মামাকে আমি পছন্দ করি না। একদম না। যদিও শাস্ত্রে আছে নানং মাতুলানাং মানে কিনা, নানুৰ লর মামাদের মতাে স্বভাব, গুণ পেয়ে থাকে। কী যুক্তি! তাহলে কংস মামার ভাগ্নে কৃষ্ণ হয় কী করে? যজেল! আমার মামার নাম- অম্বিকাচরণ। এই একটাই মামা আছে আমার। নষ্ট মামার চেয়ে যেমন কানা মামা থাকা ভালাে, তেমনি একেবারে মানা না থাকার বদলে অম্বিকা চরণের মতাে এক আধটা মামা থাকা একেবারে খারাপ না! তারপরও আমি সুখী না । অম্বিকা চরণ যে মানুষ হিসাবে খারাপ তাও না। উনি মাতাল- লম্পট বা ভবঘুরে কোনােটাই নন। উনার মধ্যে এমন কোনাে দোষ নেই যে সাধারণ মানুষজন তাকে অপছন্দ করবে। বরং আর দশজন মানুষ তাকে ভদ্র-বিনয়ী আর বেশ শান্তশিষ্ট মানুষ হিসেবেই চেনে। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে হিসাব করলে দেখা যাবে উনি আমার চেয়েও বেশি জনপ্রিয়। অম্বিকা মামা দেখতে বেশ চৌকস। লম্বা ঝাড়া ছয়ফুট । কাঁঠালের কোয়ার মতাে উজ্জ্বল হলুদ গায়ের রঙ। মাথা ভর্তি চুল। মাঝখানে সিঁথি করা। দুইপাশ দিয়ে চুল ঝুলে আছে। চোখ জোড়া উজ্জ্বল, নতুন পয়সার মতাে চকচক করছে। ইয়া মােটা পেল্লাই এক জোড়া গোঁফ। প্রায়ই মােম দিয়ে পাকিয়ে রাখেন। গোঁফের দুই প্রান্ত আবার কায়দা করে উপর দিকে তােলা। ঠিক যেন জঙ্গলের দুর্দান্ত ডাকু সর্দার!