মানুষ যে জন্মসূত্রে স্বাধীন, তার ব্যত্যয় দেখা যায় মানুষে মানুষে বয়ে চলা পার্থক্য, বঞ্চনা কিংবা বিশেষ বিধি-নিষেধ, যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নাগরিক জীবনকে প্রভাবিত করার মধ্য দিয়ে। আজকের পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে বিরাজিত বৈষম্যকে আরও সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় তাদের যাপিত জীবনে। বৈষম্যের শিকার জনগােষ্ঠীকে বিশ্ব চিহ্নিত করতে সক্ষম হচ্ছে শুধু নয়, বৈষম্যের ধরন এবং তার মাত্রাও দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্টভাবে। আর সে কারণেই মানুষের মধ্যে থাকা বৈষম্যের বিষয়টিকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। জনগােষ্ঠীর অর্ধাংশ নারীর প্রতি বৈষম্যের বিষয়টি তাই ওই নিরিখে বিচার করে করণীয় নির্ধারণ করা হচেছ বিশ্বমানবসমাজের পক্ষ থেকে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পালন করছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। জাতিসংঘ সকল রাষ্ট্রকে তার সদস্য-রাষ্ট্র হিসেবে ভূমিকা পালন করতে গ্রহণ করছে নানামুখী পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের উল্লেখযােগ্য একটি ফলাফল হচ্ছে, ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘের নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করার ঘােষণা এবং তার ১২ বছর পর ১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ১৩০টি সদস্য রাষ্ট্রের ভােটে সাধারণ পরিষদে সনদ হিসেবে সিডও (CEDAW) গ্রহণ করা। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ বিভিন্ন রাষ্ট্র এই সনদ অনুমােদন ও বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করে স্বাক্ষর দেওয়া শুরু করে। ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে তা কার্যকর হয়। এই সিডও সনদের কিছু ধারায় সংরক্ষণ রেখে বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষর করে।