ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা
বাংলাদেশে বৈচিত্র্য ও প্রকার অনুযায়ী সবচেয়ে বড় ঔষধি বৃক্ষের বাগান রয়েছে গাজীপুরের হোতাপাড়ায় অবস্থিত নুহাশ পল্লীতে। এখানে রয়েছে শতাধিক ঔষধি বৃক্ষ - আদা, কদম্ব, গাঁজা, বেল, বাসক, বকফুল, শেওড়া, পারিজাত, জয়তান, অশ্বগন্ধ.... এই ঔষধি বাগানটি গড়ে তুলেছেন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদের বৃক্ষপ্রেমের পরিচয় শুধু তাঁর নিজের তৈরি নন্দকানন নুহাশ পল্লীই নয়, তাঁর গল্প-উপন্যাসের পাঠকরা জানেন যে, তার নানা লেখায়ও রয়েছে বৃক্ষপ্রেমের নিদর্শন। বৃক্ষপ্রেমিক হুমায়ূন আহমেদ ৫০টি ঔষধি বৃক্ষের নানা গুণাগুণ আর মজার সব তথ্য নিয়ে লিখেছেন ‘বৃক্ষকথা’ বইটি।
ভূমিকা
আমার খুব পছন্দের একটা হাদিস দিয়ে শুরু করি। নবিজি (দ.) বলছেন, ‘যদি তুমি জানো পরের দিনই রোজ কেয়ামত, তারপরেও একটি গাছ লাগিও।’ গাছ লাগানোর কোনো সুযোগ আমার ছিল না। সারাজীবন বাস করেছি শহরে। কংক্রিটে খুঁড়ে তো আর চারা লাগানো যায় না। অনেকেই দেখি টবে গাছ লাগান। ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে না। টবে গাছ লাগানোর অর্থ গাছের ভুবন সীমিত করে ফেলা। এমনিতেই বেচারা হাঁটতে পারে না। অনেককেই দেখি ‘বনসাই’ নিয়ে উত্তেজিত। বিশাল বটবৃক্ষের বামুন বানিয়ে উত্তেজিত হবার কী আছে? একটি বিশাল প্রাণকে সঙ্কুচিত করার অপরাধে তারা অপরাধী। বৃক্ষদের হাতে শাসনক্ষমতা থাকলে এই অপরাধে তারা যাবজ্জীবন শাস্তির ব্যবস্থা করত। মানবজাতি ভাগ্যবান, বৃক্ষের হাতে শাসনক্ষমতা নেই। প্রায় দশবছর আগে নুহাশ পল্লীতে আমি নিজের হাতে আটটা ঝাউগাছ লাগাই। তখন কল্পনাও করি নি, এই ছোট ছোট চারা আকাশ স্পর্শ করার স্পর্ধা নিয়ে বড় হবে। আমি যতবার নুহাশ পল্লীতে যাই, একবার হলেও ঝাউগাছগুলির পাশে গিয়ে দাঁড়াই। তাদের স্পর্শ করে বলি-‘এই তোদের আমি নিজের হাতে লাগিয়েছি! আজ যে তোরা এত বড় হয়েছিস, তার মূলে কিন্তু আমি।আমাকে Hello বল।’ ঝাউগাছগুলি আমাকে বলে। তাদের ভাষায় বলে। অন্যরা না বুঝলেও আমি বুঝি। ঝাউগাছ দিয়েই আমার বৃক্ষরোপণ শুরু। যেখানে যে গাছ পাই, নুহাশ পল্লীতে লাগিয়ে দেই। নিতান্তই অপরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ। কাঁঠালগাছের পাশে মরিচের গাছ। তখনো জানি না গোলমরিচ গাছ অন্য এক গাছকে জড়িয়ে না ধরে বড় হতে পারে না। সে তার জীবনীশক্তি বড় কোনো গাছ থেকে নেয়। এখন আমি গাছপালা সম্পর্কে কিছু জানি। দুনিয়ার বই পড়ছি ইন্টারনেট ঘাঁটছি-কেন জানব না? যা কিছু জেনেছি তা অন্যদের জানাতে ইচ্ছা করছে। আমার মূল আগ্রহ ঔষধি গাছ। আমার কেন জানি মনে হয়, একসময় এদের কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবে।
হুমায়ূন আহমেদ
নুহাশ পল্লী
গাজীপুর
সূচিপত্র
*আদা
*কদম্ব
*গাঁজা
*বেল
*পান
*বাসক
*অগুরু বা অগর
*কলকে/সৌভাগ্য বাদাম বৃক্ষ
*তেঁতুল
*কাঁকড়ার চোখ
*নিসিন্দা
*বিলম্বী
*নিম
*খয়ের
*কৃষ্ণবট
*ঘেটু
*পুত্রঞ্জীব
*রাণীর ফুল/জারুল
*লটকন
*হিং
*বরুন
*তেলাকুচা
*করমচা
*পপি
উদয়পদ্ম
*নীলমণি লতা
*মাধুরী লতা
*বাগান বিলাস
*জবা
*ঘৃতকুমারী
*মৃত্যুফুল
*বকফুল
*ওলট কম্বল/শয়তানের তুলা
*ওলট চণ্ডার/অগ্নিজিহ্বা
*বলকলা না-কি কলাপতি?
আম
*কাঁঠাল
*বিছুটি
*লাজ্জাবতী
*আতা
*ঢেঁকি শাস
*তালগাছ
*শয়তানের গাছ/ছাতিম
*গাব
*ধূপগাছ/গুগগুল
*বকুল/সদাপুষ্প
*মাকাল
*রিঠা
হুমায়ূন আহমেদ এর বৃক্ষকথা এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 255.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Brikkhokotha by Humayun Ahmedis now available in boiferry for only 255.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.