অন্তর্জাল-বদনহির যুগে বাস্তব পরাবাস্তব সব একাকার হয়ে গেছে। নিকটাত্মীয়দের নিকটে থাকার জন্যও অন্তর্জালে জড়িয়ে পড়া আবশ্যক, না হলে সমূহ বিপদ! ফাইল তলে পড়ে যাবে, ধূলো জমে। যাবে। বদনবহি সব সময় হাতে ঘুরছে। প্রতিমুহূর্তে নতুন মানুষের সাথে যোগাযােগ তৈরি হচ্ছে। একেক জনের বন্ধুর সংখ্যা দেখলে ভয় লেগে যায়। হাজার হাজার বন্ধু। ফেসবুকে জয়েন করার পাঁচ বছর পরেও বন্ধুর সংখ্যা মাত্র সাতশ'র কোটায়! নিজেকে দরিদ্র মনে হয় অবণীর। কিন্তু এই সাতশ'কেই তাে সে চেনে না। সবার পােস্ট স্ট্যাটাস পড়ার সময় কই? চেনা মানুষ দুইশও হবে না। সবাই অচেনা। কিন্তু এই অচেনা মানুষের বস্তিতেই অনেক সময় কেটে যায়। সংসার, সন্তান, চাকরি সব সামলানাের পরেও থাকে আরেক জনের কাছে যাওয়ার আকুলতা! সে এই ফেসবুক। আত্বীয় স্বজনের সাথে যােগাযােগ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের খবরাখবর, তাঁতকাব্যের শাড়ি, স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র, ফেসবুক গ্রুপ, পেন্সিল, SSC 96 HSC 98, পােস্টবক্স, বন্ধু লেখক নুরুল চৌধুরী, বাদশা খালেদ অপু, নাজমুল হুদা, নাইমা পারভিন অনামিকা, তানিয়া ওয়াহাব সবাই এখানে বিচরণ করে। অগ্রজপ্রতীম মাহমুদ রেজা, অঞ্জনা দত্তকে পেতে হলেও সে এই ফেসবুক। সুতরাং এর থেকে দূরে থাকার কোন সুযােগ নেই। হঠাৎ একদিন থমকে গেল অবণী। একটা পােস্টে তার দৃষ্টি আটকে গেল। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। এর আগের দিন এক বাবা নিজ সন্তানকে নিয়ে একটি পােস্ট দিয়েছেন- বেশ হৃদয়গ্রাহী। অবণী বারকয়েক পড়ল পােস্টটি। মন্তব্য বক্সে গিয়ে নিজের কিছু উপলব্ধি শেয়ার করল পােস্টদাতার সাথে। বন্ধু বেশ আগেই হয়েছেন, কিন্তু চোখে পড়ল এখন। যা হয় ফেসবুকের অচেনা বন্ধুত্বে! কয়েক দফায় উত্তর প্রত্যত্তরে শেষ হল মতবিনিময় পর্ব। পরদিন পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলে অবণী মনে রেখেই খোজ করল।