একুশের পথ ধরেই আমরা লাভ করেছি। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, লাল-সবুজের পতাকা। আর আত্মপরিচয়ের অধিকার। বাঙালির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি তথা যা কিছু মহান, সবকিছুতেই একুশের ছায়াপাত । বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত রূপ নেয়। তাই একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীক। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধ করে। স্বাধীনতালাভ ছিল আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশে ফিরে আসা স্বাধীনতা অর্জনের বড় দিক। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। একাত্তরের স্বাধীনতা বাঙালিকে রাষ্ট্র দিয়েছে, আন্তর্জাতিক পরিচিতি দিয়েছে । মুক্তিযুদ্ধের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযােদ্ধাদের ত্যাগ অপরিমেয় । তাদের ঋণ কোনােদিন পরিশােধ হবে না। মুক্তিযুদ্ধে সেদিন দেশের বাইরের যারা আমাদের সাহায্য-সহযােগিতা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন তাদের কথা যদি আমরা ভুলে যাই | তা হবে ক্ষমাহীন অকৃতজ্ঞতা। ভারতের জনগণ ও সরকারের সাহায্য ছিল প্রত্যক্ষ । একাত্তর আমাদের গর্বের, গৌরবের, আনন্দের। কারণ স্বাধীনতার চেয়ে বড় কিছু আর কী হতে পারে।