ৰােধনে তােমার রােদনের রােল ওঠে বাঙলার বক্ষ চিরে এর মাঝে মাগো, তোমার সাধনা? হবে না হবে না, যাও মা ফিরে! এই বাংলার শিনের মাঝে তব আহবান মিথ্যা কথা। মরুভ-বুকের তপ্ত নিশাসে 'আনেরা যে বাড়িতে দ্বিগুণ ব্যথা। পথের নাহিক নিশানা তাহার, ঘরের ঠিকানা মেলে না তার, পথ-কন্টকে ক্ষতবিক্ষত, নুয়ে-পড়া পিঠে অসহ ভার! স্তিমিত নয়ন করিছে বয়ন নিশিদিন বিনিসুতার মালা কড়ে পড়ে গুল, পরাণ অাবুল, নিভে যায় চোখে দিনের আলা! দুর্বল দেহ কাঁপে থর থর, জলে ভরভর নয়ন দুটি, আধমরা প্রাণ চাপিছে সবলে শুশানপ্রেতের বিরাট মুঠি, একটি জীবনও নাই যে হেথায়, ছায়া-দেহ নিয়ে বসেছে মেলা, এই শশানের মরাদের নিয়ে তুমি কি খেলিবে মৃত্যু খেলা? হিমালয় তব সুখের আলয়, শক্তি নিচয় পাষাণে আছে, দূর হতে সে যে অতি দুর্গম এই শ্মশানের মার কাছে! তুষার ভূষার মহামহিমার কি জানিবে ছার মর্তবাসী, শরতের আলাে ঢেকেছে, তাদের মরতে মলিন ধূলির রাশি! আজিকে পবন করে না পবন, কালাে শরতের প্রভাত আলাে মুখ গুড়ে থাকা আঁধার আড়ালে সেই আন্ড যেন লাগে মা ভালাে। কোথা এতটুক প্রাণ ধুক ধুক কঙ্কালসার দেহের মাঝে, কোটর হইতে চোখ দুটি যেন টুটে এসে ফুটে বক্ষে বাজে! ক্ষুধার অন্ন জোটে না যাদের দারুণ তৃষায় মেলে না জল, ষােড়শােপচারে কেমনে তাহারা আজ তােরে মাগো পূজিবে বল? বাঙলার পথে কণ্টকেয়ারী সাদা বাচড়ায় আগাছা ভরে; চন্তীর ঘরে আজি কুরে দিবসে শেয়াল খোল ধরে; সারা বাংলার সকল খামার দাগী বুকে নিয়ে রয়েছে পড়ে' হেকে চলে হু হু এলােমেলাে বায় পাঁজরের হাড় ওঠে যে নড়ে মারী রাক্ষস মুর বুকে করে' তাথিয়া তাথিয়া নাচিছে ঘরে, দুর্ভিক্ষের বিষ নিঃশ্বাসে বাঙলার গ্রাম উঠিছে ভরে'। ওগাে মহামায়া, আশ্বিনে আজ মহা দুর্দিন এসেছে ফিরে, মহা-উৎসব কে করিবে মাগাে, বালার মরা গাঙের তীরে? সারা বাংলায় শুধু হায় হায়, প্রাণ ফেটে যায় সহে না আর বুক ভেসে যায় আঁখিজলে যার সে আভা কৰিৰে সাধনা মা'র? ইবনু মাজার