Loading...

দেবদাস (হার্ডকভার)

স্টক:

১৬০.০০ ১১২.০০

একসাথে কেনেন

"দেবদাস" বইটির ভুমিকা থেকে নেয়াঃ
‘দেবদাস' (১৯১৭) শরৎচন্দ্রের অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস। তা সত্ত্বেও ‘দেবদাস’ শরৎচন্দ্রের প্রতিভার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন নয়। এর মধ্যে ভাবপ্রবণতার যথেষ্ট পরিচয় রয়েছে। তব দেবদাসের মধ্যেই শরৎ প্রতিভার বৈশিষ্ট্যের ছাপ রয়ে গেছে।
ছেলেবেলায় দেবদাস ও পার্বতী একই পাঠশালায় পড়ত। তখন থেকেই তাদের মধ্যে গভীর ভালবাসার সঞ্চার হয়েছিল। এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে কথা তা হল, শরৎসাহিত্যে পাঠশালা বাগদেবীর পীঠস্থান হােক বা না হােক প্রেমের দেবতার প্রধান লীলাভূমি। এখানে রমার সঙ্গে রমেশের দেখা হয়, রাজলক্ষ্মী-শ্রীকান্তর গলায় বৈচিরমালা পরায়, পার্বতী দেবদাসকে পায়। যা হােক, গভীর ভালবাসা হওয়া সত্ত্বেও পার্বতী ও দেবদাসের মধ্যে বিয়ে হতে পারে না—কারণ পার্বতীর চেয়ে দেবদাসের বংশগৌরব বেশি। কিন্তু পার্বতীর কাছে এইসব সামাজিক মান-মর্যাদার মূল্য কম। তাই তাে সে দেবদাসকে বলে বাপমায়ের অবাধ্য হতে। তাকে বিয়ে করতে। দেবদাস বলিল, “বাপমায়ের অবাধ্য হইব?’ পার্বতী উত্তর করিল, “দোষ কি?’ পার্বতীর মধ্যে একটা সাহস আছে যার তুলনা মেলে শুধু অভয়ার চরিত্রে। এই সাহসের জোরেই মনােরমার কথার উত্তরে সে দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বলে, “না নিতে এসেছিলাম। এখানে আপনার লোক ত কেউ নাই।' মনােরমা অবাক হইল। কহিল, “বলিস কি? লজ্জা করত না?’ ‘লজ্জা আবার কাকে? নিজের জিনিষ নিজে নিয়ে যাব তাতে লজ্জা কি?
পার্বতীর এই সাহস ছিল, নিজের জিনিসকে নিজের বলে দাবী করবার। আর এখানেই পার্বতীর স্বাতন্ত্র।
পার্বতী এই উপন্যাসে সর্বংসহা বাঙালি নারীর চিরায়ত প্রতিমূর্তি। প্রেমের ফসল পরিণতির জন্যে তার আকাঙ্ক্ষা ও প্রয়াসের কোনাে কমতি নেই। কিন্তু যখন ব্যর্থতা তাকে প্রবলভাবে গ্রাস করলাে, তখন সে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে নীরবে মেনে নিতেও দ্বিধা করে নি। বৃদ্ধ ভুবন চৌধুরীকে বিয়ে করতেও তাই সে বিন্দুমাত্র উৎসাহ কিংবা অনুযােগ প্রকাশ করে নি। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে স্বামী ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে থাকলেও তার হৃদয়ের গভীরে সবসময় বিরাজ করেছে দেবদাদা।
দেবদাস উপন্যাসের শাখা-কাহিনী চন্দ্রমুখী উপাখ্যান। দেবদাসের চারিত্রিক মহিমা এবং তার বিপন্নতা প্রকাশের জন্যে চন্দ্রমুখীর উপস্থিতি উপন্যাসে একান্তই জরুরি ছিল। চন্দ্রমুখী এ উপন্যাসে বিড়ম্বিত নারীদের এক জীবন্ত প্রতিবাদ। তার সত্যি কথা বলার সৎ সাহস ছিল, ছিল প্রেম ও মমতা। তাই তাে দেখি, দেবদাসের চরম মানসিক বিপন্নতার সময়ে চন্দ্রমুখী সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে গিয়ে দেবদাস যখন মদে আসক্ত হয়ে আশ্রয় খুঁজেছে চন্দ্রমুখীর অন্ধকার গৃহকোণে, তখন চন্দ্রমুখী পরম মমতায় ও ভালবাসায় তাকে আশ্রয় দিয়েছে, ভালবেসেছে নিঃস্বার্থভাবে। আর সেজন্যেই আমাদের নির্দ্বিধায় বলতে হয়, চন্দ্রমুখী বারবণিতা হলেও মানবিক হৃদয়ানুভূতিতে সে সামাজিক কোনাে নারীর তুলনায় ছােট নয়।
তালসােনাপুরের জমিদার নারায়ণ মুখুয্যের ছেলে দেবদাসের ব্যর্থ প্রেম নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘দেবদাস' উপন্যাসের কাহিনী। এ উপন্যাসের নায়ক দেবদাস। পার্বতীর সঙ্গে কৈশােরে যে ভালবাসা গড়ে উঠেছিল, যৌবনে সে ভালবাসার ব্যর্থতা-যন্ত্রণা থেকে দেবদাসের জীবন-অসঙ্গতি এ উপন্যাসের মূল উপজীব্য। ভাল মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার সব সম্ভাবনা দেবদাসের মধ্যে থাকলেও, প্রেমের ব্যর্থতায় সে হয়ে পড়ে অন্ধকার জগতের নষ্ট মানুষ। শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে নিরাশ্রিত ও নিঃসঙ্গ মানুষের যে ছবি চিত্রিত হয়েছে, দেবদাসের জীবনেও আমরা সে নিরাশ্রয়তা ও নিঃসঙ্গতার সংক্রমণ লক্ষ্য করি। প্রেম-বিচ্ছিন্নতাই তার জীবনে উপ্ত করেছে নিরাশ্রয়তা ও নিঃসঙ্গতার বীজ। মানুষের জীবনে নিরাশ্রয়তা, নিঃসঙ্গতা ও অসঙ্গতির যে কুষ্ট-ছোঁয়া দেখি, শরৎচন্দ্রের দেবদাস বৃহৎ অর্থে তাদেরই