১৯৬০-এর ১৪ এপ্রিলে মুক্তিপ্রাপ্ত ঋত্বিক ঘটকের 'মেঘে ঢাকা তারা বাংলা ভাষায় বাস্তববাদী ধারায় নির্মিত অত্যন্ত উল্লেখযােগ্য ছবি। সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী (মুক্তির তারিখ ২৬,৮,১৯৫৫) এই ধারায় নির্মিত প্রথম ছবি বলা হলেও ঋত্বিক ঘটকেরই ‘নাগরিক' অথবা নিমাই ঘােষের ‘ছিন্নমূল' ছবি দুটি (যথাক্রমে ১৯৫২ ও '৫১-তে মুক্তিপ্রাপ্ত। ঋত্বিকের ছবিটি যদিও হাওড়ার একটি সিনেমা হলে কিছুদিন চলার পর আইনের জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায়) বাস্তবালী ধারার ছবি হিসেবে উল্লেখের দাবি রাখে, এই ধারার সূত্রপাত আরাে আগেই হয়েছিল বিমল রায়ের 'উদয়ের পথে ভুবির মাধ্যমে। ছবিটি মুক্তি পেয়েছি ১৯৪৪-এ। ১৯৪৭-এ দেশ স্বাধীন হবার বছরেই কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হল কলকাতা যিফল সােসাইটি। সিনেমা চর্চার সুযােগ এনে দিয়ে বহু মানুষের মনে চলচ্চিত্রবোধ জাগিয়ে তুলেছিল যেমন এই সােসাইটি, তেমনি উদ্বুদ্ধ করেছিল চলচ্চিত্র নির্মাণে। সােসাইটির সঙ্গে গােড়া থেকেই যুক্ত ছিলেন বংশী চন্দ্র গুপ্ত, চিলান দাশগুপ্ত, সত্যজিৎ রায়, নিমাই ঘােষ, রাধা প্রসাদ গুপ্ত এবং ঋত্বিক কুমার ঘটক। সােসাইটির মাধ্যমেই বিদেশি ছবির সঙ্গে প্রথম পরিচয়, হলিউডের বাইরে যে বসেলিনি, ডিসিকা, আলবার্তো লাতুয়াগা, বুবুনয়েল প্রমুখ চলচ্চিত্রশিল্পের বিশ্ব উন্মুক্ত হল এর ফলে। | সােসাইটির মুখপত্র রূপে প্রকশিত হল “চলচ্চিত্র' নামে একটি পত্রিকা। এখানে কলম ধরলেন এই নবীন চলচ্চিত্রপ্রেমী ব্যক্তিবর্গ, যারা অচিরেই চলচ্চিত্র নির্মাণে নিযুক্ত থেকে আমূল পালটে দেবেন বাংলা ছবির জগতটিকে। এঁদের উদ্যোগেই শুরু হতে পেরেছিল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, কলকাতায়, ১৯৫০-এ।এরই পাশাপাশি ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক জঁ রেনােয় কলকাতায় এলেন 'রিভার ছবি করতে। রামানন্স সেন গুপ্ত নির্বাচিত হলেন ক্যামেরাম্যান হিসেবে আৱ সত্যজিৎ হলেন রেনােয়ার ছায়াসঙ্গী, ছবির লােকেশন দেখা থেকে শুরু করে শুটিং, সর্বত্রই সত্যজিৎ রেনােয়া-সঙ্গী।