গলফ গার্ডেন্স -এর নয়নতারা ' ফ্ল্যাটে বুড়ােরা যে শেষ পর্যন্ত সত্যি সত্যি এসে বসবাস করবে, বছর খানেক আগেও মানিক তা ভাবেনি। দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সুবাদে বুড়াের স্বভাব ওর জানা। কুঁড়ে কিংবা অলস না হলেও, এক জায়গা থেকে আর একজায়গা ঠাইনাড়া হতে ওর যে ঘােরতর আপত্তি, মানিক জানে। কারণও একেবারে নেই তা নয়। কিংবা বলা উচিত ছিল না, তা নয়। ভবানীপুর পদ্মপুকুরে পুরােনাে পৈতৃক বাড়ির প্রতি বুড়াের বরাবরই একটা দুর্বলতা ছিল। থাকারই কথা। আসল বাড়ি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে হলেও, মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় থেকে ওই বাড়িই ছিল ওর ঠিকানা। এমনকি | পাশ করার পরে বিলেত থেকে ঘুরে এলেও বাড়ি থেকে নড়তে চায়নি। একইসঙ্গে অ্যানেসথেশিয়ার প্র্যাক্টিস এবং মাঝে মধ্যে সত্যান্বেষীর ভূমিকায় খুনখারাবির রহস্য সমাধানে জড়িয়ে পড়া, দুটোই দিব্যি চলছিল ওবাড়ি থেকে। শেষপর্যন্ত শেলির যুক্তি-ইচ্ছে এবং অনুরােধের কাছে বশ্যতা না-মেনে পারল না ডাক্তার সােমদেব গুহু, ওরফে বুড়াে। মানিক যদিও জানে, বশ্যতা। স্বীকারটা আসলে বুড়াের স্ত্রীর প্রতি আনুগত্য দেখানাের প্রয়াস হলেও, মনে। মনে এবং দিনেদিনেও নিজেই বুঝেছিল, নয়নতারা' অ্যাপার্টমেন্টে সকন্যা। ওদের উঠে আসাটা সবদিক থেকেই যুক্তিযুক্ত হবে।