মহাভারতকে হিন্দুরা একটি মহামূল্য ঐতিহাসিক গ্রন্থ বলিয়া গণ্য করেন। আকবর বাদশাহের আদেশে শেখ মােবারকের পুত্র শেখ আবুল ফজল মূল সংস্কৃগ্রন্থ হইতে পারস্য ভাষায় ইহার কাব্যানুবাদ করেন। ইহাতে লক্ষাধিক শ্লোক আছে। অত্র ইতিহাসের লেখক মুহাম্মদ কাসিম ফিরিশতা সেই অনুবাদের সংক্ষিপ্তসার অবলম্বনে তার এই ইতিহাসের মুখবন্ধ রচনা করিয়াছেন। ভারতবর্ষের দার্শনিক ও ঋষিরা তাহাদের স্বপ্ন-ধারণানুযায়ী বিশ্বসৃষ্টি সম্বন্ধে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করিয়াছেন। এক মহাভারতেই ত্রিশটি বিভিন্ন বিবরণ প্রদত্ত হইয়াছে, যাহাদের একটিও যথেষ্ট সন্তোষজনক নয় যে, আমরা অন্যগুলি বাদ দিয়া সেইটি গ্রহণ করিতে পারি। হিন্দুরা মহাকালকে চারিযুগে বিভক্ত করিয়াছেন । প্রথম সত্যযুগ; দ্বিতীয় ত্রেতাযুগ; তৃতীয় দ্বাপর যুগ; চতুর্থ কলিযুগ। তাহারা বলেন, এই চারিযুগ। পালাক্রমে আসে এবং চিরকাল আসিতে থাকিবে। বর্তমান যুগ কলিযুগ। ইহা শেষ হইলে পুনরায় সত্যযুগ আরম্ভ হইবে, সুতরাং তাহাদের মতে ভগৎ চিরস্থায়ী, ইহার আদিও নাই অন্তও নাই। অবশ্য কতিপয় ব্রাহ্মণ আবার দৃঢ়তার সঙ্গেই বলিয়া থাকেন যে, এই পৃথিবী একদিন ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে এবং শেষ বিচারের দিন আসিবে। বলা হয়, সত্যযুগ ১৭,২৮,০০০ বৎসর স্থায়ী হইয়াছিল। এই সময় ধর্ম ও সত্যের প্রাধান্য ছিল এবং মানুষ একলক্ষ বৎসর জীবিত থাকিত। | ত্রেতাযুগ ছিল ১২,৯৬,০০০ বৎসর ব্যাপী। সৃষ্টির = লােক এই যুগে ঈশ্বরাদেশ পালন করিয়া চলিত এবং মানুষের পরমায়ু ছিল ১০ হাজার বৎসর। দ্বাপর যুগের মেয়াদ ছিল ৮,৬৪,০০০ বৎসর। এই সময় মানবজাতির অর্ধাংশ ছিল দুরাচার এবং মানুষ মাত্র ১ হাজার বৎসর জীবিত থাকিত।