উঠোনে মেঘের পালক পড়ে থাকা এক জ্যোৎস্না রাতে, কঙ্কণা নদীর তীরে এক বাউল বালকের ব্যথা কুড়ানোর মধ্য দিয়ে এই বইয়ের শুরু। আর, পাতাঝরার মাঝে মৃত্যুর চিত্রকল্প খুঁজে পাওয়া সত্ত্বেও জীবনের গান গাইতে গাইতে এর শেষ। মাঝখানে মেঘ-তারা-নদী-মাঠ-বিষাদসিক্ত এক দীর্ঘ পর্যটন ঘটে কবির। কোনো পাঠক যখন এই দীর্ঘ ভ্রমণে কবির সঙ্গী হবেন, ভ্রমণ শেষে তিনি হয়ত ভাববেন এই কবির কবিতাযাপনের বয়স বুঝি পঁচিশ ত্রিশ বছর, ইতোমধ্যে তার বুঝি আট দশটি কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু পাঠক যখন জানবেন যে গৌতম অধিকারী মূলত একজন গদ্যকার এবং এটি তার প্রথম কবিতাগ্রন্থ, তখন পাঠকের বিস্ময়ের অন্ত থাকবে না। যেমন বিস্ময়ের শেষ ছিল না আমার নিজেরও। একটি কবিতা যখন তার কাঙ্ক্ষিত নৈঃশব্দ্যে পৌঁছে যায়, তখন কবিতাটির প্রতিটি শব্দ এর ছন্দ, বিষয় ও প্রকরণের সঙ্গে এমনভাবে একাকার থাকে যে, এখান থেকে একটি শব্দ বাদ দিলেই এটি হয়ত আর সার্থক কবিতা হয়ে উঠবে না। “কঙ্কণাতীরে রাত্রি নামে যখন”-এই কাব্যের অধিকাংশ কবিতার ক্ষেত্রে এ কথাটি সত্য। এখানে প্রতিটি শব্দই যেন কথা বলে। প্রতিটি শব্দই যেন অনিবার্য। ছন্দের শাসনে, বিষয়-প্রকরণে, শব্দ ও অন্তমিল নির্বাচনে, সর্বোপরি যেসব কারণে একটি লেখা কবিতা হয়ে ওঠে, সেসব আদি ও শাশ্বত অগ্নিবৃষ্টিকণায় সিক্ত পুরোটা বই। কবি গৌতম অধিকারীর কবিতার আরেকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এর সাঙ্গিতীক ধ্বনিমাধুর্য এবং প্রবহমানতা। একবার পড়তে শুরু করলে এর অন্তঃস্রোত টেনে নিয়ে যাবে শেষ অবধি। কিছু কিছু কবিতায় একইসঙ্গে অক্ষরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্তের দোলাচল কবিতাগুলোকে করেছে আরও মায়াবী এবং প্রাণময়। জ্যোৎস্না দিয়ে জননীর আলপনা আঁকা কবিতাগুলোতে আছে চাষাভুষার কথা, পিতার পিঠের চাবুকের দাগ আর তাদের দীর্ঘ শোষণের ইতিহাস। আছে লিবিডো চেতনা-তার সাথে মেঘ, নদী, তারা কিংবা প্রান্তরের আশ্চর্য সন্মিলন। আর আছে ইহজীবনের এক শাশ্বত প্যারাডক্সঃ ‘শিথানে সোনার কাঠি পৈথানে পিশাচ, সময়শরীরে খুঁজি আগুনের আঁচ।‘ বাংলা কবিতার মোহনসাম্রাজ্যে, কবি গৌতম অধিকারী, আপনাকে সালাম। জাকির জাফরান
গৌতম অধিকারী এর কঙ্কণাতীরে রাত্রি নামে যখন এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 96.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। kongkonatire-ratri-name-jokhon by Gautam Adhikariis now available in boiferry for only 96.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.