হোমিওপ্যাথিক জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত। কিন্তু মানুষের মতো বিচিত্র ও বহুমাত্রিক সত্ত্বার মেরামত কর্মও নিতান্ত কম বিচিত্র ও কম পরিধিযুক্ত নয় । বলা যেতে পারে, এই জটিল মানুষের আরোগ্যকার্য যথাযথরূপে, দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে- বিচিত্র রোগী, তাদের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা, কন্সটিটিউশন, মায়াজমের প্রভাব, রোগের বিভিন্ন দশা, জটিলতা ও বহিঃপ্রকাশের ভিত্তিতে বোধযোগ্য উপায়ে আরোগ্য করার লক্ষ্যে হোমিওপ্যাথির মনীষীগণ তাদের চিন্তা ও গবেষণাকে ব্যাপৃত রেখেছেন আজীবন। আর তারই দরুন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রকারের প্রেসক্রিপশন টেকনিকের উদ্ভব, বিকাশ, বিবর্তনের রূপরেখা আমরা আমাদের শাস্ত্রগুলোতে পাবো । বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথগণের মধ্যে যারা হোমিওপ্যাথির মূলনীতি মেনে চিকিৎসা করতে চান- তাদের মধ্যেও জ্ঞাতসারেই হোক আর অজ্ঞাতসারেই হোক- মূলত দুই প্রকারের প্রেসক্রিপশন টেকনিক ব্যবহার করে থাকেন। একটি পদ্ধতি খুব বেশি উৎসাহব্যঞ্জক নয়; আর তা হচ্ছে থেরাপিউটিক এপ্রোচ। অর্থাৎ, কোনো একটি রোগ বা নির্দিষ্ট লক্ষণগুচ্ছকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র ঔষধ নির্বাচনের চেষ্টা । উৎসাহব্যঞ্জক নয় বলছি এ কারণে যে, এর বহুপ্রকারের অপব্যবহার রয়েছে এবং খুব সহজেই পদ্ধতিটি একজন চিকিৎসকের চিন্তাকে ভুল খাতে প্রবাহিত করতে পারে। কিন্তু কখনো কখনো বা বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে, এই এপ্রোচটিও অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়, এরও একটি পরিসীমা রয়েছে- যেখানে এটি অনিবার্য পরিস্থিতিবশতঃ অতি দ্রুত ও সহজে সঠিক ঔষধ নির্বাচনের পন্থা হতে পারে। এ ব্যাপারে যথা সময়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করবো । তবে এর ত্রুটি সম্বন্ধে অবগত হয়ে, এর অপব্যবহার রোধকল্পে বা এর সীমাবদ্ধতাকে টের পেয়ে- বহু চিকিৎসক চেষ্টা করেন কন্সটিটিউশনাল অথবা ক্লাসিক্যাল চিকিৎসা করতে। কিন্তু সেখানেও রয়েছে আরেক বিপত্তি । অধিকাংশ চিকিৎসকই ক্লাসিক্যাল আর কন্সটিটিউশনাল ট্রিটমেন্টকে গুলিয়ে ফেলেন; নিদেনপক্ষে একটি বৃহৎসংখ্যক চিকিৎসকের মাঝে যে অস্পষ্টতা রয়েছে তা নিশ্চিত। কিন্তু সেই অস্পষ্ট ধারণাটুকু