সম্পর্কে জানেন, মানব-মনে লুক্বায়িত সবকিছুই দেখেন।
বই অভ্যন্তরে:
---------------------
কীভাবে করব নজরের হেফাজত! নজরের হেফাজত করলে কী পুরস্কার রয়েছে! বিপরীতে কুদৃষ্টির ফলে শাস্তি কী! এসব নিয়েই ছোট্ট এই গ্রন্থ- নজরের হেফাজত। রয়েছে কুরআন ও হাদীস থেকে বর্ণিত দলিল। রয়েছে সালাফে সালেহিনের নজরের হেফাজতের দৃষ্টান্ত।
সূচিপত্র থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিকের নাম তুলে ধরছি:
→কুদৃষ্টি থেকে হয় অগণিত গুনাহের উৎপত্তি
→'নজর' হৃদয়ে নিক্ষিপ্ত এক বিষাক্ত তীর
→যৌনাঙ্গের আগে চক্ষু হেফাজতের আদেশ কেন?
→দৃষ্টিসংযম আবশ্যক হওয়ার দলিল
→কুদৃষ্টির পরিণাম
→নজর হেফাজতের উপকারিতা
→নারীর দিকে দৃষ্টিপাতের প্রকার ও বিধান
→দৃষ্টি সংযত রাখার কিছু উপায়
→দৃষ্টি অসংযত থাকে কেন?
📝বই থেকে কিছু প্রিয় উক্তি:
------------------------------------
🔺 'দৃষ্টিই যৌন লালসা উদ্বোধক। কাজেই এ দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ মূলত যৌনাঙ্গেরই সংরক্ষণ।'
[ ইমাম ইবনুল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ]
🔺 অধিকাংশ গুনাহের সূত্রপাত ঘটে কথার আধিক্য ও যত্রতত্র দৃষ্টিপাত থেকে। শয়তান এ দুটি হাতিয়ার ব্যবহার করে মানুষকে সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট করে।
🔺 নজরকে যে অসংযত রাখে - আল্লাহর কসম- তারা বালা মুসিবতের কোন শেষ থাকে না।
🔺 'পরনারীর প্রতি যাদের থাকে দৃষ্টি লোভাতুর,
তারা তো মাংস নিয়ে কাড়াকাড়ি করা কুকুর।'
[আল্লামা কাহতানি রাহিমাহুল্লাহ]
🔺 যে ব্যক্তি প্রবৃত্তির বিরুদ্ধাচারণ করে চলে, শয়তান তার ছায়াকেও ভয় করে।
🔺 নজরের হেফাজত মানুষের মনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও একাগ্রতা তৈরি করে। পক্ষান্তরে যত্রতত্র দৃষ্টিপাত অন্তরকে বিক্ষিপ্ত করে, হৃদয়কে আল্লাহবিমুখ করে।
লেখক পরিচিতি:
--------------------------
শাইখ আবু আম্মার মাহমুদ মিশরি। আরববিশ্বে সাড়াজাগানো লেখক ও দাঈ। ১৯৬২ সালে মিশরের কায়রো জেলায় মিসরি ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হুলওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজসেবা বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর শুরু করেন ইলমি সফর।
তিনি শুধু মিসরই নয় বরং সৌদি আরবেও একাধিক ইসলামিক স্কলারের সান্নিধ্যে থেকে ইলম অর্জন করেন। তিনি শাইখ মুহাম্মদ ইবনু ইসমাইলের কাছ থেকে 'কুতুবে সিত্তাহ'সহ ইলমে দ্বীনের সকল শাখার ইজাযত লাভ করেন। কায়রোর আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট' বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিও লাভ করেন।
ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর প্রকাশিত মূল্যবান গ্রন্থ ৮৬টি। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য - কাসাসুল কুরআন, রিহলাতু ইলা দারিল আখিরাহ, সিরাতুর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আসহাবুর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইত্যাদি।
অবশেষে:
------------------
বইটা ছোট হলেও খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয়েছে ছোট এই বইটা সবারই পড়া উচিত। আমরা আমাদের অজ্ঞতার কারণে ছোট ছোট গুনাহের মাধ্যমে আস্তে আস্তে বড় গুনাহের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছি। একজন মুসলিমের যদি নিজেকে ব্যস্ত রাখার মতো আখিরাত কেন্দ্রিক চিন্তা-ফিকির না থাকে, তবে সে দুনিয়ার পেছনে পড়বে, পাপাচারে লিপ্ত হবে। যা খুবই দুঃখজনক।
June 25, 2022
লেখকের জীবনী
মাহমুদ মিসরি (Mahmoud Misri)