কৃষণ চন্দর—আমার বন্ধু, আমার সহগামী—এই টেকোটাকে আমি দু চোখে। দেখতে পারি না (অবশ্য আমি তার চেয়েও বেশি টেকো)। যখন তার সাথে আমার আদৌ পরিচয় হয় নি, তার নামটা শুনেই আমার গা জ্বালা করে উঠত । কারণ, যেখানেই তার নাম ছাপা হতাে, নামের সাথে ডিগ্রির লেজুড়টাও বেমালুম জুড়ে দেয়া হত । কৃষণ চন্দর এম, এ.ছিঃ এটা একটা কথা হল? তুমি বাবা এম, এ. পাস করেছ (আমি মনে মনে বলি) তাে আমি কি করব? আমার কি আসে যায় তাতে? কালিদাস তাে কোনদিন বিদ্যালংকারের লেজুড়টা তাঁর নামের সাথে জুড়ে দেন নি। মির্জা গালিব কি আলেম ফাজেল পাস ছিলেন? শেপীয়র বেচারিতাে ম্যাট্রিক পাসও ছিলেন না। কেউ যদি বলেন আর্মস এন্ড দি ম্যান নাটকটি রচনা করেছেন বার্নার্ডশ বি. এ.—তাহলে লােকেরা হাসবে না? এখন চিন্তা করুন কৃষণ চন্দর এম, এ.-টা কেমন ঠেকছে। | অবশেষে এই হতভাগার সাথে একদিন দিল্লির পুরনাে রেডিও স্টেশনে দেখা হয়ে গেল আমার। দেখে মনে হল আর যাহােক হতভাগার চেহারাটা কিন্তু মন্দ । অবশ্য ইতিপূর্বেও আমি কৃষণ চন্দরের ছবি পত্রিকায় দেখেছিলাম। বড়বড় চোখ, চওড়া কপাল ও কোঁকড়ানাে চুল। কোট-প্যান্ট-টাই মিলিয়ে বেশ স্মার্ট দেখাচ্ছিল। এজন্যেই তাে কলেজের মেয়েরা তার রােমান্টিক গল্প পড়ার জন্যে পাগল—আমি মনে মনে বললাম। ভাবতাম আসলে ছাপান ছবিটা ফটোগ্রাফাররা রিটাচ করে নিয়েছিল হয়ত, যাতে রােমান্টিক গল্প লিখিয়ের চেহারাটাও রােমান্টিক হবে, যা কোনদিন হয় না। কিন্তু তার সাথে দেখা করে আমার সে ভুল ভাঙল। আমার মেজাজটা এবারে। আরাে বিগড়ে গেল তার উপর। মনে মনে বললাম, হায় খােদা, একটা লােকের