পূর্বপুরুষ। প্রেমের ব্যর্থতা, শত-সম্ভাবনা সত্ত্বেও দেবদাসকে সমাজের সঙ্গে বেমানান মানুষে পরিণত করেছে; যার পরিণতিতে জীবনের সুর আর সঙ্গতি থেকে ঘটেছে তার বিচ্যুতি। কিন্তু জীবনের সুর ও সঙ্গতি থেকে বিচ্যুতি ঘটলেও, মনুষ্যত্ববােধ সে একেবারে বিসর্জন দিতে পারে নি। পিতার মৃত্যুর পর জমিদারী ভাগাভাগির প্রসঙ্গে ভাই দ্বিজদাসের সার্থবাদী চিন্তার পরিবর্তে দেবদাসের দায়িতশীল সিদ্ধান্তই তার উজ্জ্বল প্রমাণ। অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময়েও চন্দমখীকে অ সাহায্য করতে দেখি দেবদাসকে। মদ সে খেয়েছে সত্যি কিন্তু মদে তাকে কখনাে মাতাল করতে পারে নি। বস্তুত দেবদাসের মনে সব সময়ই জাগরূক ছিল পার্বতীর স্মৃতি। পার্বতীকে, সে কখনােই ভুলতে পারে নি। আর ভুলতে পারে নি বলেই ব্যর্থতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে সে মদে আসক্ত হয়েছে। চন্দ্রমুখীর দ্বারস্থ হয়েছে একটু শান্তির অন্বেষায়। কিন্ত শান্তি তার নাগালের বাইরেই থেকে যায়। নিরাশ প্রেমের তাড়নায় নির্লজ্জ উচ্ছলতা-স্রোতে ভেসে গিয়ে ঘৃণিত ও শােচনীয় মৃত্যুকে বরণ করে নেয় সে। আর সে জন্যেই পাঠকের মনের সম্পূর্ণ সহানুভূতি দেবদাসের প্রতিই বর্ষিত হয়।
শরৎচন্দ্রের প্রথম বয়সের রচনার মধ্যে দেবদাস উপন্যাসটি সর্বশ্রেষ্ঠ। এ উপন্যাসেই তাঁর প্রতিভার আভাস পরিলক্ষিত হয়। যদিও তার বিকাশ হয় নি। শরৎচন্দ্রের অধিকাংশ উপন্যাসের মতাে এ উপন্যাসেরও প্রধান লক্ষ্য চরিত্র সৃষ্টি। আখ্যায়িকা চরিত্র সৃষ্টির বাহন হিসেবেই উদ্ভাবিত। মানুষের মনের বিচিত্রিতা প্রকাশ করতেই তিনি এর কাহিনীসূত্র গেঁথেছেন। কিন্তু উপন্যাসের শিল্পমূল্য বিচার করলে দেখা যায়, তিনি চরিত্র সৃষ্টির উপযােগী কাহিনী উদ্ভাবনে ব্যর্থ; আর এই ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে অবিশ্বাস্য ঘটনা ও ভাবাতিশয্যপূর্ণ বক্তৃতার অবতারণা করেছেন অনেক জায়গায়। চন্দ্রমুখী সম্পর্কিত কাহিনীই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তারপরও বলতে হয়, এ উপন্যাসের প্লট সরল; উপন্যাসের বিকাশও ঘটেছে সরল, একমুখী ও একরৈখিকভাবে। দেবদাসের কাহিনী বর্ণনায় আছে মােহনীয় যাদু, এর ভাষায় আছে কবিতার লাবণ্য, যা তীব্র আকর্ষণে পাঠককে মুগ্ধ করে রাখে। আবেগপ্রবণ বাঙালি পাঠকমাত্রই দেবদাস উপন্যাসটি পড়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠে। দেবদাস’-এর সার্থকতা এখানেই আর এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের।
Debdas,Debdas in boiferry,Debdas buy online,Debdas by Saratchandra Chattopadhyay,দেবদাস,দেবদাস বইফেরীতে,দেবদাস অনলাইনে কিনুন,শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর দেবদাস,9847015400480,Debdas Ebook,Debdas Ebook in BD,Debdas Ebook in Dhaka,Debdas Ebook in Bangladesh,Debdas Ebook in boiferry,দেবদাস ইবুক,দেবদাস ইবুক বিডি,দেবদাস ইবুক ঢাকায়,দেবদাস ইবুক বাংলাদেশে
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর দেবদাস এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 112.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Debdas by Saratchandra Chattopadhyayis now available in boiferry for only 112.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন হার্ডকভার | ৭৮ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2015-02-01
প্রকাশনী জয় প্রকাশন
ISBN: 9847015400480
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
লেখকের জীবনী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Saratchandra Chattopadhyay)

৩১শে ভাদ্র, ১২৮৩ - ২রা মাঘ, ১৩৪৪ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়া এবং বাংলা ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক।[২][৩] তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎ চন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস।[২] বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷[৪] এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে 'ডিলিট' উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।

সংশ্লিষ্ট বই