আমাদের সামাজিক চলমানতা, শ্রমিক-কৃষকের উৎপাদন ক্ষমতা এবং দৃশ্যমান প্রবৃদ্ধির গুণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীলদের মধ্যে আলােচনার বস্তু। পরপর কয়েক বছর দুর্নীতিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এই প্রবৃদ্ধি কী করে দেশটা অর্জন করছে? তাহলে কি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দুর্নীতির তেলচর্বিতে অর্থনীতির চাকা ঘােরে? এসব নানা প্রশ্ন অর্থনীতিবিদদের মাতিয়ে রেখেছে। এত প্রশ্ন যে, উত্তর দেওয়া যায় না। যদি একান্তই একটিমাত্র উত্তর থাকে তবে সে হচ্ছে, আমাদের নতুনকে খুব সহজে গ্রহণ করার মানসিকতা, সে ধানের সার সেচের রকমভেদ ও কাপড়ের ডিজাইন বা গড়নই হােক। যখন দেশে তাম্রমুদ্রা চালু ছিল, তখন তামার বিষ বলে একটা কথা প্রচলিত ছিল। এখন টাকার বিষয় আছে এবং বর্তমানে সে সমাজ সে বিষে জর্জরিত। আমরা কি জানি পৃথিবীটা কার? এই উত্তর ওই প্রশ্নের ভেতরেই রয়েছে। তবে এটাও সত্য, মুদ্রার কোনা কেটে আর মেকি মুদ্রা রাঙা করে তাকে আমরা যে লেবাসই পরাই না কেন, তা অবশেষে সাত হাটের কানাকড়ির মতাে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসবে। আজ পৃথিবীতে বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তা শ্রম পাওয়া যায় বলে নাম ফেটেছে। এ কি সুনাম, না এক অপমানজনক অভিধা? সুলভ শ্রমের জন্য দেশে ও বিদেশে আমাদের আকর্ষণ। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে জাতিসংঘের শান্তি বাহিনীতেও আমাদের নিয়ােগ। শুধু লাভের দিকে না তাকিয়ে সার্বিক কল্যাণের কথা স্মরণে রেখে, দেশে আরব বসন্তের যেন প্রাদুর্ভাব না হয় সে কথা ভেবে আমাদের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে যথাসময়ে । প্রতি বছর ঈদ বােনাস দেওয়ার ব্যাপারে যে গড়িমসি দেখা যায় তাতে মনে হয় না, এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায় তার কথা মনে রেখেছে, শ্রমিকের দেহের ঘাম শুকানাের আগেই তার পাওনা চুকিয়ে দাও।