| ১৯৫৫ সালের ১২ জানুয়ারি, বুধবার দিনটা ছিল ধূসর, বিষন্ন। সন্ধেবেলায় আকাশ থেকে নেমে আসতে শুরু করল ভারী তুষারকণা, ডেনভারের লােকজন ভেবে নিল যে রকি মাউন্টেন থেকে ধূলিঝড় আসছে। রাত দশটার দিকে পশ্চিম দিক থেকে ঠান্ডা বাতাস বইতে লাগল, পাহাড়ের ঢালে কান্নার মতাে শব্দ উঠল তখন। তুষারকণাগুলাে ছােট হয়ে পড়তে লাগল, একসময় প্রায় বালুকণার মতাে হয়ে এলাে তাদের আকার। ডক্টর পল মার্কওয়েলের স্টাডির জানালায় ঘষা লাগতে বালুর মতােই কর্কশ আওয়াজ তুলতে লাগল সেগুলাে।ডেস্কের পেছনে একটা চেয়ারে বসে নিজেকে উষ্ণ রাখতে স্কচ পান করছিলেন মার্কওয়েল। শৈত্যপ্রবাহের কারণে নয়, বরং মাঝে মাঝে তার মনে হয় যে ভেতরটা চিরস্থায়ীভাবে জমে গেছে। চার বছর আগে তার একমাত্র সন্তান লেনি পােলিও রােগে মারা গেছে, তারপর থেকেই বেড়ে চলেছে মার্কওয়েলের মদপানের অভ্যাস। কাউন্টি মেডিক্যাল থেকে একটা ইমার্জেন্সি কল এসেছে একটু আগে, তা সত্ত্বেও শিভাস রিগালের বােতলটা তুলে নিয়ে আরও একটু ঢেলে নিলেন তিনি। এই ১৯৫৫ সালে বাচ্চাদের পােলিও ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে, যেটা আবিষ্কার করেছিলেন ডক্টর জোনাস সাল্ক। সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আর একটা শিশুও পােলিওমাইলিটিস রােগে মারা যাবে না। কিন্তু লেনি আক্রান্ত হয়েছিল ১৯৫১ সালে, সাঙ্ক তার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার এক বছর আগে। রেসপিরেটরি মাসল প্যারালাইসিসে সাথে সাথে ব্রঙ্কোনিউমােনিয়া দেখা দিয়েছিল, বাঁচার কোনাে আশাই ছিল না লেনির।