চূড়ার কাছাকাছি ঘন একটা জুনিপার ঝােপের ভিতর ঘােড়াসহ লুকিয়ে রয়েছে নিক কার্টার। পাহাড়ের নিচে থেকে কারও চোখে পড়বে না। শৈলশিরার ওপাশটা কোনাে মতে দেখতে পাচ্ছে। এক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও যখন আর ধুলাে দেখা গেল না, বুঝল, বিপদে পড়েছে সে। চারপাশটা নিথর হয়ে আছে । তাপমাত্রা অনেক। তার গাল বেয়ে চওড়া কাধে টপটপ ঘাম ঝরছে। শার্টের তলায় পেশিবহুল ছিপছিপে দেহটাও ঘামে ভেজা। ভীষণ গরম। এমন দিনে ধুলাে ওড়াটা অস্বাভাবিক নয়। থেকে থেকেই ধুলাের খুদে ঘূর্ণিও চোখে পড়ে। তবে সে যেটা দেখেছে, সেটা বাতাসের কারণে হয়নি, নিশ্চয় ঘােড়সওয়ার। লম্বা একটা রেখা সৃষ্টি করে ধুলাে উড়তে উড়তে হঠাৎ করেই গায়েব। তারমানে তাকেও দেখে ফেলেছে ধুলাে সৃষ্টিকারী। লােকটা শ্বেতাঙ্গ হলে আক্রমণের ভয়ে কোনাে গিরিখাতে লুকিয়ে পড়েছে। এতক্ষণে, আর অ্যাপাচি ইন্ডিয়ান হলে এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে চুপি চুপি। তীচ চোখে নিচের তরাই অপলে নওর বােলাল সে। পাথর, ঝােপঝাড় কোনাে কিছুই বাদ দিলাে না। কিন্তু সন্দেহ করার মতাে কিছু নেই। কোনাে শব্দ নেই, নেই কোনাে নড়াচড়া। নড়ল না নিক। বাঁচতে চাইলে ধৈর্য হারানাে চলবে না। ভয়ানক চেহারার একটা নেড়ি কুকুর তার সঙ্গী। কয়েক গজ দূরে আরেকটা জুনিপার ঝােপে মাটিতে পের্ট ঠেকিয়ে অদৃশ্য হয়ে আছে ওটা! পথ হারানাে কিছু হালকা সাদা মেঘ তামাটে আকাশের অনেক ওপরে ইতিউতি ভাসছে। মাঝে মাঝে দুর্লভ ছায়া ফেলছে মরভূমির বুকে। প্রকৃতি, কিছুই নড়ে না। অনেক অনেক দূরের এক হারানাে দেশ যেন এটা, যেদিকেই তাকানাে যাক শুধু ধূসর নীরবতা আর রক্ষ বিস্তার, শূন্য দিগড়ে ধাক্কা খেয়ে যেন ফিরে আসে দৃষ্টি। মেঘের কাছাকাছি অলস ভঙ্গিতে ডানা মেলে ভাসছে একটা নিঃসঙ্গ শকুন।